এইদিন আন্তর্জাতিক ডেস্ক,২৫ ডিসেম্বর : পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বর্নো প্রদেশের জনবহুল এলাকা মাইদুগুরির গাম্বোরু মার্কেটের একটি মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে । আহত হয়েছে আরও অন্তত ৩৫ জন । বুধবার সন্ধ্যায় নামাজের সময় এই হামলা হয়। পুলিশের মুখপাত্র নাহুম দাসো জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে আইইডি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বলে মহচ্ছে । ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে এখনও কেউ হামলার দায় স্বীকার করেনি।
মাইদুগুরি দীর্ঘদিন ধরেই ইসলামি সন্ত্রাসী সংগঠন বোকো হারাম ও তাদের সহযোগী ইসলামি স্টেট পশ্চিম আফ্রিকা প্রদেশের তৎপরতার কেন্দ্রে রয়েছে। বর্নোতে ইসলামি খিলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে বোকো হারামের নাশকতা শুরু হয় ২০০৯ সালে। বছরের পর বছর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হলেও উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়ায় এখনও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে সহিংস হামলা ঘটে। পুলিশ মুখপাত্র নাহুম দাসো বলেন, মাইদুগুরির গাম্বোরু মার্কেট এলাকার ওই মসজিদে বিস্ফোরণের পরপরই বোমা নিষ্ক্রিয়কারী একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে শুরুতে সরকারিভাবে হতাহতের কোনও সংখ্যা জানানো হয়নি।
মসজিদের ইমাম মাওলানা আবুনা ইউসুফ এএফপিকে জানান, অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে বাবাকুরা কলো নামে এক মিলিশিয়া নেতা বলেন, নিহতের সংখ্যা সাত। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মুসা ইউশাউ জানান, তিনি বহু আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে দেখেছেন।
বিস্ফোরণের কারণ তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে যে শহরে এই হামলার ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি প্রায় দুই দশক ধরে বোকো হারাম ও আইএস –সংশ্লিষ্ট সশস্ত্র ইসলামি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির হিংসার কেন্দ্রে ছিল। জাতিসংঘের হিসেবে, ২০০৯ সাল থেকে চলমান এই সংঘাতে অন্তত ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং প্রায় ২০ লাখ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। হিংসা কমলেও তা ছড়িয়ে পড়েছে পার্শ্ববর্তী নাইজার, চাদ ও ক্যামেরুনেও।
এছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু এলাকায় আবারও হিংসা বাড়ার আভাসে সম্প্রতি উদ্বেগ বাড়ছে। দীর্ঘ সামরিক অভিযানের পরও এসব গোষ্ঠী প্রাণঘাতী হামলা চালানোর সক্ষমতা ধরে রেখেছে।একসময় প্রতিদিন রাতেই যেখানে গোলাগুলি ও বোমা হামলার খবর পাওয়া যেত, সেই মাইদুগুরি শহর গত কয়েক বছরে তুলনামূলক শান্ত ছিল। ২০২১ সালের পর থেকে এটাই সেখানে সবচেয়ে বড় হামলা হিসেবে ধরা হচ্ছে।।

