প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৭ অক্টোবর : লক্ষ্মী পুজোর আগেই নিষ্ঠুর স্বামীর নৃশংস হামলায় প্রাণ খোয়ালেন এক জীবন্ত লক্ষ্মী । রবিবার সকালে মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কালনা থানার ইশবপুর গ্রামে। মাথায় শাবল দিয়ে আঘাত করে বিছানায় ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা স্ত্রী লক্ষ্মী বিশ্বাস (২৫) কে খুনের অভিযোগে পুলিশ স্বামী দীপঙ্কর বিশ্বাস ওরফে বিজুকে গ্রেপ্তার করেছে । ময়নাতদন্তের জন্য এদিনই বধূর মৃতদেহ পাঠানো হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ।খুনি জামাইয়ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন নিহত বধূর মা।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বধূ লক্ষ্মী বিশ্বাসের বাপের বাড়ি কালনা থানার সুলতানপুর পঞ্চায়েতের ইসবপুর গ্রামে। বছর ৫-৬ আগে হুগলীর চুঁচুড়া নিবাসী দীপঙ্কর বিশ্বাসের সঙ্গে লক্ষ্মীর বিয়ে হয় । তাঁদের দুটি সন্তানও রয়েছে। বধূর আত্মীয় গৌতম দাস বলেন ,লক্ষ্মীর দাম্পত্য জীবন শুখের ছিল না । অন্য কোন পুরুষের সঙ্গে লক্ষ্মীর সম্পর্ক রয়েছে এমন মিথ্যা সন্দেহ করতো তাঁর স্বামী দীপঙ্কর। এই মিথ্যা সন্দেহ নিয়ে তাঁদের দাম্পত্য জীবনে অশান্তি শুরু হয় ।লক্ষীকে তাঁর স্বামী মারধোর করা শুরু করে । স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে লক্ষ্মী কালনায় তাঁর বাপের বাড়িতে চলে আসে । বেশ কয়েক বছর ধরে লক্ষ্মী বাপের বাড়িতেই রয়েছে।তাঁর স্বামী দীপঙ্কর কালনায় শ্বশুর বাড়িতে আসাযাওয়া করতো ।গৌতমবাবু আরও বলেন ,শ্বশুরবাড়িতে এসেও রবিবার সাতসকালে লক্ষ্মীর সঙ্গে চরম অশান্তি করে জমাই দীপঙ্কর । তারপর লক্ষ্মী যখন তাঁর বাপের বাড়ির বিছানায় ঘুমিয়েছিল তখন দীপঙ্কর ভারি একটা শাবল নিয়ে লক্ষ্মীর মাথায় সজোরে আঘাত করে । লক্ষ্মী আর্ত চিৎকার শুরু করলে পরিবারের সবাই ঘরে ঢুকে রক্তাত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে
কালনা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায় । সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক লক্ষ্মী বিশ্বাসকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ।এই খবর পেয়ে কালনা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে বধূর স্বামী দীপঙ্কর বিশ্বাস কে ধরে থানায় নিয়ে যায় ।এদিনই ঘটনা সবিস্তার উল্লেখ করে বধূর মা তাঁর জামায়ের বিরুদ্ধে কালনা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন । এসডিপিও ( কালনা ) সপ্তর্ষি ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন ,“পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে । মৃতার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে
খুনের মামলা রুজু করে বধূর স্বামী দীপঙ্কর বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ।’।