এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,৩১ আগস্ট : জিহাদিরা মন্দিরে ঢুকে মূর্তি ভাঙচুর, লুটপাট চলিয়েও পার পেয়ে যাচ্ছে । অথচ মন্দিরের সামনে মসজিদ কর্তৃপক্ষের লাগানো দানবাক্স লাগানোর প্রতিবাদে ফেসবুকে পোস্ট করায় এক হিন্দু যুবককে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশের পুলিশ । ধৃত যুবকের নাম ঝুমন দাস । মঙ্গলবার সকালে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁওয়ের তাঁর বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে শাল্লা থানার পুলিশ ।
জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুলে নবরত্ন মন্দিরের গেটের সামনে একটি বড়সড় কাঠের দানবাক্স টাঙিয়ে দিয়েছে হাটিকুমরুলের নবরত্নপাড়া জামে মসজিদ কর্তৃপক্ষ । বাক্সের উপরে লেখা হয়েছে, “বিসমিল্লাহ দানবাক্স”,মুক্ত হস্তে দান করুন”, ” নামাজ পড়ুন” । একটি প্রাচীন মন্দিরের সামনে এই প্রকার উসকানিমূলক(নামাজ পড়ুন) লেখা থাকলেও এযাবৎ স্থানীয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ । হিন্দুরাও ওই দানবাক্স সরানোর সাহস দেখায়নি এতদিন । কিন্তু সম্প্রতি নোয়াগাঁওয়ের বাসিন্দা ঝুমন দাস এর প্রতিবাদে সরব হন ।
গত রবিবার (২৮ আগস্ট ২০২২) তিনি এর প্রতিবাদে তিনি ফেসবুকে লেখেন,”অসভ্যতা ও বর্বরতার এইটা একটা নজির । সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুলে ১৪ শতকের প্রাচীন নবরত্ন মন্দিরের গেটে মসজিদের এই দানবক্স দেখে মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো ।
কোনো মসজিদের প্রধান গেটে কোন মন্দিরের দান বক্স লাগানোর কল্পনাও কেউ করতে পারবে না। করলে ধর্ম অবমাননার মামলা খেয়ে কারাগারে থাকতে হবে অনেক দিন। তা হলে এটা লাগানোর সাহস এরা কি ভাবে করে !! ঐ মন্দিরের আশেপাশের হিন্দুদের এটা অপসারণ করার বিন্দু মাত্র সাহস বা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করার ক্ষমতা নেই বলেও আশ্চর্য হয়েছি ! মন্দিরের গেটে মসজিদের দানবক্স ও ইসলামী বয়ান লাগানো স্রেফ গুন্ডামী, সংখ্যাগুরুর ইতরামি ।”
যদিও বিতর্কের সৃষ্টি হতে পারে এই আশঙ্কায় তিনি পরে ওই পোস্টটি ডিলিটও করে দেন । কিন্তু তা সত্ত্বেও মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ঝুমন দাসকে তাঁর বাড়ি থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে আসে পুলিশবাহিনী । ফেসবুকে ধর্ম অবমাননাকর পোস্ট করার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয় । আজ বুধবার তাঁকে আদালতে তোলা হবে । ঝুমনের স্ত্রী সুইটিদেবীর দাবি, ধর্ম অবমাননাকর কোনো পোস্টই করেননি তাঁর স্বামী । বরং তাকে ফের হয়রানি করতেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ ।
প্রসঙ্গত,গত বছরেও গ্রেফতার করা হয়েছিল ঝুমন দাসকে । তখন বাংলাদেশের ইসলামি নেতা মামুনুল হককে নিয়ে তিনি ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন । আর সেই অপরাধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা রজু করে তাঁকে গত বছরের ১৬ মার্চ গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়েছিল পুলিশ । ৬ মাস জেলে থাকার পর ২৮ সেপ্টেম্বর শর্তসাপেক্ষে তিনি জামিনে মুক্ত হন । তবে তার আগে স্থানীয় কট্টরপন্থী মুসলিমরা অস্ত্রসস্ত্র, লাঠিসোঁটা নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামে চড়াও হয়ে হিন্দুদের প্রায় ৯০ টি বাড়ি, ৪টি মন্দিরে ভাঙচুর চালায় এবং লুটপাট করে বলে অভিযোগ ।।
তথ্যসূত্র ও ছবি : সোজাসাপটা নিউজ ও অন্বেষণ নিউজ ।