এইদিন ওয়েবডেস্ক,দক্ষিণ ২৪ পরগণা,২৪ জানুয়ারী : প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে আসার পর বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতা এখন ইসলামিক জঙ্গিগোষ্ঠী গুলির হাতে । সন্ত্রাসের আঁতুরঘর পাকিস্তানের অনুগামী ওই সমস্ত গোষ্ঠীগুলি ভারতের ক্ষতি করার জন্য রীতিমতো ষড়যন্ত্র শুরু করেছে । আর এই ষড়যন্ত্রের অন্যতম অঙ্গ হল ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশী মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের ঢুকিয়ে দিয়ে জনবিন্যাসের পরিবর্তন ঘটানো । ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ অনুপ্রবেশ রুখতে কড়া নজরদারি করলেও উন্মুক্ত সীমান্ত দিয়ে হু হু করে ঢুকছে বাংলাদেশী মুসলিম অনুপ্রবেশকারীরা । যা ভারতের নিরাপত্তার জন্য চরম হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে । আর সীমান্ত উন্মুক্ত থাকার জন্য রাজ্যের মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসেকে দায়ী করছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তার অভিযোগ যে পশ্চিমবঙ্গর সীমান্তের একটা বড় অংশে বিএসএফকে ক্যাম্প করার জন্য জমি দিচ্ছেনা রাজ্য সরকার । এমনকি এজন্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে হয়েছিল সরকারকে, বলে তার অভিযোগ । যদিও রাজ্যের বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান ব্যানার্জি উল্টো কথা বলেছেন । তিনি বাংলাদেশী অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও সীমান্ত উন্মুক্ত থাকার জন্য কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের উপর দায় চাপিয়ে দিয়েছেন । তার কথায়, মমতা ব্যানার্জির চান উন্মুক্ত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া লাগানো হোক । কিন্তু এই বিষয়ে কেন্দ্র সরকারের কোন সদর্থক ভূমিকা নাই বলে অভিযোগ তার ।
আজ শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বারুইপুরে একটি ডায়ালিসিস সেন্টারের উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় । তখন সাংবাদিকরা বাংলাদেশী অনুপ্রবেশ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি সরাসরি কেন্দ্র সরকারের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে বলেন, ‘এটা কেন্দ্র সরকারের দায়িত্ব । রাজ্য সরকার সব ব্যাপারে সহযোগিতা করতে রাজি রয়েছে । মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীও বলেছেন যে এই ব্যাপারটা যদি তৎপর হয়ে, কেন্দ্র সরকার যদি দায়িত্বটা নেয় তাহলে রাজ্য সরকার সব ভাবে সহযোগিতা করতে রাজি আছি । আমরাও চাই যে দুই দেশের মধ্যে সীমানা নির্ধারণ এবং বেড়া দেওয়ার কাজ হোক । কারণ ওখান থেকে অনেক অনুপ্রবেশ করে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে আসছে। এটা আমাদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে চিন্তার বিষয় ।’ কি বললেন বিমান ব্যানার্জি শুনুন 👇
যদিও বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ নিয়ে তৃণমূলের অতীত ইতিহাস বলছে উল্টো কথা । বেশ কয়েক বছর আগে পূর্ব বর্ধমান জেলার তৃণমূলের এক বিধায়ক প্রকাশ্য মঞ্চে বাংলাদেশ অনুপ্রবেশকারীদের ভোটার কার্ড করে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন । হাওড়ার এক তৃণমূল নেত্রীকেও দলীয় বৈঠকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারীদের ভোটার কার্ড করে দেওয়ার পক্ষে বলতে শোনা যায় । তৃণমূলের ওই দুই নেতানেত্রীর ভিডিও সেই সময় ব্যাপক ভাইরাল হয়েছিল । আর এ নিয়ে মমতা ব্যানার্জিকে তুলোধোনা করেছিল বিজেপি ।
তবে শুধু বাংলাদেশী অনুপ্রবেশ সমস্যাই নয়,মমতা ব্যানার্জির স্বপ্নের ‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের’ গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও আজ সাংবাদিকদের অপ্রীতিকর প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় বিমান ব্যানার্জিকে । আসলে, রানাঘাটের শিশুকন্যা অস্মিকা দাসের পরে সোনারপুরের রিধিকা দাস নামে আরও এক শিশু বিরল রোগ “স্পাইনাল মাসকুলার এটোপশি টাইপ ওয়ানে” আক্রান্ত। এই বিরল রোগের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকরা তাদের ১৬ কোটি টাকা দামের ইনজেকশন প্রেসক্রাইব করেছেন । পরিবার দুটির কাছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলেও শিশু দুটি চিকিৎসায় তা কোন কাজেই লাগবে না বলে জানতে পেরেছেন তারা ।
আর আজ এনিয়ে বিমান ব্যানার্জিকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি ‘অকেজো’ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও বলেছেন,’দেখুন, ১৬ কোটি টাকা যদি একটা জীবন দায়ী ওষুধের দাম হয় তাহলে কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব হবে না এই টাকা যোগাড় করা । গণ সংগ্রহ করেও এত টাকা আসবে বলে আমার মনে হয় না । সেজন্য সরকার বিকল্প চেষ্টা ভাবনা করছে ।’ সেই সাথে তিনি বলেন,’আমার সঙ্গে এ ব্যাপারে তাদের কথাবার্তা হয়েছে । রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের মুখ্য সচিব এবং ডিএসএইচকেও আমি এই বিষয়ে বলেছিলাম । ওনারা বলেছিলেন যে এই রোগের একটা বিকল্প চিকিৎসা বের হয়েছে । এই চিকিৎসা বিভিন্ন জায়গায় দেওয়া হচ্ছে। বারুইপুরের একজন শিশুর ১৬ কোটি টাকা দামের ইনজেকশন প্রেসক্রাইব করা হয়েছে । আমি এই ব্যাপারে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে যোগাযোগ করেছিলাম । এত বিপুল টাকায় ওই পরিবার কি করে এই ইনজেকশন জোগাড় করবে তা নিয়ে আমি প্রশ্ন তুলেছিলাম । তা উনারা বলেছিলেন যে বিকল্প একটা চিকিৎসা বের হয়েছে সেই চিকিৎসার অনেককে সুস্থও হয়েছে । আমরা সেই চিকিৎসাটা তাকে দিতে পারি । সরকারও চেষ্টা করছে ।’।