এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৮ ডিসেম্বর : ভারতে ইসলামি হানাদারদের শাসনে বহু মন্দির ধ্বংস করে মন্দির নির্মান করা হয়েছিল । হানাদার বাবরের দ্বারা প্রাচীন রামমন্দির ধ্বংস করে নির্মিত বাবরি মসজিদ আদালতের রায়ে পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে হিন্দুরা । রামলালা মূর্তি সেখানে স্থাপিত হয়েছে । উত্তরপ্রদেশের বেনারসের কাশী বিশ্বনাথ ধামের একাংশ ধ্বংস করে হানাদার ঔরঙ্গজেব যে জ্ঞানভাপি মসজিদ নির্মান করেছিল সেটার পুনরুদ্ধারের মামলা এখন আদালতের বিচারাধীন । মসজিদের স্থানটি পুনরুদ্ধারের বিষয়ে আশাবাদী হিন্দুপক্ষ । এছাড়া সম্বলের শাহী জামা মসজিদটি ষোড়শ শতাব্দীতে প্রাচীন হরি হর মন্দির ধ্বংস করে নির্মিত হয়েছিল বলে দাবি করা হচ্ছে । পুরাণ অনুসারে শ্রীবিষ্ণুর দশম ও শেষ অবতার কল্কি অবতার কলিযুগে অধর্মকে বিনাশ করতে এবং ধর্মের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে এখানেই অবতীর্ণ হবেন বলে বিশ্বাস করা হয় । সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে সমীক্ষক দল ও পুলিশের উপর হামলা চালায় মুসলিমরা । পাশাপাশি মথুরার শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমিসহ বহু মন্দির ইসলামি হানাদাররা ধ্বংস করে মসজিদ নির্মান করেছিল। এমনই একটি মসজিদ হল মালদার গাজোল থানা এলাকার ‘আদিনা মসজিদ’ । এই মসজিদের দেওয়ালে হিন্দু দেবদেবীর বহু প্রাচীন মূর্তি ও চিহ্ন খোদাই করা আছে । দাবি করা হয় যে এটি আদপে ‘আদিনাথ মন্দির’ ছিল । বাংলা সালতানাতের সময় সিকান্দার শাহ কর্তৃক এই মন্দির ধ্বংস করে মসজিদটি নির্মান করা হয়েছিল। এবারে হিন্দুদের ওই প্রাচীন ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তুললেন রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার সহ সভাপতি তরুনজ্যোতি তিওয়ারি । ওই স্থানে হিন্দুদের পূজো করার অনুমতি দেওয়ারও আবেদন জানিয়েছেন তিনি ।
আজ একটা ভিডিও প্রতিবেদনসহ তরুনজ্যোতি তিওয়ারি এক্স-এ লিখেছেন,’আদিনা মসজিদ, ভারতের বৃহত্তম মসজিদগুলির মধ্যে একটি, বাংলা সালতানাতের সুলতান সিকান্দার শাহ ১৩৬৯ খ্রিস্টাব্দে নির্মাণ করেছিলেন। যদিও এর স্থাপত্যের উজ্জ্বলতার জন্য সুপরিচিত, উল্লেখযোগ্য প্রমাণ থেকে জানা যায় যে এটি একটি প্রাচীন হিন্দু মন্দিরের উপর নির্মিত হয়েছিল। বিষ্ণু, সরস্বতী এবং গণেশের মতো হিন্দু মূর্তি, স্বস্তিকা এবং ব্রহ্মা কমলের মতো প্রতীকগুলি এখনও কাঠামোর মধ্যে দৃশ্যমান। যক্ষ ও যক্ষিণী ভাস্কর্য, দ্বারপাল ও অনন্তনাগের খোদাই, এবং ব্রহ্ম-পীঠ ও বিষ্ণু-পীঠের অবশিষ্টাংশ সহ অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলি হিন্দু মন্দির হিসাবে স্থানটির আসল পরিচয়কে দৃঢ়ভাবে নির্দেশ করে। ভিত্তিটির ধূসর পাথর, মন্দিরের স্থাপত্যের আদর্শ, পরবর্তী লাল ইটের পরিবর্তনের সাথে বৈপরীত্য, যা এর রূপান্তরকে আরও নির্দেশ করে ।’
তিনি লিখেছেন,’এই অকাট্য প্রমাণের প্রেক্ষিতে, হিন্দুদের কাছে স্থানটি পুনরুদ্ধার করার এবং আইনি পদ্ধতির মাধ্যমে এর আসল ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারের জন্য ক্রমবর্ধমান চাহিদা রয়েছে। একটি স্বচ্ছ বিচার বিভাগীয় তদন্ত বিতর্কের নিষ্পত্তি এবং ঐতিহাসিক সত্যকে সমুন্নত রাখতে সাহায্য করতে পারে। একটি আইনি লড়াই চালিয়ে হিন্দুরা ওই স্থানের উৎসের সঠিক স্বীকৃতি চাইতে পারে এবং এটি পুনরুদ্ধারের জন্য দাবি করতে পারে। ভারতের যৌথ সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারের প্রতি ন্যায়বিচার এবং সম্মান নিশ্চিত করার জন্য আইনি প্রচেষ্টা অপরিহার্য। অধিকন্তু, হিন্দুদের তাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারের দিকে একটি পদক্ষেপ হিসাবে কাঠামোর ভিতরে পূজা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া উচিত। এই স্থানের উপাসনা করার অনুমতি দেওয়া এর ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে সম্মান করবে এবং সম্প্রদায়কে বন্ধ করার অনুভূতি প্রদান করবে। এই ধরনের পদক্ষেপ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিচয়কে সম্মান করার এবং ঐতিহাসিক অবিচারকে স্বীকার করার জন্য একটি নজির স্থাপন করবে ।’
তরুনজ্যোতি আরও লিখেছেন,’আদিনা মসজিদ, যেখানে স্থাপত্যের সৌধ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে, ভারতের প্রাচীন সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের ধ্বংসেরও প্রতীক। একটি হিন্দু মন্দির থেকে একটি মসজিদে এর রূপান্তর মধ্যযুগীয় ভারতে ইসলামি সম্প্রসারণের সময়কালে সংঘটিত আগ্রাসন এবং ধ্বংসকে প্রতিফলিত করে। মূল মন্দিরের ইচ্ছাকৃতভাবে ধ্বংস করা এবং সাইটে একটি নতুন ধর্মীয় পরিচয় আরোপ করা সেই যুগে হিন্দু ঐতিহ্য এবং উপাসনালয়গুলির পদ্ধতিগতভাবে মুছে ফেলার বিষয়টি তুলে ধরে ।’।