প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৭ এপ্রিল : ভোটের অঙ্ক কষে রাম নবমীতে হিন্দুত্বে শান দিল বিজেপি।একই অঙ্কে ফুল মার্কস পাওয়ার লক্ষে তৃণমূলও এদিন মাতোয়ারা হল রামনামে।২৬শের ভোট অঙ্কের পরীক্ষায় পাশ করার আশীর্বাদ পেতে পূর্ব বর্ধমান জেলার অনেক ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা রবিবার প্রভু রামচন্দ্রের আরাধনায় মাতেন ।একই পথে হেঁটে এদিন মর্যাদা পুরুষোত্তম প্রভু রামচন্দ্রের শ্মরণাপন্ন হন জামালপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মেহেমুদ খাঁন।তাঁর পুজো গ্রহন করে কপালে গেরুয়া তিলক পরিয়ে দেন পুজারী।এনিয়ে কটাক্ষ করে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন,’এদিন ভাই মেহেমুদ রাম নাম করলো। এরপর দিদি মমতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয় শ্রীরাম বলবেন।’
রাম নবমী তিথিতে প্রভু রামচন্দ্রের পুজো পাঠের আয়োজন করা হয় জামালপুরের পাড়াতল ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত হিরন্যগ্রামে।পুজোর ডালি হাতে নিয়ে জামালপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মেহেমুদ খাঁন এদিন বেলায় পৌছে যান হিরন্যগ্রামে । তাঁর সঙ্গে থাকেন পাড়াতল-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান উত্তম হাজারি। প্রভু রামচন্দ্রের কাছে পুজো নিবেদনের জন্য মেহেমুদ খাঁন তাঁর পুজোর ডালি ও প্রণামী তুলে দেন পুজারি ব্রাহ্মণের হাতে। তার পর তিনি মনস্কামনা পূরণের জন্য হাত জোড় করে প্রভু রামচন্দ্রের কাছে প্রণাম নিবেদন করেন ।পুজো শেষে পুজারি মেহেমুদ খাঁনের কপালে গেরুয়া তিলক পরিয়ে দেন। পুজো দেওয়া শেষে প্রসাদ নিয়ে মেহেমুদ খাঁন ব্লক তৃণমূল কার্যালয়ে ফিরে আসেন । খাঁন সাহেবের কপালে গেরুয়া তিলক দেখে তাঁর দলের এমনকি বিজেপির কেউ কেউ একটু মুচকি হাসি হাসেন বটে । তবে খাঁন সাহেব সেসব কে পাত্তা দেন নি।
পুজো দেওয়া শেষে মন্দির চত্ত্বরে দাঁড়িয়ে মেহেমুদ খাঁন তাঁর প্রভু রামচন্দ্রের শ্মরণাপন্ন হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন । তিনি বলেন,আমাদের সবকিছু চাওয়া পাওয়া ভগবান ও আল্লাহর উপরেই নির্ভরশীল। ভগবান ও আল্লাহ যাতে আমাদের মনবাসনা পূর্ণ করেন,এটাই আমার এদিনের আরাধন। একই সঙ্গে তিনি বাংলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বজায় রাখার আহ্বানও জানান।তবে কি মনস্কামনা পূরণের জন্য এদিন প্রভু রামচন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ,তা অবশ্য মেহেমূদ খাঁন খোলশা করেননি।
এদিকে মেহেমুদ খাঁন যখন হিরণ্যগ্রামের মন্দিরে প্রভু রাম চন্দ্রের পুজো দিচ্ছেন তখন রাম নবমী পালনের জন্য কাছেপিঠের জৌগ্রামে পৌছে যান কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা।তৃণমূল নেতা মেহেমুদ খাঁনের প্রভু রাম চন্দ্রের শরণাপন্ন হওয়ার কথা রাহুল সিনহা কানে পৌছে যায়। তা নিয়ে কটাক্ষ করে রাহুল সিনহা বলেন,’মমতা বন্দ্যোপাধায় জয় শ্রীরাম বলবে এই ভবিষ্যৎ বাণী আমি দু’বছর আগেই করে দিয়েছিলাম । আজ ভাই মেহেমুদ রাম নাম করলো।আর জয় শ্রীরাম শুনলেই যিনি পালিয়ে যেতেন সেই দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এবার জয় শ্রীরাম বলবেন।উনার মুখ দিয়েও আমরা জয় শ্রীরাম বালিয়ে ছাড়ছি। এটাই বিজেপির বড় মাহাত্ম্য বলে রাহুল সিনসা দাবি করেন ।’
শুধু জামালপুর নয় ,জেলার খণ্ডঘোষের তৃণমূল নেতা কর্মীরাও এদিন রাম নবমীর আনন্দযজ্ঞে শামিল হন।তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের জেলা নেতা রাজেশ সাহানার নেতৃত্বে এদিন সাড়ম্বরে রামনবমী পালিত হয় খণ্ডঘোষের কেন্দুর গ্রামে । সেখানে সকাল থেকে হয় রামচন্দ্রের পুজো পাঠ ও হোমযজ্ঞ ।রামচন্দ্রের পুজো উপলক্ষে থাকে অন্নভোগের ব্যবস্থা।রাজেশ সাহানা এদিন প্রভু রামচন্দ্রের পুজো পাঠের যে আয়োজন করেন তাকে পূর্ণ সমর্থন জানান খণ্ডঘোষ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ অপার্থিব ইসলাম ।এ নিয়ে তিনি বলেন, রামচন্দ্র বিজেপির পৈত্রিক সম্পত্তি নয়।ভগবান রাম সবার । তিনি আমাদেরও রাম।তাই আমাদের দলের লোকজনও রামচন্দ্রের পুজো পাঠের আয়োজন করেছেন। সেই পুজোকে আমরা শ্রদ্ধা জানিয়েছি, সমর্থনও জানিয়েছি।।
ছবি : জামালপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মেহেমুদ খাঁনের শ্রীরামের আরাধনা ।