এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা ১৩ আগস্ট : গঙ্গার ভয়ঙ্কর ভাঙনে তলিয়ে গেলো ভূতনীর কেশবপুর বাঁধ । বাঁধের প্রায় একশো মিটার ভেঙে গ্রামে জল ঢুকতে শুরু করে দিয়েছে । ফলে যে কোন মুহূর্তে ভূতনির বিস্তীর্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে যেতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় গ্রামবাসী । এই পরিস্থিতিতে চরম আতঙ্কে রয়েছেন ভূতনির তিনটি অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ । অন্যদিকে কশিঘাটের বাঁধেও ভাঙন শুরু হয়েছে বলে খবর । ভাগিরথীর রুদ্র রূপ দেখে কার্যত দিশেহারা অবস্থা ভূতনি চরের বাসিন্দাদের । এদিকে প্লাবন আটকাতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় রিং বাঁধের কাজ শুরু করেছে সেচ দপ্তর।
জানা গেছে, মালদা শহর থেকে ভূতনিচরের দূরত্ব প্রায় ৫০ কিমি । প্রায় লক্ষাধিক মানুষের বাস । প্রতিবছরই এই এলাকায় ভাগিরথীর বাঁধে ভাঙন দেখা দেয় । সেচ দপ্তরের তরফে বাঁধ মেরামতির জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যায় করা হলে অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন হয় না । প্রতি বছর বর্ষায় আতঙ্কে কাটানো ভূতনিবাসীদের কার্যত বিধিলিপি হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত্রি আনুমানিক ১২ টা নাগাদ ভূতনীর কেশবপুরে বাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দেয় । বাঁধের প্রায় একশ ফুট অংশ ভাগিরথীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায় । হুহু করে জল ঢুকতে শুরু করে ভূতনীর সংরক্ষিত এলাকায় । এই কেশবপুর বাঁধ থেকে কিছুটা দূরেই রয়েছে একটি রিং বাঁধ । এই বাঁধ ভাঙলেই জলের তলায় তলিয়ে যাবে গোটা ভূতনিচর । গৃহহীন হয়ে যাবেন কয়েক লক্ষ মানুষ । ফলে এখন আতঙ্কে প্রহর গুনছেন ভূতনি চরের বাসিন্দারা । অন্যদিকে আবার ভূতনীর কাশীঘাট বাঁধেও ভাঙন শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ।
স্থানীয় বাসিন্দা ইমরান হক ,বাসুদেব মন্ডলদের অভিযোগ,ফি-বছর সেচ দপ্তর থেকে ভূতনির বাঁধের সংস্কারের কাজ করা হয় । কিন্তু কাজ নিম্ন মানের হওয়ায় প্রতি বছরই একই জায়গাই ফের ভাঙ্গন দেখা দেয় । কোটি কোটি টাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে দুর্নীতির কারণে ।’ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে সরকারি আমলা বা ঠিকাদার সংস্থা সকলেই এই দুর্নীতির সাথে জড়িত বলে তাঁরা অভিযোগ তোলেন ৷ এবারে ফের বাঁধে ভাঙন দেখা দেওয়ায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায় ।
এদিকে ভাঙনের খবর পেয়ে নদী বাঁধের ভাঙন পরিদর্শনে গেছেন প্রশাসন ও সেচ দপ্তরের আধিকারিকরা । যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামতির কাজ শুরু করেছে সেচ দপ্তর । মানিকচক ব্লক বিডিও জয় আমেদ জানান, কেশবপুর বাঁধ ভেঙে জল জল ঢুকছে । এই জল আটকানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে । ইতিমধ্যে এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে মানুষদের অন্যত্র উঁচু জায়গায় যাওয়ার জন্য। দ্রুততার সাথে কাজ হচ্ছে । গ্রামে যাতে জল না ঢুকে তারই চেষ্টা চালানো হচ্ছে ।।