এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৮ জানুয়ারী : কলকাতার আরজি করের তরুনী চিকিৎসক ‘অভয়া’র নৃশংস বর্বরোচিত ধর্ষণ-হত্যাকান্ডের ঘটনায় সবচেয়ে বিতর্কিত চরিত্র হলেন তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ । হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে অভয়ার রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধারের পর থেকে সন্দীপকে নিয়ে তোলপাড় চলছে গোটা রাজ্য জুড়ে । শেষ পর্যন্ত চাপে পড়ে তাকে আরজি কর থেকে সরাতে বাধ্য হন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । কিন্তু এমন একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পরেও তাকে ন্যাশানাল মেডিক্যাল কলেজে সমমর্যাদার পদে বসানোয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ভূমিকাকে সন্দেহের চোখে দেখতে শুরু করে সাধারণ মানুষ । যদিও সন্দীপ তার নতুন দায়িত্ব সামলানোর আগেই তাকে ন্যাশানাল মেডিক্যাল কলেজ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয় । সন্দীপের প্রতি মমতা ব্যানার্জির এই প্রকার ‘দুর্বলতা’ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন রকম প্রশ্ন তোলা হচ্ছিল । যাকে খোদ মমতা ব্যানার্জি ‘কুৎসা’ বলে মন্তব্য করেছিলেন । ফের একবার সন্দীপ ঘোষের প্রতি মমতা ব্যানার্জির ‘দুর্বলতা’ নিয়ে প্রশ্ন উঠলো । আর এই প্রশ্ন তুললেন রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার সহ-সভাপতি তথা কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি ।
সোমবার এক্স-এ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার আলিপুর সিবিআই- ২ নম্বর আদালতের সিল দেওয়া একটা নির্দেশনামার একাংশ শেয়ার করে তরুণজ্যোতি লিখেছেন, ‘আমাদের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল পরিচালিত পশ্চিমবঙ্গ সরকার এক্কেবারে কিন্তু দুর্নীতিবিরোধী। ওই ইংরেজিতে বলে না যে “জিরো টলারেন্স ফর করাপশন”। এই ছবিটি আমাদের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নীতির একটা উদাহরণ মাত্র। সন্দীপ ঘোষ সেই ব্যতিক্রমী চরিত্র অর্থাৎ রঞ্জিত ঘোষের কেউ হয় কিনা জানিনা কিন্তু তার ওপর আমাদের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর ভালোবাসা এবং স্নেহ প্রচুর। সিবিআই আরজি করের দুর্নীতি মামলায় সঞ্জীব ঘোষ এর বিরুদ্ধে চার্জশিট ফাইল করেছে অনেক আগেই কিন্তু অদ্ভুতভাবে মুখ্যমন্ত্রী অধীনে থাকা স্বাস্থ্য দপ্তরের মুখ্য সচিব সন্দীপ ঘোষ এবং আশীষ পান্ডের বিরুদ্ধে SANCTION FOR PROSECUTION এখনো পর্যন্ত দেয়নি । এই চোরগুলোকে আড়াল করার চেষ্টা করছে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী। কেন করছে এই প্রশ্নটা এখানে না করে মুখ্যমন্ত্রীকে করুন।’
সিবিআই-এর ২ নম্বর আদালতের সিল দেওয়া নির্দেশে বলা হয়েছে,’কলকাতা আর.জি.কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ ডক্টর সন্দীপ ঘোষ এবং আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের তৎকালীন হাউস স্টাফ ডাঃ আশিস কুমার পান্ডের বিরুদ্ধে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিচারের অনুমতি চেয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং একই অপেক্ষা করা হচ্ছে ।এই দুই অভিযুক্ত সরকারী কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন প্রাপ্তির পরে এই মাননীয় আদালতে পেশ করা হবে। যে নথি এবং সাক্ষীদের তালিকা সংযুক্ত রয়েছে যার উপর প্রসিকিউশন মামলা নির্ভর করে। প্রয়োজনে অতিরিক্ত তালিকা দাখিল করা যেতে পারে। উপরোক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে আরও তদন্তে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের বিষয়ে….।’।