এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,১০ এপ্রিল : বাংলাদেশের মানিকগঞ্জের হিন্দু তরুণী বৃষ্টি সরকার(২০) এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রেন্ড করছে । ওই তরুনী নিজ ধর্ম ত্যাগ করে প্রেমিক জিসানুর রহমান সিজানকে (২৩) নিকাহ করেছেন । ধর্মান্তরিত হয়ে ওই তরুনীর নতুন নাম রাখা হয়েছে বৃষ্টি রহমান । পুজোতে ভক্তিগীতি গাওয়া ওই তরুনীর এহেন সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে এখন তোলপাড় চলছে । বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এনিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া জানানো হচ্ছে । তরুনীর ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম প্রেমিককে নিকাহ করার ঘটনার খবর প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের সংবাদপত্রে ।
তার মধ্যে একটি সংবাদপত্রে লেখা হয়েছে,মানিকগঞ্জে হিন্দু তরুণী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে বিবাহ । ভালোবাসা যে কোনো ধর্ম, জাতপাত বা প্রথার উর্ধ্বে এ কথারই প্রমাণ দিলেন মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের বাদল কুমার সরকারের মেয়ে বৃষ্টি সরকার। সম্প্রতি তিনি স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নাম পরিবর্তন করে হয়েছেন বৃষ্টি রহমান (২০)। এরপর মুসলিম তরুণ জিসানুর রহমান সিজান ২৩) সঙ্গে ইসলামি রীতি অনুযায়ী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। জানা গেছে, বৃষ্টি ও সিজানের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সময়ের সাথে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে গভীর সম্পর্ক ।’
তবে ওই তরুনীর নিকাহকে মুসলিমরা স্বাগত জানালেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন বাংলাদেশের হিন্দুরা । তারই জবাব দিতে বুধবার বৃষ্টি রহমান তার ফেসবুক অ্যকাউন্টে লিখেছেন, ‘আসসালামু আলাইকুম! আমি বৃষ্টি সরকার নিজ ইচ্ছায় নিজ জ্ঞানে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি। কেউ আমাকে জোর পূর্বক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করায় নাই আর ভালোবাসার টানে বা প্রেমের টানে ইসলামধর্ম গ্রহণ করি নাই, ইসলাম ধর্ম সত্য ও শান্তির ধর্ম আমি এই ধর্মের উপর পরিচর্চা করে জেনেছি এতদিন আমি ভুল পথে ছিলাম এখন সঠিক পথ খুঁজে পেয়েছি সঠিক পথ খুঁজে পাওয়ার পরও যদি আমি ভুল পথে যাই তাহলে এটা আমার ব্যর্থতা বলে আমি মনে করি আর আমি যে সিদ্ধান্তটা নিয়েছি এটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত আর বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমি আমার নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা পেয়েছি কিছু কিছু সামাজিক মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে আমার ব্যক্তিগত জীবনে খুবই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে, যেখানে আমার অনুমতি ছাড়াই আমার ছবি এবং আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বলা হচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য করে বলছি আপনারা আমার সিদ্ধান্তকে যথার্থ মূল্যায়ন সম্মানের সাথে দেখবেন এ বিষয়ে কোন কথা বলবেন না এটা আমার একান্তই ব্যক্তিগত বিষয় যদি আপনার আমার সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাতে না পারেন বা মেনে নিতে না পারেন তাহলে আপনারা এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বাজে কোন মন্তব্য করবেন না আর কিছু কিছু অসাধু লোকজন যেএই বিষয়টাকে কেন্দ্র করে হিন্দু মুসলিমদের মধ্যে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছেন তাদেরকে সতর্কবার্তা ।’
যদিও ইসলামের ‘শান্তির আদর্শে’ অনুপ্রাণিত হওয়ার দাবিকে মিথ্যা বলে অবিহিত করছেন মুসলিমদের একাংশ । আবদুল্লা আল মামুন (Abdullah Al Mamun) নামে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী তরুনীর ধর্মান্তরিত ও নিকাহকে ‘দৈহিক সুখের জন্য সাময়িক উত্তেজনা’ বলে অবিহিত করেছেন । তিনি লিখেছেন, ‘এই মেয়েটি মিথ্যা বলছে। সে তার পুরোনো সকল পোস্ট হাইড করেছে। সে কোনো ইসলামের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তার ধর্মত্যাগ করেনি। সে মুসলমান একটা ছেলের ট্র্যাপে পড়েছে। ছেলেটা আমার পরিচিত। শুধুমাত্র দৈহিক সুখ লাভের সাময়িক উত্তেজনার জন্য তার জন্মদাতা আব্বা আম্মার পেটে লাথি দিয়ে পরপুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে। সেই বুদ্ধি দিয়েছে এভাবে পোস্ট করার জন্য। কিছুদিন পর ছেলেটার সাথে তাকে সবাই দেখবেন। সনাতনী ভাই-বোনদের কষ্টটা আমি বুঝতে পারছি। কিন্তু এই মহিলা তার আম্মা আব্বার সাথে যে বেইমানিটা করেছে এটা মেনে নেওয়ার মতো নয়। সে ইসলামের সৌন্দর্য কি কি দেখেছে, তারে সামনে বসিয়ে জিজ্ঞেস করলে দেখবেন সে উত্তর দিতে পারছে না। আমি মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও এটা বলার কারণ হচ্ছে এরকম মহিলা দিয়ে আমাদের ধর্মের কোনো লাভ নাই। এটা মূলত সে*% রিলেটেড রিজনে ধর্মত্যাগ করে। একটা পরিবার শেষ হয়ে যায়। ধর্মান্তর মারাত্মক ব্যাধি। কোনোভাবে কাম্য নয়।’।
