এইদিন ওয়েবডেস্ক,২৬ জানুয়ারী : আজ ২৬ জানুয়ারী, প্রজাতন্ত্র দিবস । বিভিন্ন দেশের ভারতীয় হাইকমিশনারের অফিসে আগের দিন অর্থাৎ ২৫ জানুয়ারী শনিবার, প্রজাতন্ত্র দিবস সরকারিভাবে উদযাপন করা হয় । বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনারের অফিসেও পালিত হয়েছিল এই দিনটি । অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বাংলাদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের । কিন্তু ওই তালিকায় বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সম্পাদক তথা আইনজীবী গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিকের নাম থাকায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে । তাকে আমন্ত্রণ জানানোয় নরেন্দ্র মোদী সরকারের মানসিকতা ও উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বাংলাদেশের হিন্দুরা। কারন ভারত বিদ্বেষী কট্টর ইসলামি দল বাংলাদেশ ন্যাশনাল পার্টির(বিএনপি) এজেন্ট বলে পরিচিত গোবিন্দ জন্মসূত্রে একজন হিন্দু হয়েও বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের ঘটনাকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করেন বারবার। একারণে তাকে বাংলাদেশি হিন্দুরা ‘মিরজাফর’ হিসাবে চিত্রিত করে ।
ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা ও মিসেস মনু ভার্মার পক্ষ থেকে গোবিন্দ প্রামাণিককে পাঠানো আমন্ত্রণে ২৫ জানুয়ারী শনিবার, বিকেল ৬:৩০ এ ঢাকার রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ।
বাংলাদেশ হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সুজান চন্দ্র রায় সংগঠনের ফেসবুক পেজে লিখেছেন,ভারত কি আদপেই বাংলাদেশি সনাতনীদের ৮ দফার বাস্তবায়ন চায় ? আজকে ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস। ভারতীয় হাইকমিশন এর পক্ষ থেকে ঢাকায় আয়োজন করা হয়।আর আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকে গোবিন্দ প্রামাণিক। যেখানে উপস্থিত থাকার কথা সম্মিলিত জোটের মূল প্রতিনিধিদের কিন্তু সেটা না হয়ে যিনি ৮দফার বিরুদ্ধে তিনি কীভাবে আমন্ত্রণ পায়। আমাকে একটু হিসেব টা বুঝাবেন।’
ভয়েস অফ বাংলাদেশি হিন্দাস এক্স-এ লিখেছে,’হিন্দু-ফোবিক বিএনপির পেইড এজেন্ট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিককে ভারত আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তিনি নিয়মিত ভারতকে অপমান করেন এবং দাবি করেন যে হিন্দুদের উপর আক্রমণ ভারত দ্বারা মঞ্চস্থ হয়। বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলা যত বাড়ল, ভারত থেকে চাল রপ্তানি তত বাড়ল। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানির মাধ্যমে ভারত সরকারের অর্জিত অর্থ হিন্দু রক্তের দাগ বহন করে।’
বাংলাদেশের জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোটের নিলয় পল লিখেছেন,’দাদা আপনি বাংলাদেশের পক্ষ নিয়ে বাকযুদ্ধ চালিয়ে যান পৃথিবীর বিভিন্ন বৃহৎ রাষ্ট্রের সাথে। যার জন্য অনেকেই আপনার বিরোধীতা করে। আজ পৃথিবীর বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে আপনার উপস্থিতে দেখে আমরা চিন্তিত। বাংলাদেশের ঐ হিন্দুরা নাকি ইন্ডিয়ান এম্বাসী? বোকা টা কে?
ভারতীয় হাইকমিশন কর্তৃক আয়োজিত ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মাননীয় মহাসচিব অ্যাডঃ গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিক দাদা ।’
এর আগে গোবিন্দ প্রামাণিক বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের হিন্দুরা ভারতের থেকেও নিরাপদ ।’ এছাড়া, বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু মুসলিমদের দ্বারা হিন্দু নির্যাতনকে লঘু করে দেখানোর উদ্দেশ্যে ‘ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের অপপ্রচার’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন গোবিন্দ । একারণে তার উপর চরম ক্ষুব্ধ বাংলাদেশের হিন্দুরা । গোবিন্দ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে ক্ষমতা কুক্ষিগত করা, একক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া, স্বাধীনতা বিরোধী মত পোষণ,ইসলামি উগ্রপন্থী শক্তির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা এবং আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয় ।।