সঞ্জয় মণ্ডল,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১১ জুলাই : রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসনিক আধিকারিক বা সমাজের সম্পন্ন ব্যক্তিদের হাত দিয়েই সাধারণত কোনো নবনির্মিত মন্দির বা ভবনের উদ্বোধন করতে দেখতে অভ্যস্ত সকলে । কিন্তু কার্যত নজির সৃষ্টি করে এক বৃদ্ধাকে দিয়ে ফিতে কেটে নবনির্মিত মন্দিরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করল পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার ব্লকের আমারুন বাজারের নুতন দুর্গা মন্দির কমিটি । মন্দির কমিটির এহেন উদ্যোগের প্রশংসায় পঞ্চমুখ এলাকাবাসী । এদিকে নিজের হাত দিয়ে মন্দিরের উদ্বোধন করতে পেরে যারপরনাই খুশি ৯৫ বছর বয়স্ক মিরা রানী ঘোষ নামে ওই বৃদ্ধা ৷ তিনি বলেন,’এতদিন দেবীমাকে অস্থায়ী ছাউনিতে এনে পূজো করা হত । মায়ের মন্দির নির্মাণ হোক, এটা আমার ও সকলের স্বপ্ন ছিল । অবশেষে সেই স্বপ্নপূরণ হওয়ায় খুব আনন্দ হচ্ছে ।’ তাঁকে মন্দিরের উদ্বোধনের সূযোগ করে দেওয়ার জন্য কমিটির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মিরা রানীদেবী ।
জানা গেছে,ভাতার থানার আমারুন স্টেশন বাজারে বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়কের ধারে স্বামীর ভিটেতে বসবাস করেন বৃদ্ধা মিরা রানী ঘোষ । তাঁর বাড়ির পাশেই বিগত ৬০ বছর ধরে দুর্গাপূজা হয়ে আসছে । তবে এতদিন দেবীর কোনো মন্দির ছিল না । তাল পাতার ছাউনি দেওয়া ঝুপড়িতে দুর্গাপ্রতিমা এনে শারদ্যোৎসব পালন করত এলাকার বাসিন্দারা । কয়েক বছর আগে স্থানীয় বাসিন্দারা দেবীর একটা স্থায়ী মন্দির নির্মানের জন্য উদ্যোগী হন । নিজেদের মধ্যে চাঁদা সংগ্রহ করে সেই অর্থে এবারের শারদ্যোৎসবের কয়েক মাস আগে মন্দির নির্মানের কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে ।
আজ বৃহস্পতিবার নবনির্মিত মন্দিরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয় । মন্দির উদ্বোধন ঘিরে ছিল সাজোসাজো রব । বৈদিক রীতি মেনে হোমযজ্ঞ সহকারে মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করা হয় মহাদেব, গনেশ, শিব অনুচর নন্দী-ভৃঙ্গী এবং লোকনাথ ব্রহ্মচারীর বিগ্রহ ।তার আগে সকাল ৭ টা নাগাদ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে মন্দির প্রতিষ্ঠার সূচনা করা হয় । প্রায় চল্লিশ জন মহিলা ও পুরুষ মিলে প্রভাতফেরি বের করেন । সমগ্র আমারুন বাজার পরিক্রমা করার পর ফিরে এসে মন্দির উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিক পর্ব শুরু হয় । মহিলারা ঘটে গঙ্গাজল ভরে মঙ্গল ঘট স্থাপন করেন । এরপর পুরোহিত বৈদিক মন্ত্রচারণের মাধ্যমে মন্দিরের শুভ উদ্বোধনের কাজ শুরু করেন।।