দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২৪ মার্চ : এক প্রৌঢ়ের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করল পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া থানার পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম মিহির পণ্ডিত (৪৫) । তাঁর বাড়ি নলাহাটি গ্রামের পণ্ডিতপাড়ায় । বৃহস্পতিবার ভোরে জগদানন্দপুর গ্রামে একটি চানাচুর কারখানার পিছন থেকে ওই ব্যক্তির মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয় । মৃতের পরিবারের দাবি পুরনো আক্রোশের জেরে নৃসংসভাবে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে মিহিরবাবুকে ।মৃতের প্রতিবেশী টুকি পণ্ডিত নামে এক বিধবা মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ ।
জানা গেছে,মিহির পণ্ডিত বিপত্নীক ছিলেন । তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে । মেয়ে মৌসুমীর বিয়ে হয়ে গেছে । ছেলে তন্ময় পন্ডিত কর্মসুত্রে বাইরে থাকেন । অন্যদিকে মিহির বাবুদের বাড়ির পাশেই বসবাস আটক মহিলা টুকি পণ্ডিতদের । অনেক দিন আগেই তাঁর স্বামী মারা গেছেন । তাঁর তিন ছেলে বাইরে কাজ করে । বাড়িতে একাই থাকেন ওই মহিলা ।
মিহিরবাবুর ছোট ভাই শিবু পণ্ডিত জানিয়েছেন, পার্শ্ববর্তী আখড়া গ্রামের বাসিন্দা প্রশান্ত মহলাদার ও জগদানন্দপুর গ্রামের সোমনাথ মাজি রাতের দিকে প্রায়ই টুকির বাড়িতে আসত । তাদের বাড়ির উঠানের ওপর দিয়ে ওই দু’জন যাতায়াত করত ।। রাতেরবেলায় বাইরের লোকজন বাড়ির ওপর দিয়ে যাতায়াত করায় প্রতিবাদ করতেন তিনি ও তাঁর দাদা মিহিরবাবু । এনিয়ে প্রশান্ত ও সোমনাথের সঙ্গে মাস ছয়েক আগে অশান্তিও হয়েছিল বলে জানিয়েছেন মৃতের ভাই ।
জানা গেছে,নলাহাটির পাশে জগদানন্দপুর গ্রামে রাধাগোবিন্দ জিউয়ের পুজো উপলক্ষে বুধবার রাতে যাত্রানুষ্ঠান ছিল । গ্রামের কয়েকজনের সঙ্গে যাত্রা দেখতে গিয়েছিলেন মিহির পণ্ডিত ও তাঁর ভাই শিবু । সেখানে প্রশান্ত মহলাদার ও সোমনাথ মাজির সঙ্গে দু’ভাইয়ের একপ্রস্থ ঝামেলা হয় । তারপর শিবু এক আত্মীয়ের বাড়ি চলে যান । এদিকে যাত্রা শেষে গ্রামের লোকজনের বাড়ি ফেরার পথে মিহিরবাবু জগদানন্দপুর গ্রামের চানাচুর কারখানার পিছনে আসতেই তাঁর উপর চড়াও হয় প্রশান্ত ও সোমনাথ । তারা দু’জন মিলে মিহিরবাবুকে বাঁশ দিয়ে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে খুন করে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ । মৃতের ভাই এনিয়ে প্রশান্ত মহলাদার ও সোমনাথ মাজির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন । তাঁর অভিযোগ, ওই মহিলার সঙ্গে অবৈধ যৌন সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর কারনেই তাঁর দাদাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে ।
এদিকে পিটিয়ে মারার দৃশ্য ধরা পড়েছে স্থানীয় একটি সিসিটিভি ক্যামেরায় । পুলিশ তার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে তবে এদিন বিকেল পর্যন্ত দুই অভিযুক্তের কোনও সন্ধান করতে পারেনি পুলিশ ।।