এইদিন আন্তর্জাতিক ডেস্ক,০৩ অক্টোবর : তেহরিক -ই-তালেবান পাকিস্থান (টিটিপি)-এর হয়ে “যুদ্ধ” করতে গিয়ে লাশ হয়ে গেলো বাংলাদেশি সন্ত্রাসী ফয়সাল মোড়ল (২২)। বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের ছোট দুধখালী গ্রামের আব্দুল আউয়াল মোড়লের ছেলে ওই যুবক । দুবাই যাওয়ার কথা বলে দেশ ছাড়লেও শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানে গিয়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন তেহরিক -ই-তালেবান পাকিস্থান (টিটিপি)-এ যোগ দেয় । গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার কারাক জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ১৭ জন টিটিপি সদস্য নিহত হয়। এদের মধ্যে ছিলে বাংলাদেশি যুবক ফয়সালও। পাকিস্তানি গণমাধ্যমে নিহতদের ছবি প্রকাশের পর ফয়সালের পরিবার তাকে শনাক্ত করে ।
ফয়সাল মোড়লের বাবা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ইলেকট্রিশিয়ান,দাদা আরমান হোসেন কাজ করেন দারাজের ডেলিভারিম্যান হিসেবে। মা চায়না বেগম গৃহবধূ । কট্টর ইসলামি মতাদর্শে বিশ্বাসী গোটা পরিবার ৷ পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত মার্চে হিজামা সেন্টারে চাকরির কথা বলে দুবাই যাওয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ে ফয়সাল। তবে পরে সে পাকিস্তানে পৌঁছে টিটিপিতে যোগ দেয়৷ পরিবারের সঙ্গে তার সর্বশেষ কথা হয় গত ঈদের আগে। এরপর আর কোনো যোগাযোগ ছিল না। এরপর গত ২৬ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানি মিডিয়া আউটলেটে তার ছবি দেখে পরিবার জানতে পারে যে ফয়সাল পাকিস্তানি সেনার গুলিতে মারা গেছে৷ ফয়সালের মা চায়না বেগম বলেন,’আমার ছেলেকে যারা মেরেছে, তাদের বিচার চাই। আর আমি চাই, আমার ছেলের মৃতদেহ সরকার যেন দেশে ফিরিয়ে আনে।’
পরিবারের দাবি, প্রলোভন দেখিয়ে ফয়সালকে জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত করা হয়েছিল। তারা ফয়সালের দেহ দেশে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি যারা এই ঘটনায় জড়িত তাদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন। ফয়সালের কাকা আব্দুল হালিম মোড়ল বলেন,’ভাইপোর বিষয়ে জানতে পারি গত ঈদুল আজহার সময়। গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, সে আফগানস্থান আছে। ২০২৪ সালের মার্চে দেশ ছাড়ার প্রায় ৬ মাস পরে সে তার দাদা আরমান মোড়লের কাছে মোবাইল ফোনে কল করে বলে, দুবাই আছে এবং ভালো আছে। তবে বিস্তারিত জানতে চাইলে জবাব দিত না সে।’
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন,’পরিবার চাইলে নিহতের মৃতদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আমরা সহযোগিতা করব। একই সঙ্গে কেউ যাতে এমন নিষিদ্ধ সংগঠনে আর যুক্ত হতে না পারে সে বিষয়ে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।’।