দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),০৫ আগস্ট : গত ২ জুন ওড়িশার বালেশ্বরে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় জখম হওয়ার দুমাস পর মৃত্যু হওয়া পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারের পরিযায়ী শ্রমিকের বাড়িতে এলেন বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া । আজ শনিবার ভাতার থানার ভাটাকুল গ্রামে খোকন শেখের(৩৫) বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে গেলেন সাংসদ । সাংসদ বলেন,’খোকন শেখ আহত হওয়ার পর রেল দফতরের ঘোষণা অনুযায়ী পরিবার দুই লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন । মারা যাওয়ার জন্য মোট ১০ লক্ষ পাওয়ার কথা । আমি বিষয়টি নিয়ে রেল দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি । বাকি ৮ লক্ষ টাকা দ্রুত পেয়ে যাবেন । আমরা এই পরিবারটির পাশে আছি ।’
প্রসঙ্গত,উড়িষ্যার কটক হাসপাতালে দীর্ঘ ২ মাস ধরে চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার ভোরে মৃত্যু হয় খোকন শেখের । কটক থেকে খোকনের মৃতদেহ শনিবার ভোরে গ্রামে নিয়ে এসে কবরস্থ করা হয় । এদিকে হতদরিদ্র পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য হওয়ায় কার্যত পথে বসেছে মৃত যুবকের পরিবার । বাড়িতে রয়েছেন মৃতের স্ত্রী বুল্টি খাতুন, দুই ছেলে শেখ রোহিত ও শেখ আরিফ এবং বুল্টি খাতুনের বৃদ্ধ বাবা-মা । এখন ৫ জনের সংসারের অন্ন সংস্থান কি করে হবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেছেন মৃতের স্ত্রী ।
এদিন দুপুরে ভাটাকুল গ্রামে গিয়ে ওই পরিবারটির পাশে দাঁড়ান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ এসএস আলুওয়ালিয়া । তিনি মৃতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাদের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতির বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নেন । উল্লেখ্য,খোকন শেখ দুর্ঘটনায় জখম হওয়ার পর থেকেই নিয়মিত খোঁজখবর রেখে যাচ্ছিলেন সাংসদ । এনিয়ে কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন মৃতের স্ত্রী বুল্টি খাতুন । তিনি সাংবাদিকদের বলেন,’সাংসদ
সাহেব আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছেন। আমার স্বামীর চিকিৎসাধীন থাকার সময় উনি খুব সাহায্য করেছিলেন । আমার স্বামীর মৃতদেহ আনার জন্য দুটি গাড়ির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন । আমি ওনাকে বলেছি আমার জন্য একটা কাজের ব্যবস্থা করে দিতে ।’
এদিকে খোকন শেখের বাড়িতে সাংসদ আসার সঙ্গে সঙ্গেই প্রচুর লোকজন সেখানে জড়ো হয়েছিল । মৃতের স্ত্রীর চাকরির বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের উদ্যোগী হতে সাংসদ আহ্বান জানান । ভিড়ের মধ্যে উপস্থিত তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে ফুলবাহার শেখ নামে একজন সাংসদের সামনে এগিয়ে আসেন কথা বলার জন্য । বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া তাকে বলেন, করমণ্ডল ট্রেন দুর্ঘটনায় যারা মারা গেছেন তাদের তো রাজ্য সরকার চাকরি দিয়েছে । পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বর ব্লকেরও দুর্ঘটনায় মৃতের পরিবার চাকরি পেয়েছে । এখন মৃত খোকন শেখের স্ত্রী যাতে চাকরি পান সেজন্য তোমরা একটু তদ্বির করো । প্রয়োজন হলে আমি চিঠি লিখে দেবো ।’
পাশাপাশি গ্রামের বেশ কিছু পরিবারের এখনো কেন কাঁচা বাড়ি রয়েছে এনিয়েও প্রশ্ন তোলেন সাংসদ এসএস আলুওয়ালিয়া । এই বিষয়ে ওই তৃণমূল কর্মীর উদ্দেশ্যে সাংসদ বলেন,’তোমাদের গ্রামে আসার পথে দেখলাম অনেক কাঁচা বাড়ি রয়েছে । অনেকেই দেখছি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর পায়নি । ঘর করে দেওয়া তো পঞ্চায়েতের কাজ । তোমরা কাজ করোনি বলেই তো আমি জিতেছি । আমাকে হারাবার জন্য অন্ততঃ কাজ করো ।’
এর উত্তরে ওই তৃণমূল কর্মী পালটা নালিশ করেন, ‘স্যার,কেন্দ্রে আপনাদের সরকারই তো টাকা আটকে রেখেছে । টাকা দিতে বলুন ।’
যদিও তৃণমূল কর্মীর এই ভুল ভাঙিয়ে দিয়ে সাংসদ এস এস আলুওয়ালিয়া বলেন,’কেন্দ্র সরকার আবাস যোজনার টাকা তো আটকায়নি । একশো দিনের প্রকল্পের টাকা অডিটে আটকে আছে ।’।