প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৯ নভেম্বর : রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী কি চোর ? এই প্রশ্নই যেন বুধবার উস্কে দিলেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারি ২ ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি তথা জেলাপরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল।মঙ্গলবার মেমারির বড়পলাশন ২ অঞ্চলে দলীয় কর্মসূচীতে যোগ দিয়ে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলেছিলেন,’আমি কারুর কাছে কোনদিন চার পয়সা চাই নি।আমিও কাউকে কাটমানি খেতেও দেবো না ।’ এদিন এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে মহম্মদ ইসমাইল বলেন,’চোরের মায়ের বড় গলা ।’
রাজ্যের একজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দলেরই এক বরিষ্ঠ নেতার এমন বিস্ফোরক মন্তব্য রাজনৈতিক মহলেও শোরগোল ফেলে দিয়েছে।আর তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীর মধ্যে এমন কোন্দল দেখে বেজায় উৎফুল্ল বিরোধী শিবির ।
পঞ্চায়েত ভোট যত এগিয়ে আসছে ততই প্রকাশ্যে আসছে তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব ও গোষ্ঠী সংঘর্ষ ।তার রেশ পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও অব্যাহত। যা এখন মেমারি ২ ব্লকে ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। এইসব বন্ধ করার জন্য দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যাই হুঁশিয়ারী কিংবা নিষেধাজ্ঞার কথা শোনান না কেন,লাগাম পড়ছে না গোষ্ঠী কোন্দলে ।মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মহম্মদ ইসমাইল এদিন আরও বলেন,’সিপিএম ও বিজেপির লোকদের নিয়ে উনি গ্রাম দখলের রাজনীতি করতে নেমেছেন।যারা দু’র্দিনে মার খেয়ে পার্টি করেছিল তাদেরকে তিনি সরিয়ে দিতে চাইছেন।দলকেও তিনি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ছেন। আর এখন দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যই উনি ময়দানে নেমেছেন। দলকে বলবো উনি যেন এইরকম নোংরা খেলা বন্ধ করেন। উনি মঙ্গকোটেও এমন খেলা খেলেছেন।এখন মেমারি ২ ব্লকে ও মন্তেশ্বরেও একই নোংরা খেলা শুরু করেছেন । কাটমানি কি, কে খেয়েছে সেটা যদি উনি জেনে থাকেন তবে সেটা প্রকাশ্যে আনুন । তারা শাস্তি পাক । আমিতো বলবে চোরের মায়ের বড়গলা। দলের জেলা সভাপতি ও উচ্চ নেতৃত্বকে সব জানিয়েছেন বলেও এদিন মহম্মদ ইসমাইল মন্তব্য করেন ।’
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী এদিন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন,ঃঠাকুর ঘরে কে,আমি তো কলা খাই নি।কাটমানি নিয়ে আমি তো কারো নাম করে কিছু বল নি।তাহলে ওর (মহম্মদ ইসমাইল)এত গায়ে লাগছে কেন? আমার কাছে যা তথ্য আছে তা যদি আমি প্রকাশ করি তাহলে উনি (মহম্মদ ইসমাইল) আর সাতগাছিয়া বাজারে মুখ দেখাতে পারবেন না।পাশাপাশি সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী এও বলেন,দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছেও ওর
(মহম্মদ ইসমাইল) বিরুদ্ধে অনেক তথ্য আছে।আমার কাছে যা খবর দল ওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। আর আমি সিপিএমের কাছে ত্রাস ছিলাম।তাই বিজেপি বা সিপিএমের সঙ্গে আমি কোন সম্পর্ক রাখি না ।’
মন্ত্রী ও তৃণমূল নেতার এই দ্বৈরথ প্রসঙ্গে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন,’দলের কথা,প্রশাসনের কথা বাইরে বলা উচিত নয়।এটা দল বিরোধী কাজ হচ্ছে।দল এসব বরদাস্ত করবে না।’।