প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৬ এপ্রিল : গ্রামীণ এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজের স্বীকৃতিস্বরুপ ফের কেন্দ্রের স্বীকৃতি পাচ্ছে বাংলার পঞ্চায়েত।পরিচ্ছন্নতা ও সবুজায়নের জন্য পূর্ব বর্ধমানের মেমারির বোহার ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এবার কেন্দ্রীয় সরকারের গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে পেতে চলেছে ‘দীনদয়াল উপাধ্যায় পুরস্কার’ । ইতিপূর্বে বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণে রাজ্যের একমাত্র ‘মডেল’ হিসাবেও বিবেচিত হয়েছে এই পঞ্চায়েত । পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা জানিয়েছেন, বোহার ১ পঞ্চায়েত ’ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন’ বিভাগে কেন্দ্রের পুরস্কার পাবে । সেই পুরস্কার নেওয়ার জন্য এই পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান আগামী ১৬ এপ্রিল দিল্লিতে উপস্থিত হবেন । এই খবরে খুশি আপামর বোহারবাসী ।
জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ বাগবুল
ইসলাম জানিয়েছেন,বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণে সফলতার নিরিখে কয়েক বছর আগে বোহার ১ গ্রাম পঞ্চায়েতকে ‘মডেল’ করা হয়। ‘সলিড অ্যান্ড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট’ প্রকল্পে এই পঞ্চায়েত বাড়ি বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহ কাজ করছে। সেই আবর্জনার একটা অংশ থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে কেঁচো সার তৈরি করে তারা বাজারজাত করছে।বাকি অংশ নষ্ট করে ফেলা হচ্ছে অত্যাধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে।এরফলে সুরক্ষিত থাকছে এলাকার পরিবেশ । জেলাপরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ বাগবুল ইসলাম জানান ’সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টে’ বোহার ১ পঞ্চায়েত রাজ্যের মডেল । ভিন জেলা,ভিন রাজ্যের পঞ্চায়েতের আধিকারিক ও।জনপ্রতিনিধিরা এখানে এই প্রকল্প দেখে যান । এমনকি ’সলিড অ্যান্ড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের’ প্রশিক্ষণ নিতে ‘প্রবেশনার’ আইএএস থেকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকেও বোহারে পাঠানো হয় ।
জেলা পরিষদের আইএসজিপি বিভাগের আধিকারিক রফিকুল ইসলামের জানান,বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে পানীয় জলের সঠিক ব্যবহার এবং নোংরা জলকে পুকুরে না ফেলে নর্দমার মাধ্যমে বের করে দেওয়ার কাজটিও ওই পঞ্চায়েত খুব ভালোভাবে রূপায়ণ করেছে। মাস খানেক আগে কেন্দ্রের একটি দল ওই পঞ্চায়েতের ‘সলিড অ্যান্ড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট’ ব্যবস্থা দেখে প্রশংসা করে যায়। বোহার ১ পঞ্চায়েতে ’স্যানিটারি ন্যাপকিনের ’যন্ত্র বসিয়েও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ।
বোহার ১ পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারের
অনেকে জানান,বাড়ি গিয়ে আবর্জনা সংগ্রহের পরিকাঠামো শহরাঞ্চলের সব জায়গায় এখনও সুষ্ঠুভাবে গড়ে ওঠেনি । সেখানে বোহার ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মীরা সাত সকালে বাঁশি বাজিয়ে জৈব ও অজৈব আবর্জনা সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছে। পরে ওঈ আবর্জনা নির্দিষ্ট জায়গা নিয়ে গিয়ে জড়ো করা হচ্ছে। সেখান থেকেই তৈরি হচ্ছে কেঁচো সার তৈরি । সেই সার বিক্রি করে প্রকল্পটি চালানো হচ্ছে। পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান হাসমত মোল্লা বলেন, “ আমাদের পঞ্চায়েত এলাকার ৩১ শোর বেশি বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করা হয়। পঞ্চায়েত এলাকায় প্রতিটি নলকূপের চাতালও বাঁধানো রয়েছে। কেন্দ্রের পুরস্কার আমাদের গ্রাম উন্নয়ন কাজে আরও উৎসাহ যোগাবে ।’।