শ্যামসুন্দর ঘোষ,কালনা(পূর্ব বর্ধমান)০২ এপ্রিল : সম্প্রতি জেলা ও মণ্ডল সভাপতির নাম ঘোষণা করেছিল বিজেপি । এনিয়ে দলের নিচের তলার কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিক্ষোভ রয়েছে । বিশেষ করে জেলা সভাপতিদের বদল না করায় বিজেপি কর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ রয়েছে রাজ্যের জেলাগুলিতে । গতকাল এই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ করে আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রামের বিজেপি বিধায়ক মনোজকুমার ওঁরাও তোপ দেগে ফেসবুকে লিখেছিলেন,, ‘শুভেন্দু অধিকারী ও দিলীপ ঘোষ বাংলায় পরিবর্তন আনতে জান প্রাণ লাগিয়ে দিচ্ছে। কয়েকজন নেতৃত্ব ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতে উঠে পরে লেগেছে। কিন্তু কয়েকজন সাধারণ কর্মীদের ভাবাবেগে আঘাত করে ও তাদের পছন্দের বিরুদ্ধে চাটুকারিকেই প্রধান্য দিচ্ছে। আলিপুরদুয়ার জেলায় নির্বাচনে দলের রেজাল্ট খারাপ হলে এর দায় তাদেরই নিতে হবে।’ এরপর তিনি লিখেছেন, ‘এই পরিবেশে দলের কোনও দায়িত্বে থাকতে পারছি না। তাই সব দলীয় পদ থেকে অব্যহতি নিলাম। একজন সাধারণ কর্মী হিসাবে বিজেপিতে থাকব।’ এই ঘটনার জের মিটতে না মিটতেই বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ সমীক ভট্টাচার্যকে “সভাপতি” করার দাবিতে পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা শহরে পোস্টার সাঁটালো “বিজেপি বাঁচাও মঞ্চ” । যদিও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি,তাদের এমন কোনো মঞ্চ নেই । দলীয় কর্মীদের মনোবলে চিড় ধরাতে ষড়যন্ত্র করছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ।
আজ বুধবার সকালে কালনার পুরনো বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় “বিজেপি বাঁচাও মঞ্চ”-এর সাঁটানো একাধিক পোস্টার নজরে পড়ে । ওই পোস্টারে দেখা যায় বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ সমীক ভট্টাচার্যর একটা ছবি ও বিজেপির প্রতীক পদ্মফুল । পোস্টারের একবারে ওপরে লেখা আছে, “একমাত্র শমিক ভট্টাচার্য সভাপতি হলেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার হবে।”
মাঝামাঝি জায়গায় কালো ব্যাকগ্রাউন্ডে সাদা হরফে লেখা হয়েছে, “সংসদে তিনি যেমন বলেন, রাস্তার লড়াইতেও মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে জোরদার লড়াই করতে পারবেন” । ঠিক তার নিচে সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে কালো হরফে লেখা হয়েছে, “তাই দলের সভাপতি রুপে আদি কর্মকর্তা শমিক।ভট্টাচার্যকেই চাই”। একেবারে নিচে লেখা আছে, “সৌজন্যে : বিজেপি বাঁচাও মঞ্চ” ।
এই পোস্টারের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিজেপির কালনা নগর সভাপতি সৌরভ রায় বলেন,’খবর পেয়ে আমি সরেজমিনে পুরনো বাসস্ট্যান্ডে দেখে এসেছি । বিজেপির এমন কোন দুর্দশা হয়নি যে বিজেপিকে বাঁচানোর জন্য মঞ্চ করতে হবে। আমাদের এই ধরনের কোন মঞ্চ নেই । এটা তৃণমূলের বা বিরোধীদের ষড়যন্ত্র । তারা বিজেপির মধ্যে বিভেদের সৃষ্টি করতে চাইছে ।’ তিনি এও বলেন, ‘শমিক ভট্টাচার্য বিশাল বড় মাপের নেতা । তিনি রাজ্য সভাপতি হবেন কি না সেটা দল ঠিক করবে । তৃণমূলের সাঁটানো পোস্টার দেখে ঠিক হবে না ।’
অন্যদিকে কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ তিনি কটাক্ষ করেছেন, বিজেপির কে রাজ্য সভাপতি হবে তাতে আমাদের কোন মাথাব্যথা নেই । তবে বিজেপির মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দল আছে । সেটা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কথাটি স্পষ্ট হয়ে গেছে । একটি সভাতে শুভেন্দু অধিকারী উপস্থিত না হওয়ায় তাকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি বলেছিলেন যে উনি আমাদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছেন না ।’ তিনিও বলেন যে বিজেপির কে রাজ্য সভাপতি হলো তাতে তাদের কিছু যায় আসে না ।।

