এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),২৫ আগস্ট : ভাতারে এক সেনাকর্মীর বাড়িতে চুরির ঘটনায় ধৃত দুই দুষ্কৃতিকে জেরা করে চুরি যাওয়া ৮৬ গ্রাম সোনা উদ্ধার করল পুলিশ । মঙ্গলবার রাতে ধৃতদের বাড়ি ও কাটোয়া থানার দাঁইহাট শহরের বাসিন্দা সুদীপ মোদক ওরফে চাঁদু নামে এক ব্যবসায়ীর দোকান ও বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ওই সোনা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভাতার থানার ওসি প্রণব বন্দ্যোপাধ্যায় । সোনা উদ্ধারের পাশাপাশি চোরাই গহনা কেনার অভিযোগে ওই ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । এদিকে ঘটনার দু’সপ্তাহের মধ্যেই চুরি যাওয়া গহনা উদ্ধার হওয়ায় ভাতার থানার পুলিশের প্রশংসা করেছেন ভাতার বাজার রামকৃষ্ণপল্লি এলাকার বাসিন্দা স্নেহাংশু ঘোষ নামে ওই সেনাকর্মীর স্ত্রী তাপসীদেবী । তিনি বলেন, ‘ভাতার থানার পুলিশ খুব দ্রুততার সঙ্গে কাজ করেছে । পুলিশের ভূমিকায় আমরা খুব খুশি। আশা করছি চুরি যাওয়া বাকি জিনিসপত্রও দ্রুত উদ্ধার করতে সক্ষম হবে পুলিশ ।’
ভাতার বাজারের রামকৃষ্ণপল্লি এলাকার বাসিন্দা সেনাকর্মী স্নেহাংশু ঘোষ বর্তমানে কর্মসুত্রে ভিন রাজ্যে রয়েছেন । বাড়িতে দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী তাপসীদেবী । গত ৫ আগস্ট তাপসীদেবী তাঁর দুই সন্তানকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি এরুয়ার গ্রামের এক আত্মীয়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন । বাড়ি তালাবন্ধ ছিল । সেই সুযোগে ওই দিন রাতেই তাঁদের বাড়িতে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনাটি ঘটে যায় । তাপসীদেবীর দাবি, ২০-২৫ ভরি সোনার গহনা,নগদ ২৫-৩০ হাজার টাকাসসহ ১৫ লক্ষের অধিক টাকার সামগ্রী চুরি করে নিয়ে পালিয়েছে দুষ্কৃতিরা । গত ৬ আগস্ট তিনি ভাতার থানায় এনিয়ে অভিযোগ দায়ের করলে ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ ।
এরপর পুলিশ গত সোমবার ভোররাতে ভাতার বাজারে রবীন্দ্রপল্লি এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করার সময় কাটোয়া থানার করজগ্রামের বাসিন্দা শেখ আলম ও নাসিরউদ্দিন শেখ নামে ওই দুই দুষ্কৃতিকে গ্রেফতার করে । পুলিশ জানায়, ধৃতরা পুলিশের খাতায় দাগি অপরাধী বলে চিহ্নিত । এদের বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধের অভিযোগ রয়েছে । আলম ও নাসিরউদ্দিনরা রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় গিয়ে তারা চুরি করত বলে পুলিশ সুত্রে খবর । তাদের গ্রেফতারের পর আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ ।
শেষ পর্যন্ত ধৃতরা জেরায় স্বীকার করে তারাই ওই সেনাকর্মীর বাড়িতে সেদিন চুরি করেছিল । তারপর মঙ্গলবার রাতে করজগ্রামের বাসিন্দা ধৃত দুই দুষ্কৃতির বাড়ি ও দাঁইহাটের বাসিন্দা সুদীপ মোদক নামে ওই ব্যবসায়ীর দোকান ও বাড়িতে হানা দিয়ে ৮৬ গ্রাম সোনা উদ্ধার করে পুলিশ । সুদীপ ইতিমধ্যে চোরাই সোনার গহনার বেশ কিছুটা গলিয়ে বাঁট তৈরি করে ফেলেছিল বলে জানিয়েছেন ওসি প্রণব বন্দ্যোপাধ্যায় । বুধবার ধৃতকে ওই ব্যাবসায়ীকে বর্ধমান আদালতে তোলা হলে পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয় । পুলিশ জানিয়েছে,ধৃতদের জেরা করে সেনাকর্মীর বাড়িতে চুরি যাওয়া বাকি সামগ্রী উদ্ধারের চেষ্টা চলছে । পাশাপাশি এই চক্রে আর কেউ যুক্ত আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ ।।