এইদিন ওয়েবডেস্ক,উত্তর ২৪ পরগনা,০৫ ফেব্রুয়ারী : বিয়ের পর অতিরিক্ত বরপন বাবদ ৩ লক্ষ টাকা ও বুলেট মোটরসাইকেল না দেওয়ায় এক বধূকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল । ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার মাটিয়া থানার অন্তর্গত সরুপনগর গ্রামে । মঙ্গলবার দুপুরে খবর পেয়ে ধান্যকুড়িয়া হাসপাতালে গেলে তুহিনা পারভীন(২৪) নামে ওই বধূর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে বাপের বাড়ির লোকজন । পরে মৃতার স্বামী সাব্বির আহমেদ মন্ডল(২৭), শ্বশুর শাহাবুদ্দিন মন্ডল,শাশুড়ি মিশরা বিবি এবং দুই ননদ মাসুমা বিবি ও ডলি বিবি ছাড়াও ডলির স্বামী সাইফুল মন্ডলের বিরুদ্ধে খুন ও বধূ নির্যাতনের অভিযোগে মামলা রজু করেছেন মৃতার বাবা খলিলুর রহমান গাজী । তবে অভিযুক্ত ৬ জনই পলাতক । পুলিশ তাদের খুঁজছে ।
জানা গেছে,মাস আটেক আগে (০৯/০৬/২০২৪) হাসনাবাদ থানার বরুনহাটে রামেশ্বরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কালুতলা গ্রামের মেয়ে তুহিনা পারভীনের সঙ্গে সরুপনগরের বাসিন্দা সাব্বির আহমেদ মন্ডলের ইসলামি শরিয়া মেনে নিকাহ ও রেজিস্ট্রি হয় । খলিলুর রহমান গাজীর অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই অতিরিক্ত বরপন বাবদ ৩ লক্ষ টাকা ও একটা বুলেট মোটরসাইকেল দাবি করে তার মেয়ের উপর অত্যাচার চালাতে শুরু করে জামাই সাব্বির আহমেদ মন্ডল ও তার পরিবারের লোকজন । গত ২রা ফেব্রুয়ারী রবিবার দুপুরে ১২ টা নাগাদ তার মেয়ে ফোন করে জানায় যে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার উপর চরম নির্যাতন চালাচ্ছে । তিনি মেয়েকে সহ্য করে নেওয়ার পরামর্শ দেন । কিন্তু মঙ্গলবার(৪ ফেব্রুয়ারী) সকাল ১১:৩০ নাগাদ মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে জানানো হয় যে তুহিনা পারভীন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে এবং ধান্যকুড়িয়া গ্রামীন হাসপাতালে মৃতদেহ রয়েছে।
জানা গেছে,এই খবর পেয়ে মৃতার বাবা খলিলুর রহমান গাজী, মা জাহানারা বিবি পরিবারে অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে ধান্যকুড়িয়া হাসপাতালে ছুটে আসেন । তারা দেখেন যে হাসপাতালে তাদের মেয়ের নিথর দেহ শোয়ানো রয়েছে । খলিলুর রহমান জানান, তার মেয়ের গলায় কালো দাগ এবং শরীরে একাধিক জায়গায় আঘাতিক চিহ্ন দেখতে পান । একারণে তার সন্দেহ যে মেয়েকে শ্বাস রোধ করে মেরে ফেলে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে ।
মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বধূর দেহটি বসিরহাট পুলিশ মর্গে পাঠানো হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মৃত্যুর প্রকৃত কারন জানা যাবে । জানা গেছে, মৃতার বাপের বাড়ি হতদরিদ্র পরিবার৷ বাবা খলিলুর রহমান গাজী গৃহ শিক্ষকতার পাশাপাশি অল্পবিস্তর চাষবাস করে কোনো রকমে সংসার চালান । জাহানারা বিবির কথায়, গত ২ ফেব্রুয়ারী আমার মেয়ে বারবার ফোন করে বলে একটি বুলেট গাড়ির কথা এবং সঙ্গে ৩ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা বলছিল । কিন্তু আমরা হতদরিদ্র পরিবার কোন রকম ভাবে সংসার চলে,তাই দিতে পারিনি । আর এই অপরাধে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজন পরিকল্পনা করে মেয়েকে মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে। আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি ৷’।