প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৮ নভেম্বর : বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর যাঁরা অত্যাচার করছে তাঁরা আখেরে বাংলাদেশেরই সর্বনাশ করছে। বাংলাদেশের ভবিষ্যতও আফগানিস্তানের মতই হবে। বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে বাংলাদেশ নিয়ে এমনই ভবিষ্যৎবাণীর কথা শোনালেন বঙ্গ বিজেপির অন্যতম বলিষ্ঠ নেতা দিলীপ ঘোষ। একইসঙ্গে তিনি বলেন ,’পড়শি দেশে শান্তি থাকুক এটা আমরা চাই।কিন্তু আমাদের খাবে দাবে, আবার হিন্দুদের উপর অত্যাচার করবে, তা দেখে আমরা তো চুপ থাকতে পারি না। বেশি বাড়াবাড়ি করলে আমাদের ওতো কিছু করতে হবে। তৃণমূল ভোটের জন্যই বাংলাদেশে হয়ে চলা ঘটনা নিয়ে চুপ করে আছে বলে দিলীপ ঘোষ দাবি করেছেন।
হাসিনা সরকারের অবসান ঘটার পর থেকে অশান্ত হয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিনিয়ত সে দেশে অত্যাচারের শিকার হচ্ছে হিন্দুরা। রেহাই পাচ্ছেনা হিন্দু দেব দেবীর মন্দির এমনকি ইসকন কর্তৃপক্ষ। সোমবার বাংলাদেশ বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয় ইসকনের অন্যতম সদস্য চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে।বাংলাদেশের জেলেই তাঁকে এখন দিন কাটাতে হচ্ছে।একজন হিন্দু সন্ন্যাসীর গ্রেপ্তারের ঘটনায় শুধু বাংলাদেশের হিন্দুরাই নয়, ভারত সহ গোটা বিশ্বের হিন্দুরা প্রতিবাদে সরব হয়েছে।ঘটনা নিয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।পশ্চিমবাংলাতেও শুরু হয়েছে প্রতিবাদ।। বঙ্গ বিজেপির নেতারা বুধবার কলকাতায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে গিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছে।ইসকনের সন্ন্যাসীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার কলকাতার রাজপথে নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছে বঙ্গের হিন্দু সমাজ।
এমন আবহের মধ্যেই বৃহস্পতিবার মন্তেশ্বরের দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে পড়শি বাংলাদেশে হয়ে চলা ঘটনা ক্রম নিয়ে গর্জে উঠলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ’বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের অবদান অবদান রয়েছে।বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সেখানকার হিন্দুরাও জীবন বলিদান দিয়েছে।তবুও কিছু মৌলবাদী বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর বারে বারে অত্যাচার করছে। হিন্দুদের জমি জায়গা দখল করে নিচ্ছে। বাংলাদেশে হাসিনার সরকার যখন ছিল তখন তিনি হিন্দুদের প্রটেকশন দিয়েছেন। তাই তাঁকে সরানো হয়েছে। তারপর থেকে ভারত বিরোধী একটা মৌলবাদী শক্তি বাংলাদেশের সক্রিয় হয়েছে।। এখন বাংলাদেশের সরকার বলে কিছু নেই। তাই বাংলাদেশে এখন মাৎসন্যায় চলছে। দুর্বল হিন্দুদের উপর অত্যাচার চলছে। হিন্দু সন্ন্যাসী কে গ্রেফতার করা হয়েছে। সারা বিশ্ব এই ঘটনা দেখেছে।
বাংলাদেশে চলা এমন ঘটনা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে এরপরেই দিলীপ ঘোষ বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আফগানিস্তানের মতোই হবে।আফগানিস্তানেও সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার করা হয়েছিল। তার কারণে সেখানকার সংখ্যালঘুদের দেশ ছেড়ে পালাতে হয়। এমন ঘটনা বাংলাদেশে যাঁরা ঘটাচ্ছে তাঁরও বাংলাদেশের সর্বনাশই করেদেবে।যে দেশে উগ্রপন্থীরা পার্লামেন্ট হাউস লুট করে, প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি লুট করে, তাদের সামলাবে কে? তাঁরাই তো এখন বাংলাদেশের সরকার চালাচ্ছে। ৮৪ বছরের বয়স্ক একজন আছেন। উনি তো কিছুই দেখতে শুনতে পান না। কার উপদেষ্টা উনি,সেটাও তো বোঝা যাচ্ছে না। তার কারণেই তো বাংলাদেশে এমন ঘটনা ঘটছে।শুধু হিন্দুরাই নয়,অন্যরাও ওখানে অত্যাচারিত হচ্ছে। কিছু দুষ্কৃতী বাংলাদেশে খুন জখম করে বেড়াচ্ছে।ওখানকার মানুষ যাতে শান্তিতে থাকতে পারে সেটা সারা দুনিয়ার দেখা উচিৎ। পড়শি দেশে শান্তি থাকুক এটা আমরা চাই। তবে বেশি বাড়াবাড়ি করলে আমাদেরও তো কিছু করতে হবে। আমাদের খাবে দাবে আবার হিন্দুদের উপর অত্যাচার করবে, তারপরেও আমরা তো চুপ করে থাকতে পারি না।ভোটের জন্য তৃণমূল চুপ করে থাকলেও বাংলাদেশের সকল হিন্দুরা এখন ভারতের দিকেই তাকিয়ে আছে বলে, দিলীপ ঘোষ মন্তব্য করেছেন।।