— আসছি
— আসতে না আসতেই চলে যাচ্ছ যে!
— কই! যাচ্ছি না তো, আমি তো বললাম, আসছি।
— হম, সে তো শুনলাম। কিন্তু কোথায় আসছেন ম্যাডাম?
— কোথায় আবার, তোমার কাছে।
— তাই? তা কতটা কাছে, শুনি?
— যতটা কাছে এলে আমরা দুটো মানুষ এক হয়ে যাব, দুটো হৃদয় একই কথা বলবে…
— তারপর? আর তারপর যখন সবকিছুকে উপেক্ষা করে একদিন চলে যাবে? তখন! শুধু শুধু মায়া বাড়িয়ে কষ্ট পাওয়ার কি খুব দরকার?
— আমার এই থেকে যাওয়ার আকুতির মতো তোমার রেখে দেওয়ার আকাঙ্ক্ষাও যদি তীব্র হয় তাহলে ‘ছেড়ে যাওয়া’ তো শুধু দুটো আভিধানিক শব্দ মাত্র!
— এইসব কাব্যকথায় জীবন চলে না কখনো। বাস্তব যে বড় কঠিন।
— এসো, আমরা ভালোবেসে এই কঠিন বাস্তবটাকে একটু সহজ বানিয়ে নিই আর জীবনটাকে একটুখানি সরল।
— ভালোবাসা! এই শব্দটাতে আমার একটুও বিশ্বাস নেই, একটুও না।
— তাহলে মন্দবাসা?
— মানে?
— মানে চোখ বন্ধ করে রাখলে তো আর সূর্যোদয় মিথ্যে হয়ে যায় না, পৃথিবী অন্ধকার হয়ে যায় না। কি আশ্চর্য! আগুন পেলে মোম নরম হবে না? আঘাত পেলে হৃদয় ব্যথিত হবে না? আর সত্যিকারের ভালোবাসা পেলে তোমার মন, তোমার ভাবনা বদলাবে না বলছো? বদলাবে… বদলাবে। একদিন তুমিও ঠিক বদলে যাবে, দেখো।
— কি সব যুক্তি! তবে সাজিয়ে গুছিয়ে লিখে দিলে পড়তে কিন্তু বেশ ভালোই লাগবে। এই যে এখন, এই যে তুমি এতসব বলছো, শুনতেও তো ভালোই লাগছে কিন্তু ওটুকুই। তার বেশি কিন্তু কিছু নয়। আসলে কি জানো, জীবনের মতো উপন্যাস হয়, উপন্যাসকে কখনো জীবনের সাথে মেলাতে যেওনা, হোঁচট খাবে, প্রতিপদে।
— আসছি
— মানে?
— না মানে দেখলাম তো, আমাকে তোমার কাছে না রাখার যুক্তি আছে অনেক, আমাকে না ভালোবাসার ইচ্ছেটাও কি ভীষণ প্রকট অথচ কই, আমাকে আগলে রাখার তিলমাত্র চেষ্টা তো দেখলাম না! তাই…
— যেও না …প্লীজ যেও না
— কিন্তু বাস্তব যে বড় কঠিন।
— আমরা আছি তো, বাস্তবের সমস্ত চড়াই উৎরাইয়ের সাক্ষী থেকেই আমরা আমাদের জন্য একটা নতুন পৃথিবী গড়ে নেব।
— তাই? কিন্তু এইসব কাব্যকথায় যে জীবন চলে না মশাই
— তাহলে এসো, আমরাই দায়িত্ব নিয়ে আমাদের জীবনটাকে একটু কাব্যময় করে তুলি…
— কিন্তু ভালোবাসা? ভালোবাসা যে আসলে…
— ভালোবাসা আসলে আমরা… আমরা দুজন।
ভালোবেসে সখী নিভৃত যতনে আমার নামটি লিখ তোমার মনের মন্দিরে…।।