এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১৬ জুলাই : পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারের খেড়ুর মৌজার অন্তর্গত ছাতনী গ্রামের প্রায় তিন বিঘা পরিমাণ চাষ দেওয়া জমিতে দলীয় পতাকা লাগানোর পর ধানের চারা পুঁতে দখল নিল সিপিএম পার্টি । সিপিএমের দাবি, ওই জমিগুলি খাসজমি এবং বামফ্রন্টের আমলে পাট্টা বিলি করা হয়েছিল । যদিও ছাতনি গ্রামের জনৈক বসু পরিবারের দাবি যে জমিগুলি তাদের পারিবারিক সম্পত্তি এবং তাদের দাদুর আমল থেকে বংশানুক্রমিক ভাবে তাদের নামে রেকর্ড হয়ে আসছিল । এদিকে আজ বুধবার সকালে সিপিএমের জমি দখলের পর পরিবারটি ভাতার ভূমি ও ভূমি সংস্কার অফিসে অভিযোগ জানান । ভূমি অফিস থেকে দুপক্ষের কাছ থেকে নথিপত্র চাওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে । যদিও বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেনি শাসকদল । তৃণমূল কংগ্রেসের ভাতার ব্লক সভাপতি বাসুদেব যশ জানিয়েছেন যে তারা প্রশাসনিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন না ।
জানা গেছে,খেড়ুর মৌজায় তিনটি দাগ মিলে প্রায় তিনবিঘা পরিমাণ বিতর্কিত জমির মালিক ছিল ছাতনী গ্রামের বসু পরিবার । ভারত কৃষকসভার পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সহ সম্পাদক নজরুল হকের দাবি, বামফ্রন্টের আমলের ভূমি সংস্কার আইনের অধীনে ১৯৯২ সালে জমিটিকে এক নম্বর খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত করা হয় । তারপর প্রায় ১৫ টি ভূমিহীন পরিবারকে পাট্টা দেওয়া হয়েছিল। তাদেরই দখলে ছিল জমিটি । কিন্তু স্থানীয় একটি পরিবার অসৎ উপায়ে খাসজমির তালিকা থেকে বাদ দিয়ে নিজেদের নামে রেকর্ড করে নেয় । এবছর জোর করে চাষ করার চেষ্টা করছিল।’ অন্যদিকে বসু পরিবারের সদস্য কল্যাণ বসু, অনুপ বসুর কথায়,’ওই জমিগুলি তাদের পৈতৃক সম্পত্তি । সিপিএমের মদতে কিছু লোকজন জোর করে দখল করে রেখেছিল। এখনো জমিগুলি তাদের নামে রেকর্ড রয়েছে । কিন্তু আজ সিপিএম পার্টি জোর করে দখল করেছে বলে অভিযোগ তাদের ।
জানা গেছে,খেড়ুর মৌজায় তিনটি দাগ মিলে প্রায় তিনবিঘা পরিমাণ বিতর্কিত ওই কৃষিজমি ছাতনি গ্রামের কয়েকটি পরিবার চাষাবাদ করে আসছিলেন বামফ্রন্টের আমল থেকে । চলতি আমন মরশুমে সেগুলি চষে দেয় ছাতনি গ্রামের বসু পরিবার। এরপর সাতসকালেই নজরুল হক, সিপিএমের খেতমজুর সংগঠনের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সম্পাদক মিজানুর রহমান ও কৃষক নেতা ইন্দ্রজিৎ হাজরা কয়েকজন দলীয় কর্মীকে সাথে নিয়ে চাষ দেওয়া জমিতে দলীয় পতাকা পুঁতে দেয় । তারপর কয়েকজন খেতমজুরকে দিয়ে জমিতে ধান চারা রোপন করে । এর আগে একই কায়দায় দলীয় পতাকা পুঁতে ভাতারের কাশীপুর গ্রামে বেশ কিছু সরকারি খাসজমির দখল নিয়েছিল সিপিএম । যদিও ভূমি দফতর থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় সরকারি জমি ওভাবে কেউ দখল নিতে পারে না। এদিকে আজ ছাতনী গ্রামে সিপিএমের জমি দখলকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ব্লকের রাজনৈতিক মহলে ।।

