এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,০৪ জুলাই : কথিত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংগঠকের দায়িত্ব পালন করা সোহাগী দাসের সঙ্গে পরিচয় হয় বাংলাদেশের যশোরের কেশবপুরের আব্দুর রহিমের । ক্রমে দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে । প্রেমিককে শরীর-মন উজার করে দেয় সোহাগী । কিন্তু বাবা-মাকে বিয়ের কথা বলতেই ছেলে মুসলিম হওয়ার কারনে তারা বেঁকে বসে । কিন্তু বাবা-মায়ের শত নিষেধ অমান্য করে ধর্মান্তরিত হয়ে প্রেমিককে নিকাহ করে ওই তরুনী । নওমুসলিম হওয়া ওই তরুনীর নামকরণ করা হয় আয়েশা খাতুন । তারপরেও তাকে ফেরানোর চেষ্টা করেছিল পরিবার । কিন্তু স্বামী আব্দুর রহিম আদালতের দ্বারস্থ হলে পরিবার শমন পাওয়ার পর তরুনীকে দূর দূর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় । আজ শুক্রবার কালো বোরখা পরে যশোর নোটারি পাবলিক কার্যালয় থেকে সোজা শ্বশুরবাড়ি চলে যায় ওই তরুনী । বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আব্দুর রহিমের আইনজীবী রুহিন বালুজ ।
জানা গেছে, কেশবপুর উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের আব্দুর রহিমের সঙ্গে দুই বছর আগে পরিচয় হয় কেশবপুরের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংগঠক সোহাগী দাসের। ক্রমে প্রেম থেকে শারিরীক সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাদের ৷ সোহাগী দাস গত ২৩ জুন হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। সোহাগী দাস থেকে হয়ে যান আয়শা খাতুন। তিনি নোটারি পাবালিকের মাধ্যমে অ্যাফিডেভিট করে আব্দুর রহিমকে বিয়ে করেন। পরের দিন ২৪ জুন বিকেলে আব্দুর রহিম তার স্ত্রীকে সাথে নিয়ে মণিরামপুর উপজেলার কুয়াদা বাজারে যায় কেনাকাটা করতে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে আয়েশা ওরফে সোহাগীকে তার বাপের বাড়ির লোকজন কুয়াদা বাজার থেকে জোর করে ধরে নিয়ে যান । রহিমকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে আয়শা খাতুন । পরের দিন সে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে । পরিবারের লোকজন বুঝতে পেরে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসার পর সুস্থ হলে বাবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে একপ্রকার বন্দি করে রাখা হয়।
এদিকে স্ত্রী আয়েশা খাতুন ওরফে সোহাগীকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে ২৯ জুন আব্দুর রহিম আদালতে একটি মামলা করে । বিচারক অভিযোগ গ্রহণ করে আয়শা ওরফে সোহাগী বাবা পরিমল দাস ও তার মাকে আদেশ দেন মেয়েকে আদালতে হাজির করার জন্য । এছাড়া মানবাধিকার সংগঠনও নোটিশ পাঠায়। মেয়েও রহিমের কাছে ফিরতে পাগলপ্রায় ।
নানামুখি চাপে বাবা-মা বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) আয়শা ওরফে সোহাগীকে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে রহিমের সাথে যোগাযোগ করে আয়শা যশোর নোটারি পাবলিক কার্যালয়ে চলে আসে । এসময় তরুনী এভিডেভিডের মাধ্যমে ঘোষণা করেন যে তিনি আব্দুর রহিমকে ভালোবেসে নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করেছেন। বাকিটা জীবন তার সঙ্গে ঘর-সংসার করতে চান। এরপর তিনি রহিমের হাত ধরে তার বাড়িতে চলে যান । এদিকে পরিমল দাস ও তার স্ত্রী সতর্ক করে দিয়েছেন যে কোনো অবস্থাতেই নওমুসলিম আয়েশা খাতুন যেন তাদের মুখোমুখি না হয় ।।

