প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৫ ডিসেম্বর : সুশাসন দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত পঞ্চায়েতের লোকজনকে শায়েস্তা করার নিদান দিলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ।রবিবার বর্ধমানে দলের কর্মীদেরকে তিন বলেন,“পাঁচ বছর লুটেপুটে খাওয়া পঞ্চায়েতের লোকেদের কলার ধরবেন, প্যান্ট খুলে দেবেন। নিম গাছে বা খেজুর গাছে বেঁধে রেখে হিসাব চাইবেন।ওরা এখন পাবলিকের মারের ভয়ে পালাচ্ছে।কিন্তু ওদের কাউকে ছাড়বেন না“।বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের এমন নিদান দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব । তাঁরা দাবি করেছেন, অশান্তি সৃষ্টির জন্য দিলীপ ঘোষ তাঁর দলের কর্মীদের উস্কানি দিচ্ছেন ।
মোদীজির “মন কি বাত ” ও “সুশাসন দিবস ” উপলক্ষে এদিন বর্ধমান উত্তর বিধানসভার হীরাগাছি কুলারী গ্রামে উপস্থিত হন দিলীপ ঘোষ । দলের নেতা কর্মীদের সঙ্গে মোদীজির ’মন কি বাত’ শোনার পর তিনি বক্তব্য রাখা শুরু করেন। নিজের বক্তব্যে দিলীপ ঘোষ বলেন,বাংলায় আমরা সুশাসন চাই, উন্নয়ন চাই।মোদীজি টাকা পাঠাচ্ছে, আর দিদির ভাইয়েরা লুটে করে নিচ্ছে।একশো দিনের কাজের টাকা গরিব মানুষ পায়না। সাড়ে চৌদ্দ লক্ষ জব কার্ড যাঁর নামে আছে সে জানেনা।পার্টি অফিস বা নেতার বাড়িতে ওই কার্ড আছে। জব কার্ডের কাজ সেখানেই হচ্ছে যেখানে পার্টির নেতার অ্যাকাউন্ট নম্বর দেওয়া আছে।নেতাদের অ্যাকাউন্টে টাকাটা চলে যাচ্ছে।আর যাঁর নামে কার্ড সে জানেনা।পশ্চিমবাংলায় ৬২লক্ষ জালি রেশন কার্ডে রেশন আসতো।ওই ৬২ লক্ষ রেশন কার্ড মোদি সরকার বাতিল করেছে।এর জন্যেই দিদিমণি কিছুতেই রেশনের সঙ্গে আধার কার্ড যুক্ত করতে দিতে চাইছিলেন না । মিড ডে মিলের টাকাও খেয়ে নিচ্ছে। অঙ্গনওয়াড়ি তে ৫০ জন ছেলে মেয়ের নাম আছে। কিন্তু ফাস্তবে আছে কুড়িটা ছেলে মেয়ে । বাকি টাকাটা খেয়ে নিচ্ছে।
কিন্ত এখন ওরা জানতে পেরেছে ওদের পাবলিক ঠ্যাঙাবে। তাই পদত্যাগ করে পালাচ্ছে। তবে পালাবার রাস্তা নেই। বাংলার বাইরে গেলে সেখানকার লোকেরা চোর বলে ধরবে। আর এখানে পাবলিক ধরবে। পাবলিকের মার দুনিয়া পার। গ্রামের জলের লাইন দেওয়ার কথা ছিল, দেয়নি। টাকা মেরে দিয়েছে, একশো দিনের কাজের টাকা, রাস্তা তৈরির টাকা, স্কুল বিল্ডিংয়ের টাকা সব ওরায় খেয়েছে।সরকারী আবাস যোজনা নিয়েই চরান্ত অনিয়ম হচ্ছে ।প্রকৃত গরিবদের বঞ্চিত রেখে শাসক দলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা আবাস যোজনার তালিকায় নাম তুলিয়েছেন। তাই ওদের সবার কাছে হিসাব চাইতে হবে বলে দিলীপ ঘোষ কর্মীদের জানিয়ে দেন।পাশাপাশি তিনি এদিন সিপিএমকেও কাঠগড়ায় তোলেন।তিনি বলেন, খুনের রাজনীতির কালচার বাংলায় সিপিএম এনেছে। যার ফলে বাংলায় রক্তারক্তি হচ্ছে। এর প্রায়শ্চিত্ত সিপিএম করুক। বিজেপি খুনের রাজনীতি করেনা, সমর্থনও করেনা বলে । দিলীপ ঘোষ মন্তব্য করেন।
একই সঙ্গে দিলীপ ঘোষ এও দাবি করেন,বিজেপি গোটা ভারতবর্ষে সুশাসন দিয়েছে।বিজেপি উন্নয়নের রাজনীতি করে। দুর্নীতি আর হিংসার বিরুদ্ধে লড়াই করে। এই রাজ্যে আবার পঞ্চায়েত নির্বাচন আসছে। আগের বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে মারপিট করে, পুলিশ দিয়ে, গুন্ডা দিযে নমিনেশন করতে দেওয়া হয়নি। আমাদের নমিনেশন করতে না দিয়ে যাঁরা জিতেছিল তাঁরা পাঁচ বছর লুট করেছে। তাঁরাই এখন পাবলিকের মারের ভয়ে পালাচ্ছে। দলের কর্মীদের দিলীপ ঘোষ বলেন,পঞ্চায়েতে দুর্নীতি করা লোকজনদের কাউকে ছাড়বেন না।ওদের কলার ধরবেন, প্যান্ট খুলে দেবেন। নিম গাছে, খেজুর গাছে বেঁধে দিয়ে হিসাব চাইবেন।কারণ ওরা যে টাকা চুরি করে বাড়ি করেছে, সেটা আপনার টাকা। যে গাড়ি কিনছে, বউয়ের গয়না কিনে দিয়েছে সেটাও আপনার টাকা। এমনকি আপনাদের টাকাতেই ওরা ওদের ছেলেকে বাইরে পড়াচ্ছে। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন আসছে।ওই দুর্নীতিগ্রস্তরা কারোর বাড়িতে গেলে গলায় গামছা দিয়ে ধরবে।সেই দিন আসছে।পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকেই পশ্চিমবাংলায় পরিবর্তনের সূচনা হবে ।।