দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২৮ নভেম্বর : কাটোয়ার প্রাক্তন বাম বিধায়ক ডাঃ হরমোহন সিংহের শতবর্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে গেলেন বিমান বসু । বর্তমানে কাটোয়ার খাজুরডিহি গ্রামের কাছে নিজের হাতে গড়া শারীরিক ও মানসিক সক্ষমদের আবাসিক পুর্নবাসন কেন্দ্র ও অনাথ আশ্রম ‘আনন্দ নিকেতন’ হল ওই প্রাক্তন বামপন্থী নেতার বর্তমান ঠিকানা । সোমবার সেখানেই উদযাপন করা হয় তাঁর ১০০-তম জন্মদিন । সিপিএম নেতা বিমান বসু ছাড়াও বহু মানুষ আসেন তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে ।
কাটোয়ার সুদপুর গ্রামের বাসিন্দা হরমোহন সিংহ ছিলেন পেশায় চিকিৎসক । ১৯২৩ সালের ২৮ শে নভেম্বর তিনি সুদপুর গ্রামে জন্মগ্রহন করেন । ১৯৫৫ সালে তিনি সিপিএম পার্টিতে যোগ দেন । তারপর চিকিৎসা ছেড়ে পাকাপাকিভাবে রাজনীতিতে মনোনিবেশ করেন । ১৯৭১ সালে তিন মাসের জন্য কাটোয়ার বিধায়ক ছিলেন হরমোহন সিংহ । তারপর ১৯৭৭ ও ১৯৮২ সালে পরপর দুবার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলে । কাটোয়ার গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নে তাঁর প্রচুর অবদান আছে । সেই কারনে তাঁকে কাটোয়ার ‘রূপকার’ও বলা হয়ে থাকে । ১৯৮৮ সালে কাটোয়ার খাজুরডিহি গ্রামের কাছে প্রায় ৫০ একর জায়গার ওপর গড়ে তোলেন ‘আনন্দ নিকেতন’ নামে ওই অনাথ আশ্রমটি । কিন্তু ১৯৯১ সালে দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয় । তখন থেকেই তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান । এরপর ২০০৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী পত্নী বিয়োগের পর থেকে তিনি বাড়ি ছেড়ে পাকাপাকি ভাবে আনন্দ নিকেতনে বসবাস করতে শুরু করেন । দল থেকে বহিষ্কারের পরেও এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ করা থেকে সরে আসেননি হরমোহন সিংহ । মূলত তাঁর প্রচেষ্টাতেই ১৯৯৭ সালে কাটোয়ার সুদপুর গ্রামে গড়ে ওঠে ক্যানসার নির্ণয় শিবির ।
এলাকায় তাঁর উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য একাধিক পুরষ্কারও পেয়েছেন ডঃ হরমোহন সিংহ । ২০০০ সালে রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার এবং ২০০৬ সালে তিনি ডা: বি সি রায় পুরষ্কার পেয়েছিলেন । তাঁর হাতে গড়া ‘আনন্দনিকেতন’কে পরপর দু’বার ২০০১ ও ২০১১ সালে রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার দেওয়া হয়েছিল । এদিন প্রাক্তন দলীয় বিধায়ককে শুভেচ্ছা জানাতে এসে বিমান বসু বলেন,’ডঃ হরমোহন সিংহ যখন ৯৮ বছর পেড়িয়ে ৯৯ বছরে পা রাখেন তখনও আমি ওনার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম । তখন কথা দিয়েছিলাম উনি ১০০ বছরে পা রাখলে ফের শুভেচ্ছা জানাতে আসবো । সেই কথা রাখতেই এদিন আমার কাটোয়ায় আসা ।’।