এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১০ জুন : ২০১৯ সালের লোকসভার থেকে ২০২৪ এর লোকসভায় ৬ টি আসন কম পাওয়া এবং দিলীপ ঘোষ-দেবশ্রী চৌধুরীর মত হেভিওয়েট প্রার্থীরা পরাজিত হওয়ায় রাজ্য বিজেপির নেতৃত্বকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছিল । বিশেষ করে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা আসনের বিজেপির পরাজিত প্রার্থী দিলীপ ঘোষ তার নির্বাচনী কেন্দ্র বদলের জন্য “কাঠি করার” অভিযোগ তুলেছিলেন । এরাজ্যে ৬ আসন হারানো নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন।
দিলীপ ঘোষ কারোর নাম না করলেও তার ইঙ্গিত যে মূলত শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদারের দিকে তা স্পষ্ট । কিন্তু দিলীপ ঘোষের সেই দাবি খারিজ করে দিলেন বিজেপির রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত । রবিবার তিনি টুইট করেছেন,’ভোটের পর বাংলায় বিজেপির জন্য খুব খারাপ ফল হয়েছে । নরেন্দ্র মোদীই রাজ্যে বিজেপির উদ্দীপনা তৈরি করেছিলেন। আর শুভেন্দু-এর অক্লান্ত প্রচেষ্টা যা মানুষকে উজ্জীবিত করেছিল। দুজনেই একে অপরের পরিপূরক না হলে বাংলায় বিজেপির অবস্থা আরও খারাপ হত। অবশ্যই, অন্যান্য ত্রুটি ছিল।’ তবে কি ত্রুটি ছিল তা তিনি স্পষ্ট করেননি । নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত বিজেপির ওই বর্ষীয়ান নেতার এই টুইটের পর রাজ্যে বিজেপির খারাপ ফলাফল নিয়ে দিলীপ ঘোষের প্রকাশ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করা থেকে বিরত করবে বলে মনে করা হচ্ছে । কারন শুভেন্দুর প্রশংসাসূচক তার এই পোস্ট আসলে মোদি-শাহদেরই বার্তা বলে মনে করছেন অভিজ্ঞমহল।
বিজেপি সূত্রে খবর,লোকসভার ভোটের আগে একটা পেশাদার বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে এরাজ্যে সমীক্ষা করানো হয়েছিল । তাতে ধরা পড়েছিল যে মেদিনীপুরে দিলীপকে ফের প্রার্থী হলে তিনি হেরে যেতে পারেন। সেই রিপোর্ট কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যের তিন পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল, মঙ্গল পাণ্ডে ও অমিত মালব্য । তাদের সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই দিলীপ ঘোষ ও দেবশ্রী চৌধুরীর মত নেতাদের আসন অদলবদল করা হয় । এখানে শুভেন্দু অধিকারীর কোনো ভূমিকাই নেই । ফলে দিলীপ ঘোষ যে রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে “কাঠিবাজি”র কথা বলে বেড়াচ্ছেন তা অমূলক ।
তবে লোকসভায় ভরাডুবিতে বিজেপির জেলাস্তরের নেতাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে । পূর্ব বর্ধমান সহ বিভিন্ন জেলার নেতাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশও করতে দেখা যাচ্ছে বিজেপির নেতা কর্মীদের । কেন্দ্রে মন্ত্রীসভা গঠনের পর রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বের ব্যাপক রদবদল হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে । রাজ্য সভাপতি হিসাবে শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ সমীক ভট্টাচার্যের নাম নিয়েও চর্চা চলছে । সব মিলিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে সামনে রেখেই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এরাজ্যের পরবর্তী বিধানসভার ভোট লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে করছেন অভিজ্ঞমহল । কারন শুভেন্দু অধিকারী ছাড়া মমতা ব্যানার্জিকে টক্কর দেওয়ার মত বিজেপির তেমন কোনো যোগ্য মুখও নেই । ফলে রাজ্য বিজেপিতে শুভেন্দুর গুরুত্ব আরও বাড়তে চলেছে,এটা নিশ্চিত ।।