এইদিন ওয়েবডেস্ক,লন্ডন,২৩ সেপ্টেম্বর : প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় এক কোটি মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় । এখনো পর্যন্ত এই দুরারোগ্য রোগের ওষুধ আবিষ্কার হয়নি । তবে এবার ক্যান্সারের নতুন একটি ওষুধ আবিষ্কারের দাবি করল ব্রিটেন । এই নতুন ওষুধটি ক্যান্সার আক্রান্তদের জন্য অত্যন্ত কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে বলে দাবি করেছেন ব্রিটেনের এনএইচএস ফাউন্ডেশনের ইনস্টিটিউট অফ ক্যান্সার রিসার্চের গবেষক অধ্যাপক কেভিন হ্যারিংটন । তিনি বলেন,’ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রাথমিক পর্যায়ে উৎসাহব্যঞ্জক সাড়া পাওয়া গেছে।’
তিনি জানিয়েছেন, ক্যান্সার আক্রান্ত কোষগুলিকে সংক্রামিত এবং নির্মূল করতে একটি সাধারণ ভাইরাস ব্যবহার করা হচ্ছে। এই মুহূর্তে এই পরীক্ষা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে ।
গবেষকরা জানিয়েছেন,ট্রায়ালে যে ওষুধটি ব্যবহার করা হচ্ছে তা হল কোল্ড সোর ভাইরাস হারপেক্স সিমপ্লেক্সের একটি হালকা সংস্করণ । যা টিউমার দূর করার জন্য ব্যবহৃত হয় । এর ফলে একজন রোগীর ক্যান্সার নিরাময় হয়েছে । কিছু রোগীর ক্ষেত্রে টিউমার কমে গেছে । তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন যে ওষুধের সাফল্যের জন্য দীর্ঘ এবং আরও বিশদ অধ্যয়নের প্রয়োজন ।
ট্রায়ালে অংশ নেওয়া ৩৯ বছর বয়সী ক্রজিসটফ ওজকোভস্কি জানান,তিনি ক্যান্সার থেকে পুরোপুরি সেরে উঠেছেন । পশ্চিম লন্ডনের বাসিন্দা বডি বিল্ডার রয়্যাল মার্সডেনও এনএইচএস ফাউন্ডেশনের ইনস্টিটিউট অফ ক্যান্সার রিসার্চ দ্বারা পরিচালিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন । তিনি জানান,তাঁর মুখের কাছে ক্যান্সার ধরা পড়েছিল । চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচারের পরও তিনি স্বস্তি পাননি । এরপর তিনি ট্রায়ালে অংশ নেন এবং এর সুফল পেয়েছেন । গবেষক ওজকোভস্কি বলেছেন,পাঁচ সপ্তাহের জন্য হার্পিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসের একটি হালকা সংস্করণের সাপ্তাহিক ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল তাঁকে । বর্তমানে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ ।
জানা গেছে,এই ওষুধের ইনজেকশন টিউমারের উপর সরাসরি প্রয়োগ করা হয় । ওষুধটি প্রথমে ক্যান্সার আক্রান্ত কোষকে আক্রমণ করে এবং ধ্বংস করে । পাশাপাশি ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় করে ।এনএইচএস ফাউন্ডেশনের ইনস্টিটিউট অফ ক্যান্সার রিসার্চের ট্রায়ালে ৪০ ক্যান্সার আক্রান্ত মানুষ অংশ নিয়েছিল । তার মধ্যে কিছুকে ভাইরাস ইনজেকশন RP2 দেওয়া হয়েছিল, আবার কাউকে দেওয়া হয়েছিল ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত nivolumab জাতীয় ওষুধ । ট্রায়ালে ৯ জনের মধ্যে যাদের RP2 ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল, তাদের মধ্যে তিনজনের টিউমার কমে গিয়েছিল । বাকিদের মধ্যে ৩০ জন রোগীকে ইনজেকশন ও অন্যান্য ওষুধ দেওয়ায় তাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছে। কিছু রোগীদের ক্ষেত্রে ক্লান্তির মতো সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে বলে জানা গেছে ।।