আমিরুল ইসলাম,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১০ জুলাই : পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার বাণেশ্বরপুর গ্রামে এক গৃহস্থের বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ওই পরিবারেরই এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে,ধৃতের নাম লালচাঁদ মল্লিক(২২) । শুক্রবার ভোর রাতে ঘটনার পর লালচাঁদ ও তাঁর বাবা জামরুল মল্লিককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ । পুলিশ সুত্রে খবর, বাবা-ছেলে প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিল রাতের অন্ধকারে তাঁদের বাড়ি লক্ষ্য করে কেউ বোমা ছুড়ে দিয়ে পালিয়েছে । যদিও পুলিশ তাঁদের এই দাবি মানতে পারেনি । চলে রাতভর জেরা । শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ জেরায় লালচাঁদ স্বীকার করে সেই বোমাটি এনে বাড়িতে মজুত করে রেখেছিল । রাতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয় । শনিবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে তুলে ৭ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানায় ভাতার থানার পুলিশ ।
বাণেশ্বরপুর গ্রামের বাসিন্দা জামরুল মল্লিকরা ছিটেবেড়ার দেওয়াল ও অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া দু’কামরার মাটির বাড়িতে বসবাস করতেন । তাঁর বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী মারজেদা বিবি ও একমাত্র ছেলে লালচাঁদ । জামরুল ও তাঁর ছেলে কেরালায় নির্মান শ্রমিকের কাজ করেন । সপ্তাহ তিনেক আগে তাঁরা বাড়ি ফিরেছিলেন । তারপর শুক্রবার ভোর নাগাদ তাঁদের বাড়িতে ঘটে যায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাটি ।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে খাওয়া দাওয়ার পর একই ঘরে শুয়েছিলেন বাবা-মা ও ছেলে । শুক্রবার ভোর পৌনে তিনটে নাগাদ পাশের ঘরে প্রবল জোরে বিস্ফোরণ ঘটে । নিমেষের মধ্যে গোটা বাড়িটি ধুলিস্যাৎ হয়ে যায় । ধ্বংসস্তুপের মধ্যে ৩ জনে চাপা পড়ে যান । স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে তাঁদের কোনওক্রমে উদ্ধার করে ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায় । যদিও তাঁদের তিনজনের আঘাত গুরুতর ছিল না ।
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে ভাতার থানার পুলিশ । পরে তদন্তে আসে বোম্ব স্কোয়াড । ঘটনার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জামরুল মল্লিক ও তাঁর ছেলে লালচাঁদকে আটক করে থানায় আনে পুলিশ । দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর শেষে শলালচাঁদ স্বীকার করে নেয় সেই বোমাটি এনে ঘরে মজুত করে রেখেছিল । এরপর পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে ।
স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে,অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার জন্যে অনেকদিন আগেই পুলিশের খাতায় নাম ওঠে লালচাঁদের । বেআইনভাবে আগ্নেআস্ত্র রাখার অভিযোগে বছর দেড়েক আগে লালচাঁদকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ । যদি পড়ে সে ছাড়া পেয়ে যায় । এছাড়াও কয়েকবছর আগে ভাতার কলেজে অশান্তির ঘটনাতেও লালচাঁদের নাম জড়ায় । এরপর বাড়িতে বোমা মজুত করে রাখার অভিযোগ উঠল লালচাঁদের বিরুদ্ধে ।
কিন্তু বোমা মজুত করে রাখার উদ্দেশ্য এখনও স্পষ্ট নয় । তবে বৃহস্পতিবার রাতের দিকে পাশের কুলনগর গ্রামের জনা কয়েক যুবকের সঙ্গে লালচাঁদ ও তাঁর বন্ধুদের বচসা হয়েছিল বলে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে বলে জানা গেছে । সেই কারনেই সে বোমাটি মজুত করে রেখেছিল বলে পুলিশের সন্দেহ । পুলিশ জানিয়েছে,বোমাটি কোথা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল ও কি উদ্দেশ্যে বাড়িতে মজুত করে রাখা ছিল তা জানার জন্য ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ।।