এইদিন ওয়েবডেস্ক,খেজুরী(পূর্ব মেদিনীপুর), ১৪ মার্চ : পূর্ব মেদিনীপুর জেলার খেজুরীর শ্যামপুরে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি শিবপ্রসাদ মাইতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে খবর । এদিকে দলীয় নেতাকে ‘মিথ্যা মামলা’য় ফাঁসানোর অভিযোগ তুলেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । পুলিশ হেফাজতে থাকা ওই বিজেপি নেতার খবর নিতে আজ বৃহস্পতিবার খেজুরী থানায় গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী । থানার দায়িত্বে থাকা জনৈক এক পুলিশ আধিকারিকের আচার-আচরণ নিয়ে তীব্র তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন । পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য ও স্থানীয় এসডিপিও দিবাকর দাসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি । শুভেন্দু অধিকারী হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে তিনি ‘মমতার গুন্ডা পুলিশ’-এর বিরুদ্ধে আদালতে দ্বারস্থ হবেন।
খেজুরী থানায় গিয়ে পুলিশের সাথে কথা বলার পর বাইরে বেড়িয়ে এসে পুলিশের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন শুভেন্দু অধিকারী । তিনি বলেন,’আইও পরিচয় দেওয়া পুলিশ কর্মী আমার সঙ্গে যেভাবে কথা বললেন জুডিশিয়ারি আদালতে এই ধরনের কথা হয়,বিরোধী দলনেতার এভাবে কথা বলা যায় না । দুজন লমেকার বা এমএলএ-এর সঙ্গে যেভাবে কথা বলা বলা বা আচরণ করা উচিত সেটা মমতা পুলিশ করেনি । আগামীকাল জনকা থেকে বিদ্যাপীঠ হাজার হাজার মানুষ হাঁটবে । যত দরজা ভেঙেছে, গ্রেপ্তার হয়েছে তার সব নিয়ে প্রতিবাদ হবে ।’
শিবপ্রসাদ মাইতির গ্রেফতারির বিষয়ে তিনি বলেন,’ঘটনার দিন কারা ছিল না ছিল মোবাইল টাওয়ার খতিয়ে দেখলেই পাওয়া যাবে । সব হচ্ছে এসপির নির্দেশে ৷ গতকাল এসপি দেবাংশু ভট্টাচার্যের সঙ্গে মিটিং করেছে । এই ইএসপি এবং এখানকার যে এসডিপিও এসেছে, দিবাকর দাস, নির্বাচন কমিশন এলে সব অভিযোগ করব, আমি সমস্ত তথ্য জোগাড় করেছি । এই খেজুরি থানায় কয়েকশো মিথ্যা মামলা করেছে । আমাদের সমস্ত নেতাদের ৫৫ থেকে ৭০ দিন করে জেল খাটিয়েছে ।’
প্রসঙ্গত,রবিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ খেজুরির শ্যামপুরে নির্বাচনী প্রচারে যান কাঁথি লোকসভার বিজেপি প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারী । তখন কাঁথির এসডিপিও দিবাকর দাসের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী রুট মার্চের জন্য জনকা-বোগা রাজ্য সড়ক ধরে যাচ্ছিল । সেই সময় পুলিশের গাড়ির উপর লাঠিসোঁটা নিয়ে চড়াও হয়ে ভাঙচুর ও পুলিশ কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে । এসডিপিও-র গাড়ি ছাড়াও আরও দু’টি গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ । খেজুরি থানা-সহ আশপাশের থানার বিশাল পুলিশবাহিনী আনা হয় ঘটনাস্থলে । দু’জন পুলিশকর্মী আহত ও তিনটি গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ পুলিশের৷ বিজেপির পালটা অভিযোগ যে পুলিশের এলোপাতাড়ি লাঠিচার্জে তাদের চার জন কর্মী আহত হয়েছেন ।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’যারা জড়িত ছিলেন না তাদেরও বাড়ির দরজা ভেঙেছে পুলিশ । পুলিশ সিআরপিসি এবং সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন ভেঙেছে । পুলিশের কোন অধিকার নাই এগুলো করার । আগামী সোমবার সেই সমস্ত পরিবার গুলোকে দিয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করব । যত বিজেপি কার্যকর্তার বিরুদ্ধে খেজুরি থানায় মিথ্যা মামলা হয়েছে তার সমস্ত সার্টিফাইয়েড কপি তুলে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হব । সেই সাথে বড় আন্দোলনও চলবে ।’
তিনি বলেন,’খেজুরির মানুষদের একটাই অপরাধ তারা নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আছেন । আমি এইরকম পুলিশের অত্যাচার নন্দীগ্রামে দেখেছিলাম, সন্দেশখালি তো দেখেছি । আমি উচ্চ আদালতের কাছে কৃতজ্ঞ যে আমাকে সন্দেশখালির মা বোনেদের কাছে যেতে সাহায্য করেছে ।’
শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’শিবপ্রসাদ প্রসাদ মাইতি ওইদিন যে ঘটনাস্থলে ছিল তার ভিডিও ফুটেজ দেখাতে পারবেনা পুলিশ । খেজুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, ৭৫ বছরের বয়স্ক কালিপদ বাবুকে পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে গারদের মধ্যে রেখেছে । সেদিন তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না, মঞ্চে ছিলেন । শিবপ্রসাদ ওইদিন ছিলই না, দীপক কাঁথিতে ছিল । আকবর ভাইয়ের বাড়ির দরজা ভেঙেছে । মমতা পুলিশ গুন্ডা পুলিশ এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হবে ।’
পাশাপাশি তিনি এসডিপিওকে উদ্দেশ্য করে বলেন,’দিবাকর দাস আপনাকে বলে গেলাম, আপনি যে কায়দায় এসব করছেন, পুলিশের পোশাক ছেড়ে তৃণমূলের ঝান্ডা ধরুন । কালকে দেখা হবে কুড়ি হাজার লোক জড়ো করব ।’।