এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),০৫ মে : স্বামী ও এক সন্তানকে নিয়ে সংসার করার সময়েই এক যুবকের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বধূর । তারপর স্বামী ও সন্তানকে ফেলে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে আসেন তিনি । প্রেমিককে বিয়েও করেন । কিন্তু বিয়ের ঠিক এক বছরের মাথায় দ্বিতীয় পক্ষের স্বামীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হল বধূর দেহ । আজ সোমবার পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার পালাড় গ্রামের দাসপাড়ায় শ্বশুরবাড়ি থেকে ক্ষ্যান্ত মাজি (দাস) ওরফে পূজা (৩২) নামে ওই বধূর নিথর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ । এদিকে পুলিশ আসার আগেই স্বামী বিজয় দাস পালানোর চেষ্টা করে ৷ কিন্তু পুলিশ তাকে ধরে ফেলে ।প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান বধূকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে । যদিও অভিযুক্তের দাবি তার স্ত্রী আত্মঘাতী হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে এবং রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মৃত্যুর প্রকৃত কারন জানা যাবে । পুলিশ মৃত বধূর বাপেরবাড়িতে খবর দিয়েছে ।
জানা গেছে,পূর্বস্থলী থানার শুনুরিয়া গ্রামে বাপেরবাড়ি মৃতা বধূ ক্ষ্যান্ত মাজির (দাস) । অন্যদিকে পালাড় গ্রামের দাসপাড়া ঢোকার মুখেই ভাতার-কামারপাড়া সড়কপথের পাশে বিজয়দের বাড়ি। দরজা জানালায় কাঁচ লাগানোর কাজ করে বিজয় । তারা দুই বোন ও এক ভাই । সে ছোট । দিদিদের বিয়ে হয়ে গেছে । বাড়িতে রয়েছেন বিধবা মা,দাদু ও দিদিমা।
জানা গেছে,বিজয়ের সঙ্গে পরিচয়ের আগে ক্ষ্যান্ত মাজির বিয়ে হয়ে যায় । প্রথমপক্ষের একটি সন্তানও রয়েছে তার । বিজয়ের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার পরিচয় হয় । ক্রমে দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে । এরপর বছর খানেক আগে স্বামী ও সন্তানকে ফেলে পালাড় গ্রামের দাসপাড়ায় প্রেমিকের কাছে পালিয়ে আসেন ক্ষ্যান্ত ।
বিজয়ের মা মঞ্জু দাস জানান,ছেলের সাথে ক্ষ্যান্তর বিয়ে হয় । কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই দুজনের মধ্যে অশান্তি শুরু হয় । অশান্তির জেরে মাস পাঁচেক আগে ছেলের বিরুদ্ধে ভাতার থানায় একটা অভিযোগ দায়ের করে তার বউমা । যদিও পরে মামলা প্রত্যাহার করে এবং ফের ঠিকঠাক সংসার করছিল । কিন্তু আজ দুপুরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ফের ঝগড়া হয় । আমি তখন বাড়ির কাজকর্ম করছিলাম । কিছু পরে বউমার আর গলা শুনতে পাইনি এবং ছেলেকে বেরিয়ে যেতে দেখি।’
জানা গেছে,স্ত্রীকে খুন করে দরজার কাঁচ ঘুঁসি মেরে ভেঙে ফেলে বিজয়। তার ফলে বিজয়ের হাত ক্ষতবিক্ষত হয় । এরপর সে রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ি থেকে পালানোর চেষ্টা করে । যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে ধরে ফেলে ৷ বর্তমানে বর্ধমান হাসপাতালে পুলিশের নজরদারিতে চিকিৎসা চলছে ঘাতক স্বামীর ।।