দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),২৭ জুন : দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার বাজারের হাউসিং কমপ্লেক্সের সংস্কারের কাজ বন্ধ রয়েছে । ফলে তিনতলা বিশিষ্ট ভবনগুলিতে নোনা ধরে গেছে । ছাদ থেকে ভেঙে পড়ছে বড়বড় চাঙড় । দেওয়ালের প্লাস্টার খসে খসে পড়ছে । ভবনের বাইরের দেওয়ালে গজিয়ে উঠেছে অশ্বত্থ, বট গাছ । দূর্ঘটনার আশঙ্কায় ইতিমধ্যেই সিংহভাগ আবাসিক ঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন । ভাতার হাউসিং কমপ্লেক্সের ৯৬ টি ফ্লাটের মধ্যে বর্তমানে মাত্র ২১-২২ টি ফ্লাট ব্যবহৃত হচ্ছে । বাকিগুলি ফাঁকা অবস্থায় পড়ে আছে । এমতবস্থায় ভাতার বাজারের হাউসিং কমপ্লেক্সের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান এলাকার বাসিন্দারা । স্থানীয়দের দাবি,ভাতারের রুপকার বলে পরিচিত প্রাক্তন বিধায়ক ভোলানাথ সেনের অন্যতম সৃষ্টি ভাতার হাউসিং কমপ্লেক্সের সংস্কারে উদ্যোগী হোক বর্তমান শাসকদল ।
প্রসঙ্গত,১৯৭৬ সালে তৎকালীন ভাতারের বিধায়ক ভোলানাথ সেনের সময় উন্নয়নের জোয়ার এসেছিল ভাতারে । সিদ্ধার্ধ শঙ্কর রায়ের মন্ত্রীসভায় পূর্তমন্ত্রী ছিলেন ভোলানাথবাবু । মন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই নিজের নির্বাচন ক্ষেত্রকে ঢেলে সাজাতে উদ্যোগী হন তিনি । একে একে গড়ে তোলেন হাসপাতাল, থানা, বিডিও অফিস,দমকল কেন্দ্রের ভবন । নির্মিত হয় আলিনগরের সুপরিকল্পিত স্টেডিয়াম । আর সেই সময়েই বিভিন্ন দপ্তরের সরকারী কর্মীদের থাকার জন্য আবাসন নির্মান করেন মন্ত্রী ভোলানাথ সেন ।
ভাতার বাজার সংলগ্ন প্রায় ৬ একর জায়গার উপর গড়ে ওঠে তিন তলা ভবন বিশিষ্ট ১৬ টি ব্লক । প্রতি ব্লকে রয়েছে ৬ টি করে ফ্লাট । মোট ৯৬ টি পরিবারের বসবাসের উপযুক্ত ও স্বাস্থ্যকর পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয় । শুধু তাই নয়,হাউসিং কমপ্লেক্সের ভিতরে রয়েছে অডিটোরিয়াম হল, শিশুদের পার্ক, বিএসএনএলসহ দুটি সরকারি দপ্তরের জন্য পৃথক ভবন ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ,বামফ্রন্টের জমানার পর থেকেই ভোলানাথ সেনের স্বপ্নের প্রকল্পগুলি অবহেলার শিকার হয়ে আসছে । শুধুমাত্র সংস্কারের অভাবে আজ শ্মশানে পরিনত হয়েছে আলিনগরের স্টেডিয়ামটি । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অবসরপ্রাপ্ত এক সরকারী কর্মীর কথায়,সিপিএমের রাজস্তকালে নিয়মিত ব্যবধানে ভাতার হাউসিং কমপ্লেক্সের সংস্কারের কাজ হত । কিন্তু ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার আসার পর থেকে এযাবৎ মাত্র দুটি ব্লকের সংস্কার হয়েছে । বাকি ব্লকগুলি জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে । ভবনগুলির অবস্থা এতটাই বিপজ্জনক যে আবাসিকরা হয় অন্য কোথাও বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন, নচেৎ ভাতার বাজার বা সংলগ্ন এলাকায় জায়গা কিনে বাড়ি নির্মান করে বসবাস করছেন । ৯৬ টির মধ্যে বর্তমানে ২০-২২ টি পরিবার বসবাস করছে আবাসনগুলিতে । বাকিগুলি পড়ে রয়েছে ফাঁকা অবস্থায় । এছাড়া অডিটোরিয়াম জরাজীর্ণ । শিশুদের পার্ক আজ আগাছার জঙ্গলে ভর্তি । ভাতার হাউসিং কমপ্লেক্সের বিষয়ে বর্তমান শাসকদলের উদাসীনতা নিয়ে তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ।।