প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,ভাতার (পূর্ব বর্ধমান),২১ জুন : অভিভাবকরা বিজেপির সমর্থক হওয়ায় কন্যাশ্রীর আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় শংসাপত্র দিতে চাইছেন না পঞ্চায়েত প্রধান ! এমনই অভিযোগ তুলে বিডিওর দ্বারস্থ হল পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার আমারুন স্টেশন শিক্ষানিকেতনের ৫ ছাত্রী । মৌসুমী মালিক, সুচিত্রা দাস, ঋত্বিকা সরকার, কুসুম সরকার নামে চার ছাত্রী ও পল্লবী ঘোষ নামে দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীর মা অতসী ঘোষ সোমবার বিডিওর কাছে আবেদন জানান যাতে কন্যাশ্রীর আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় শংসাপত্রগুলি তাদের অবিলম্বে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় । এই বিষয়ে ভাতারের বিডিও তপন সরকার বলেন, ‘আমার কাছে কয়েকজন ছাত্রী এসেছিল । প্রধানকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । সমস্যা মিটে গেছে ।’
আমারুন-১ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত আমারুন গ্রামে বাড়ি ওই ৫ ছাত্রীর । তাদের কেউ দশম, কেউ একাদশ কেউ বা দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়াশোনা করে । একই গ্রামে বাড়ি পঞ্চায়েত প্রধান দীপক ভট্টাচার্যের । জানা গেছে,সম্প্রতি আমারুন স্টেশন শিক্ষানিকেতন স্কুলে কন্যাশ্রীর অনুদানের জন্য ছাত্রীদের আবেদনপত্র জমা দেওয়ার জন্য বলা হয় । আবেদনপত্রের সঙ্গে পারিবারিক আয় ও অবিবাহিতার প্রমাণের শংসাপত্র দেওয়া বাধ্যতামূলক । আর ওই দুটি শংসাপত্র দেবেন স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধান । কিন্তু বারবার পঞ্চায়েত অফিসে গিয়েও প্রধান ওই দুটি শংসাপত্র দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ তুলেছে ওই ছাত্রীরা ।
ছাত্রীদের মধ্যে মৌসুমী মালিক,পল্লবী ঘোষের মা অতসীদেবীর অভিযোগ, ‘প্রধান সাহেবের বাড়ি থেকে পঞ্চায়েত অফিসে বারবার ছুটে গেলেও উনি ওই দুই শংসাপত্র দিতে চাইছেননা । আমাদের পরিবারের লোকজন বিজেপি হয়ে ভোটে প্রচার করার জন্যই এভাবে অযথা হয়রানি করা হচ্ছে । আর শংসাপত্র না পাওয়ার জন্য কন্যাশ্রীর আবেদনও করা যাচ্ছে না । তাই বাধ্য হয়ে এদিন বিডিওর দ্বারস্থ হয়েছি ।’
যদিও অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধান দীপক ভট্টাচার্য বলেন, ‘ওই ছাত্রীদের অবিভাবকদের বলা হয়েছিল পঞ্চায়েত অফিসে দেখা করতে। কারন অভিভাবকরা ছাড়া নাবালিকা ছাত্রীদের শংসাপত্র দেওয়া সম্ভব নয় । কিন্তু ওরা আসেননি । এলেই শংসাপত্র পেয়ে যাবে ।’ পাশাপাশি তাঁর দাবি, ‘ওই ছাত্রীদের বাড়ির লোকজনই বলেছে তাদের কন্যাশ্রী প্রকল্পের সরকারি অনুদানের প্রয়োজন নেই । তা সত্ত্বেও আমরা আবেদন করার জন্য বলেছি ।’
এদিকে ছাত্রীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি তথা রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন, ‘এরকম তো হওয়ার কথা নয় । খোঁজ খবর দেখছি । যদি ঘটনা সত্যি হয়, তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।’।