এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১১ জুন : বেশ কয়েক বছর আগে শ্বশুরবাড়িতে কিছু টাকা ধার দিয়েছিলেন স্বামী । শুক্রবার এনিয়ে দাদার সঙ্গে স্বামীর একপ্রস্থ অশান্তি হয় । ফোনে কথা কাটাকাটির মাঝে বধুর স্বামী তাঁর দাদাকে কিছু কটু কথা বলে ফেলে । আর তা সহ্য করতে পারেনি বধু । অভিমানে নিয়ে ফেলেন চরম সিদ্ধান্ত । শিশু সন্তানকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে ওই ঘরেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হলেন ওই গৃহবধু । মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার বড়বেলুন গ্রামে । শুক্রবার রাতে ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে বধুর মৃতদেহ উদ্ধার করে আনে ভাতার থানার পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে,মৃতার নাম শিউলি মাঝি (২৪) । শনিবার মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয় ।
জানা গেছে,মঙ্গলকোট থানার গিধগ্রামে বাপের বাড়ি শিউলি মাঝির । বছর ৫-৬ আগে ভাতার থানার বড়বেলুন গ্রামের তামাল তলা পাড় এলাকার বাসিন্দা কিশোর মাঝির সঙ্গে তাঁর দেখাশোনা করে বিয়ে হয় । তাঁদের ৪ বছরের একটি সন্তান রয়েছে । কিশোর মাঝি একটি ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে কাজ করেন । গ্রামেই অফিস ।
কিশোর মাঝির বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধ বিধবা মা ও এক ভাই । ভাই বিবাহিত । একই বাডিতে তাঁরা পৃথক সংসারে থাকেন ।
মৃতার মাসতুতো ভাই সুমিত মাঝি বলেন, ‘বছর চারেক আগে শ্বশুরবাড়িতে ৮০ হাজার টাকা ধার দিয়েছিলেন জামাইবাবু কিশোর মাঝি । মাঝে মধ্যেই তিনি টাকা ফেরতের জন্য তাগাদা করতেন । শুক্রবার শ্বশুরবাড়িতে টাকা ফেরত চাওয়ার জন্য ফোন করেছিলেন জামাইবাবু । এনিয়ে শিউলির দাদা তমালের সঙ্গে বচসাও হয় তাঁর । আর তারপরেই ঘটে যায় মর্মান্তিক এই ঘটনা ।’
স্থানীয় ও পরিবার সুত্রে জানা গেছে,বড়বেলুন গ্রামের অন্য এক গৃহবধুর রোগে মৃত্যু হয় শুক্রবার । গ্রামের শ্মশানে তাঁর দাহ করা হয় । শ্মশানযাত্রীদের দলে ছিলেন শিউলিদেবীর স্বামী কিশোরবাবু । এদিকে ওইদিন সন্ধ্যা নাগাদ কালবৈশাখীর ঝড়বৃষ্টি শুরু হলে শিশুসন্তানকে নিয়ে নিজের ঘরে চলে যান শিউলিদেবী । তারপর রাত্রি প্রায় সাড়ে ন’টা নাগাদ বাড়ি ফেরেন কিশোর । ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ থাকায় তিনি স্ত্রী ও ছেলেকে ডাকাডাকি ও দরজায় ঘা দিয়ে শব্দ করেন । কিছুক্ষণ পর কিশোরবাবুর ছেলে দরজা খুলে দেয় । তখন তিনি ঘরে ঢুকে সিলিং ফ্যান থেকে স্ত্রীকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান ।
জানা গেছে,বধুর স্বামীর চিৎকারে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা । তড়িঘড়ি বধুকে উদ্ধার করে আনা হয় ভাতার হাসপাতালে । কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে । পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে খবর পেয়ে বধুর মৃতদেহ উদ্ধার করে আনে ভাতার থানার পুলিশ । মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকের ছায়া এলাকায় ।।