এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,৩০ ডিসেম্বর : দীর্ঘ রোগভোগের পর অবশেষে আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ৷ খালেদা জিয়ার মৃত্যু খবর নিশ্চিত করেছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডাঃ এজেডএম জাহিদ হোসেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ নভেম্বর থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন খালেদা জিয়া। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার অবস্থা অত্যন্ত জটিল এবং তিনি সংকটময় মুহূর্ত পার করছিলেন বলে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডাঃ এজেডএম জাহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন।
বাংলাদেশের এই নেত্রী ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা চন্দনবাড়ির মেয়ে তৈয়বা মজুমদার আর পিতা ফেনীর ফুলগাজির ইস্কান্দার মজুমদার। দিনাজপুরে সুরেন্দ্রনাথ কলেজে পড়ার সময় তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন তিনি। জিয়াউর রহমান-খালেদা জিয়ার দম্পতির দুই সন্তান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মরহুম আরাফাত রহমান কোকো।
১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যার পর সাধারণ গৃহবধূ খালেদা জিয়া দলীয় নেতাকর্মীদের দাবিতে রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। ১৯৮৪ সালে তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন এবং সামরিক শাসক এরশাদের বিরুদ্ধে সাতদলীয় ঐক্য গড়ে তুলে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নেতৃত্ব দেন। আন্দোলনের কারণে ১৯৮৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বেশ কয়েকবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখনই তিনি পান ‘আপসহীন নেত্রী’ উপাধি।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ও দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি তিনবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে উত্থান ঘটে বিএনপির এই চেয়ারপার্সনের। বেগম খালেদা জিয়া তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে মোট পাঁচবার (১৯৯১, ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি ও জুন, ২০০১ এবং ২০০৮) জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে একাধিক আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং প্রতিবারই সব আসনে জয়লাভ করেন। তিনি কখনো কোনো নির্বাচনী আসনে পরাজিত হননি, যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বিরল দৃষ্টান্ত ।।

