প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৯ এপ্রিল : ভারতের স্বাধীনতার ৭৭ টা বছর অতিক্রান্ত হতে বসেছে।এরই মধ্যে ঘটাকরে ’আজাদী কা অমৃত মহোৎসব’ পালিতও হয়েছে।কিন্তু এত দিনেও হয়নি শুধু দেশের আইন সভায় প্রবেশের জন্যে শিক্ষাগত যোগ্যতার মাপকাঠি নির্ধারণ।তাই আজও সেখানে শিক্ষিতর পাশাপাশি স্বশিক্ষিতদেরও প্রবেশাধিকার অবাধ।তবুূও বর্ধমান পূর্ব লোকসভা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকারকে ’ক্লাস ফোর পাশ’ বলে দাগিয়ে দিয়ে কতই না কটাক্ষ করা চলছে।তবে ফোর পাশ ডিগ্রিধারী অসীম অবশ্য এতে দমে যাননি।বরং তিনি বিপক্ষ তৃণমূল কংগ্রেস দলের ডাক্তার প্রার্থীর সঙ্গে টক্কর অব্যাহত রাখতে ইংরেজিতে নানা কথা বলে তাঁর ফোর পাশলালুপ্রসাদ যাদবের ক্লাস ফোর পাশ পত্নী রাবড়ি দেবীর বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার কথাও তিনি তৃণমূলের নেতাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। বর্ধমান পূর্ব লোকসভা আসনে এবারও ঘাস ফুল ফোটাতে মরিয়া তৃণমূল শিবির।তাই তারা সুনীল মণ্ডলকে এবার আর এই আসনে প্রার্থী না করে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শর্মিলা সরকারকে প্রার্থী করেছে। রাজনীতিতে শর্মিলা একেবারে নতুন মুখ। তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তিও রয়েছে ।তাই তাঁকে দেশের আইনসভায় পাঠাতে তৃণমূলের নেতা,মন্ত্রী ও বিধায়ক সকলেই ভোটের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।তাঁকে নিয়ে প্রচারও চলছে জোর কদমে। ডিগ্রির ’মাহাত্মের’ কথাই তুলে ধরছেন।এমনকি
তবে ভোট যুদ্ধতো আর এক তরফা হয় ।তাই তৃণমূল প্রার্থী শর্মিলাকে লড়তে হবে সিপিএম ও বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে ।তবে অন্যান লোকসভা আসনের মত বঙ্গের এই আসনেও তৃণমূল তাদের মূল প্রতিপক্ষ হিসাবে বিজেপি প্রার্থীকেই চিহ্নিত করেছে ।
সিপিএম বর্ধমান পূর্ব লোকসভা আসনে প্রার্থী করেছে শ্রমজীবী পরিবার থেকে রাজনীতির আঙ্গিনায় উঠে আসা নীরব খাঁ কে।তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।অপর দিকে বিজেপি তাদের হরিণঘটারর বিধায়ক ও কবিয়াল অসীম সরকার কে এই আসনে প্রার্থী করেছে।কাজেই ইভিএমের লড়াইটা এখানে ত্রিপাক্ষিক । তবে তৃণমূল এখানে সিপিএমের ব্যাপারে একটু ’নরম’ আর বিজেপির ব্যাপারে ’অতি গরম’ ভূমিকা নিয়েই চলেছে।আর সেই জাঁতাকলে পড়ে বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকার এখন কার্যত জোড়া সমালোচনায় বিদ্ধ হচ্ছেন।
ভরা ভোটের বাজারে অসীম সরকারকে তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রতিনিয়ত বিঁধছে তৃণমূল ও সিপিএম। শুধু মঞ্চ থেকে নয়,সংবাদ মাধ্যমের কাছেও বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকার ’ফোর পাশ’ বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় । তার পর থেকে বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকারকে নিয়ে কটাক্ষের বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন বর্ধমান পূর্ব লোকসভা এলাকার তৃণমূলের নেতারা।এমকি সিপিএমের প্রার্থী ও নেতারও বিজেপি প্রার্থীর ’ফোর পাশ“ শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিচ্ছেন।এখন আবার বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি প্রার্থীর ’ফোর পাশ’ শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে কটাক্ষ করা পোস্টার পড়াও শুরু হয়েছে।
বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকার অবশ্য তাঁর ফোর পাশ শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা অস্বীকার করেন নি ।তবে ভারতীয় রাজনীতিতে ’ক্লাস ফোর’ পাশেরও যে ’মাহাত্ম্য’ রয়েছে তার ব্যাখ্যা তিনি দিয়েছেন। এব্যাপারে তিনি বিহারের রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (RJD) বলিষ্ঠ নেতা লালুপ্রসাদ যাদবের স্ত্রী রাবড়ি দেবীকে শিখণ্ডী করেন। তিনি বলেন,“ফোর পাশ রাবড়ি দেবীইতো বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন।
বিহারে ’ফোর পাশ’ প্রচুর মন্ত্রীওতো রয়েছে। যাঁরা আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে কটাক্ষ করছেন তারা এসব জানে কি? আসলে যাঁরা আমার সমালোচনা করছে তাঁরা ভারতের সংবিধানটাও মনে হয় পড়েনি।”এর পাশাপাশি ইংরেজিতে কথা বলে এবং তাঁর লেখা ইংরেজি গানের কলি শুনিয়ে অসীম বলেন,“হ্যাঁ , আমি ’ফোর পাশ’ সার্টিফিকেট দিয়েই বিধায়ক হয়েছি’।তবে এটাও সবার জানা দরকার,“একজন কবি হতে গেলে শুধুমাত্র আক্ষরিক বিদ্যা থাকলেই হয় না।এর জন্যে আমাকে মাস্টার ডিগ্রি কোর্সের ফিলোজফি ছাড়াও গীতা, মহাভারত, বেদ পুরাণ,কোরান ,ত্রিপিটক সবই পড়তে হয়েছে।আর পড়াশুনা করা আছে বলেই আমি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেমন যেতে পেরেছি তেমনই ভারতের আইসভায় যাওয়ার যোগ্য হিসাবেও নিজেকে তৈরি করেছি“।শুধু তাই নয়,আইনসভায় যাওয়ার ব্যপারে তিনি যে কনফিডেন্ট,সেটাও কথাবার্তার মধ্য দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন।।