বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছিলেন যে, তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই ক্ষমতাচ্যুত করেছে, কারণ তিনি বঙ্গোপসাগরে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ যুক্তরাষ্ট্রকে দিতে রাজি হননি। এই অভিযোগের সাফাই দিয়েছে আমেরিকাও । হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন-পিয়ের সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সরকার এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল- এমন যেকোনো খবর সম্পূর্ণ ভুল। এটা সত্য নয়। এটি বাংলাদেশের জনগণের একটি পছন্দ এবং তাদেরই করা উচিত। আমরা বিশ্বাস করি যে, বাংলাদেশের জনগণকেই বাংলাদেশ সরকারের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে হবে এবং আমাদের অবস্থান সেটাই।’ কিন্তু আমেরিকা যতই দাবি করুক না কারন বাংলাদেশের সরকারকে উৎখাতের পিছনে যে তাদেরই হাত ছিল সেটা দিনের আলোর মত স্পষ্ট । এটা স্পষ্ট যে এই সব চীন করেনি এবং ভারতকে প্রভাবিত করার জন্যও করা হয়নি ।
এদিকে বাংলাদেশের এই টালমাটাল অবস্থার মধ্যে ভারতেও একটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা প্রত্যক্ষ করা গেল । সেটা হল, ওয়াফ বোর্ড সংশোধিত আইন পেশ হয়েছে সংসদে এবং এনডিএ সংহতি দেখিয়েছে, অথচ দেশের কোথাও কোনো দাঙ্গা হয়নি। একবার ভাবুন তো, ২০০৭ সালে যদি এমন একটি বিল আনা হতো, তাহলে কি এত শান্তি থাকত দেশে ? অবশ্যই থাকত না ।
এবারে আসা যাক বাংলাদেশের ক্ষমতার পরিবর্তনের কথায় । শেখ হাসিনাকে গদিচ্যুত করার ষড়যন্ত্রের উদ্দেশ্য খুঁজতে গিয়ে প্রথমেই যে দেশের নাম সামনে আসে সেটা হল…মিয়ানমার । আসলে মিয়ানমার ২০২১ সাল থেকে সামরিক শাসনে রয়েছে, আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল এবং মিয়ানমার তখন থেকেই চীনের ওপর নির্ভরশীল।
এদিকে শেখ হাসিনাও বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়াচ্ছিলেন। এই বাজেটে চীন লাভবান হচ্ছিল, বাংলাদেশ চীন থেকে ঋণ নিতে শুরু করেছিল।
আমেরিকার সমস্যা এখান থেকেই শুরু হয় । কারন আমেরিকা যদি ভবিষ্যতে চীনের সাথে যুদ্ধ করতে চায় তাহলে মালাক্কার রাস্তার আশেপাশে তার সেনাবাহিনী দরকার। মালাক্কায় চীনকে থামানোর জন্য দুটি দ্বীপই যথেষ্ট….একটি আন্দামান নিকোবর এবং অন্যটি সেন্ট মার্টিন।
আন্দামান নিকোবর ভারতের সাথে এবং আমেরিকার চুক্তি রয়েছে। সেন্ট মার্টিন বাংলাদেশে এবং মায়ানমারের খুব কাছাকাছি থাকাকালীন, এই দ্বীপটিকে বিশেষ করে তোলে।সেজন্যই আমেরিকা প্রথমে শেখ হাসিনাকে ভালোবেসে বুঝিয়েছিল, যখন সে বুঝতে পারেনি, তখন তার গণতন্ত্রের অস্ত্র বের করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে, শেষ পর্যন্ত একটা আন্দোলন হয়েছে এবং সবকিছু পাল্টে গেছে । দেশ ছাড়া হয়েছেন শেখ হাসিনা ।
এখন প্রো আমেরিকান ইউনূস বাংলাদেশে বসে আছে, এখন পরবর্তী টার্গেট হবে মায়ানমার, সেই দিন বেশি দূরে নয় যেদিন বাংলাদেশ ও মায়ানমারের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হবে এবং আমেরিকান বাহিনী কোন না কোন অজুহাতে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ঘাঁটি গেড়ে বসে থাকবে।
বাকি ভারত নিয়ে চিন্তা করবেন না, এটা সত্য যে সালমান খুরশিদ এবং মণিশঙ্কর আইয়ারের মতো কংগ্রেস নেতারা মিডিয়ার সামনে পাকিস্তানের কাছে সাহায্য চেয়েছেন মোদীকে সরানোর জন্য । রাহুল গান্ধী লন্ডনে গিয়ে গোপন আলোচনাও করেন ভারত বিরোধী বিএনপি নেতার সঙ্গে । কিন্তু এটাও সত্য যে বিজেপিকে প্রো আমেরিকান পার্টিও বলা হয়। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কিছু করা আমেরিকার স্বার্থে নয়, উল্টো আমেরিকার কংগ্রেসকে ভয় পাওয়া উচিত, কারণ তারা কিছুদিন ধরে চীনপন্থী হয়ে উঠেছে।
তাই চিন্তা করবেন না, ভারত যথারীতি চলবে, এই পুরো সার্কাস হচ্ছে মিয়ানমারের জন্য। একমাত্র দুঃখের বিষয় এই যে এই সমস্ত স্থানগুলি একসময় অখণ্ড ভারতের অংশ ছিল । কিন্তু আজ হাতছাড়া হয়ে বিদেশী শক্তির ঘাঁটি হতে চলেছে ।
তবে ঈশ্বর মঙ্গলময় । তিনি যা করেন তা ভালোর জন্যই করেন । ভারতে প্রায় ৫০০ বছরের মুঘল শাসন উৎখাত করতে এসেছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি । দুই শতাব্দীর ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারত নিজেকে মুক্ত করেছিল ঠিকই,কিন্তু জাতপাতের বিভাজনের রাজনীতি করে এতদিন কংগ্রেস ক্ষমতায় টিকে হিন্দুদেরই সর্বনাশ করে যাচ্ছিল । তারপর এল বিজেপি সরকার । আর তাতে দেশের আর্থিক উন্নয়নের পাশাপাশি ভারতের হিন্দু সম্প্রদায়ের যেটা উপকার হয়েছে তা হল ক্রমশ জাতপাতের ভেদাভেদ কাটিয়ে অনেকাংশে আজ একজোট হয়েছে হিন্দুরা । বাংলাদেশের ক্ষমতা পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও ইতিবাচক কারণ যদি লক্ষ্য করা হয় তা হল অখন্ড ভারত নির্মানের স্বপ্ন । হতে পারে যে সুদূর ভবিষ্যতে অখণ্ড ভারতের সম্ভাবনাকে শক্তিশালী করবে।।