এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,৩১ জুলাই : সাম্প্রদায়িক হিংসার বলি মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের হিন্দু পিতাপুত্র চন্দন দাস ও হরগোবিন্দ দাসের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের হয়ে আইনি লড়াই লড়ছে একজন বামপন্থী আইনজীবী ! অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতিকে আড়াল করতে সুপ্রিম কোর্টে কংগ্রেসের আইনজীবীরা সওয়াল করছেন বলে উল্লেখ করে সিপিএম ও কংগ্রেসের হিন্দু কর্মীদের ভেবে দেখার পরামর্শ দিলেন রাজ্য বিজেপির যুবনেতা ও কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তরুনজ্যোতি তিওয়ারি ৷
এক্স-এ একটি পোস্টে তরুনজ্যোতি তিওয়ারি লিখেছেন,’বাম এবং কংগ্রেসের হিন্দু কর্মীরাও ভাবুক। তারা কাদের সমর্থন করে? সব্যসাচী চ্যাটার্জী, যিনি নিজেকে একজন আদর্শবাদী বামপন্থী আইনজীবী বলে পরিচিত করেন, তিনি বর্তমানে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের হিন্দু কর্মী চন্দন দাস ও হরগোবিন্দ দাসের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত দিলদার নাদাব, (Dildar Nadab), আসমাউল নাদাব (Asmaul Nadab) ও এনামুল হক (Enamul Haq)-এর পক্ষে দাঁড়িয়ে রাজস্থানের জয়পুরের অতিরিক্ত জেলা জজ (Additional District Judge, Jangipur) আদালতে মামলা লড়ছেন। শুধু তিনিই নন, বামফ্রন্টের আরও শীর্ষস্থানীয় আইনজীবীরা অতীতে জায়ান্ট সিং- এর মতো তৃণমূল ঘনিষ্ঠ কুখ্যাত অপরাধীদের পক্ষেও আইনি লড়াই করেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, যখন এই সমস্ত আইনজীবীরা নিজেদের শহিদ কর্মীদের খুনিদের পাশে দাঁড়ান, তখন কি সেটাই তাঁদের আদর্শ?’
তিনি আরও লিখেছেন,আরও ভয়ঙ্কর সত্য হচ্ছে, এই বামফ্রন্টের জোটসঙ্গী কংগ্রেস ঠিক একই কাজ করছে দিল্লিতে। সুপ্রিম কোর্টে তৃণমূলের দুর্নীতি ও অপরাধ ঢাকতে কংগ্রেস তাদের সেরা ও সবচেয়ে দামি আইনজীবীদের নিয়োজিত করছে। একদিকে কলকাতা হাইকোর্টে বামফ্রন্টের আইনজীবীরা তৃণমূল নেতাদের বাঁচাতে উঠে পড়ে লাগছেন, অন্যদিকে দিল্লিতে কংগ্রেসপন্থী আইনজীবীরা তৃণমূলের হয়ে সওয়াল করছেন। অথচ এই দুই দলই প্রতিনিয়ত মানুষের সামনে বিজেপি-তৃণমূল ‘সেটিং’র গল্প শোনায়। এটা কি আদর্শের লড়াই, না নিজেদের ।
সব শেষে তিনি লিখেছেন,তাই মানুষের প্রশ্ন হওয়া উচিত—কারা কার সঙ্গে গোপন সেটিং করে চলেছে? যারা নিজেদের কর্মীদের খুনিদের পক্ষ নিয়ে আদালতে দাঁড়াতে দ্বিধা করে না, যারা তৃণমূলের দুষ্কৃতিদের রক্ষা করে আবার সেটিং-এর বুলি আওড়ায়, তাদের মুখে আদর্শ বা নৈতিকতার কথা শুনলে মানুষ আজ প্রতারিত বোধ করে। এই রাজনৈতিক ভণ্ডামি আর সহ্য হবে না। বাংলার মানুষ এখন সব বুঝে গেছে—সেটিং আসলে চলছে বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং তৃণমূলের মধ্যে, আর সেটা শুধুই ভোট নয়, আদালতের মঞ্চেও সমান সক্রিয়।
উল্লেখ্য,চলতি বছরের এপ্রিলে ওয়াকফ সংশোধিত আইনের বিরোধিতার অছিলায় মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জ ও ধুলিয়ানে ব্যাপক দাঙ্গা ছড়িয়েছিল । বেছে বেছে হিন্দুদের ঘরবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয় । সামসেরগঞ্জ ব্লকের প্রতাপগঞ্জ অঞ্চলের হরগোবিন্দ দাস (পিতা) ও চন্দন দাস (পুত্র) কে বাড়ি থেকে টেনে বের করে নৃশংস বর্বরোচিত ভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয় । এই ঘটনায় নাম জড়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের । গ্রেপ্তারও হয় কয়েকজন । সিপিএমের মহম্মদ সেলিম ও মীনাক্ষী মুখার্জিরা জানান যে নিহতরা তাদের দলের কর্মী । তারা নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎও করেছিলেন । কিন্তু পিতাপুত্রকে খুনে অভিযুক্তদের হয়ে সিপিএমেরই এক আইনজীবীর আইনি লড়াই করায় প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে ।।