এইদিন ওয়েবডেস্ক,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান),২৯ মে : পানীয়জল প্রকল্পের হুকিং করা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের এক বিজেপি নেতার । মৃতের নাম মৃত্যন মাজি (৪০)। তার বাড়ি মঙ্গলকোট থানার জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের বাগদিপাড়ায় । তিনি মঙ্গলকোটের মাজিগ্রাম অঞ্চলের ১৩৭ নম্বর বুথের বিজেপির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন । এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেস শাসিত স্থানীয় পঞ্চায়েতের ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায় । দলীয় নেতার এই প্রকার মৃত্যুর জন্য পঞ্চায়েতকে দায়ি করেছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব । পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহটি কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে ।
জানা গেছে,বছর দেড়েক আগে মাজিগ্রাম পঞ্চায়েত জয়কৃষ্ণপুর ও পাশের ইছাপুর গ্রাম মিলে আটটি পানীয় জল প্রকল্পের পাম্প বসানো । তার মধ্যে একটি পাম্প বসানো হয়েছে জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের বাগদিপাড়ায়। সবকটি পাম্পই বেআইনিভাবে হুকিং করে চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ । মঙ্গলকোট বিধানসভার বিজেপির যুবমোর্চার কনভেনর সৌমেন মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ,’সবকটি পাম্পই রাস্তার ধারে অপরিকল্পিতভাবে বসানো হয়েছে । পাম্পগুলির স্থায়ী বিদ্যুৎ সংযোগ নেই,হুকিং করে চলছে । বিদ্যুৎ লাইনের তার ঝুলে থাকে বিপজ্জনকভাবে ৷ পঞ্চায়েতের গাফেলতির কারনেই আমাদের এক দলীয় নেতাকে বেঘোরে প্রাণ হারাতে হল ।’
স্থানীয় সূত্রে খবর,আজ বুধবার সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ওই পাম্পের জলে মুখ ধুতে যান মৃত্যন মাজি । তার পাশেই যে বিদ্যুতের তার ঝুলছে তা তিনি খেয়াল করেননি । এরপর পাম্প চালাতেই তারটি জলের মধ্যে ডুবে যায় । জলের মধ্যে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হতে শুরু করে । আর সেই জলে নামতেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে উলটে পড়েন মৃত্যনবাবু । বেশ কিছুক্ষণ ওইভাবেই পড়ে থাকেন তিনি । কিছু পরে পাড়ার লোকজন জল আনতে গিয়ে তাকে উলটে পড়ে থাকতে দেখে পাম্পের সুইচ অফ করে মৃত্যনবাবুকে সিঙ্গত হাসপাতালে নিয়ে যায় । কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি । গ্রামবাসীরাও মৃত্যন মাজির মৃত্যুর জন্য পঞ্চায়েতের গাফেলতিকেই দায়ি করেছেন । মাজিগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কাজল মণ্ডল হুকিং করে পানীয় জল প্রকল্পের পাম্প চালানোর কথা স্বীকার করলেও তিনি দাবি করেছেন, হুকিং করে পাম্প চালানো হলেও পাম্পে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী তারে কভার দেওয়া আছে। তাই বিপদ ঘটার সম্ভাবনা তেমন নেই ।’ তাহলে কিভাবে ওই ব্যক্তির বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল ? যদিও এর সদুত্তর পঞ্চায়েত প্রধানের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি ।
জানা গেছে,মৃত্যন মাজি জনমজুরির কাজ করতেন । তার বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধা মা সাগরিকাদেবী, স্ত্রী সুভদ্রা এবং দুই নাবালিকা মেয়ে- রাখি ও পূর্ণিমা ।মৃত্যনবাবুর উপার্জনেই মূলত পরিবারের খরচখরচা চলত । আজ তার মৃত্যুর পর গোটা পরিবারটি কার্যত পথে বসে গেছে । পরিবারটিকে সরকারিভাবে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য দাবি তুলেছেন গ্রামবাসীরা ।।