এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাঁকুড়া,২৮ জুলাই : মোবাইলের টাওয়ার বসানোর নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে সাড়ে ১৪ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে ৬ জনকে গ্রেফতার করল বাঁকুড়া পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম রজত অধিকারী, রাজীব মজুমদার, অনুপম মন্ডল,শীর্ষেন্দু দে,বিবেকানন্দ মন্ডল এবং অভিজিৎ সরকার । তাঁরা কলকাতার এয়ারপোর্ট থানার মহাজাতিনগর এলাকায় একটি কল সেন্টার চালাতো । আর এই প্রতারণা চক্রের মাস্টার মাইন্ড সিভিল ইঞ্জিনিয়ার শীর্ষেন্দু দে ও রজত অধিকারী বলে জানিয়েছে পুলিশ । বৃহস্পতিবার ধৃতদের আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানায় পুলিশ ।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে,গত ৭ জুলাই বাঁকুড়ার জয়পুর থানার বাশী চন্ডীপুর গ্রামের বাসিন্দা রাহুল বটব্যাল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন । তাঁর অভিযোগ, ওইদিন একটি নির্দিষ্ট নম্বর থেকে তাঁর মোবাইলে ফোন করা হয় । তাঁকে মোবাইলের টাওয়ার বসাতে ইচ্ছুক কিনা জানতে চাওয়া হয় । বলা হয় ভাড়া বাবদ মাসিক এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা দেওয়া হবে । তিনি রাজি হয়ে গেলে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে জমির দলিল ছাড়াও ভোটার কার্ড, আধারকার্ডসহ বিভিন্ন পরিচয়পত্রের ছবি তুলে পাঠাতে বলা হয় । তিনি সমস্ত কিছুর ছবি তুলে পাঠিয়ে দেন । এরপর বিভিন্ন অছিলায় তাঁর কাছ থেকে ১৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রাহুল বটব্যালের ।
জানা গেছে,অভিযোগ পাওয়ার পরেই ঘটনার তদন্তে নামে ডিএসপি (ডিএনটি) এর নেতৃত্বে সাইবার ক্রাইম বিভাগ ও জয়পুর থানার পুলিশের একটি দল । তারপর মোবাইল ফোনের সুত্র ধরে গত ১৯ জুলাই রজত অধিকারী, রাজীব মজুমদার ও অনুপম মন্ডলকে গ্রেফতার করা হয় । এই তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কলকাতার এয়ারপোর্ট থানার মহাজাতিনগর এলাকার একটি কল সেন্টারের হদিড পায় তদন্তকারী দলটি । বুধবার বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের সাহায্যে এয়ারপোর্ট থানার অন্তর্গত বিরাটির ওই কল সেন্টারে অভিযান চালিয়ে বাকি ৩ প্রতারক শীর্ষেন্দু দে,বিবেকানন্দ মন্ডল ও অভিজিৎ সরকার নামের আরো ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ । উদ্ধার হয় বেশ কিছু স্মার্টফোন । পাশাপাশি আটক করা হয় ওই কল সেন্টারে কর্মরত আরো ১২ জন কর্মীকে । যদিও প্রতারনা মামলায় তাদের সেভাবে যোগ না থাকায় পুলিশ পরে তাদের ছেড়ে দেয় ।
এদিন জয়পুর থানায় সাংবাদিক বৈঠক করেন বাঁকুড়া জেলার পুলিশ সুপার বৈভব তেওয়ারি । তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে ধৃত শীর্ষেন্দু দে,রজত অধিকারীসহ ৩ জন অন্য কোথাও প্রতারণার প্রশিক্ষণ নিয়েছিল । তারপর তারা প্রতারণা চক্র চালাতে রীতিমতো একটা কল সেন্টার খুলে বসে । আমাদের সন্দেহ এই চক্রে আরও অনেকে যুক্ত আছে ।’ ধৃতদের প্রশিক্ষকদের পাশাপাশি এই প্রতারণা চক্রে যুক্ত বাকিদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন বাঁকুড়া জেলার পুলিশ সুপার ।।