এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,২৯ এপ্রিল : প্রখ্যাত দার্শনিক তথা সমাজ সংস্কারক লালন ফকিরের গান হিন্দু এবং মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় । আজও ‘লালন গীতি’ মুখে মুখে ফেরে বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় । সেই লালন ফকিরের একটি গানের লিরিক্সের একাংশ নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করে মৌলবাদীদের রোষানলে করেছেন বাংলাদেশের এক হিন্দু যুবক । তার বিরুদ্ধে উঠেছে ধর্মনিন্দার অভিযোগ । ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার ইউনিয়ন এলাকায় । পুলিশ হতভাগ্য যুবক সঞ্জয় রক্ষিত (৪০)কে গ্রেফতার করেছে । কেউ কেউ মন্তব্য করছেন কট্টরপন্থায় পাকিস্তানকে টেক্কা দিতে শুরু করেছে বাংলাদেশের মুসলিমরা ।
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার ইউনিয়নের হরি নারায়ণ রক্ষিতের ছেলে সঞ্জয়। পেশায় স্বর্ণকার সঞ্জয় রক্ষিত লালনগীতির ভক্ত । শনিবার নিজের ফেসবুক স্টোরিতে লালন ফকিরের একটি প্রখ্যাত গান, ‘সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে’ -এর লিরিকের একাংশ পোস্ট করেছিলেন । গানের তৃতীয় স্তবকে লেখা লাইনের “সুন্নৎ দিলে হয় মুসলমান /নারীর তবে কি হয় বিধান” অংশটি পোস্ট করেছিলেন সঞ্জয় । আর এতেই চরম ক্ষিপ্ত হয় স্থানীয় মৌলবাদীরা । তারা ধর্মনিন্দার অভিযোগ তুলে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে থানায় মৌখিকভাবে অভিযোগ জানায় । অভিযোগ পেতেই তেই কালবিলম্ব না করে ভেদরগঞ্জ থানার পুলিশ সঞ্জয় রক্ষিতকে গ্রেফতার করে । রবিবার তাকে আদালতের তোলা হলে শরীয়তপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয় ।
ঘটনার প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের সংবাদপত্র ডেইলি স্টারে । ওই সংবাদপত্রের তরফে ভেদরগঞ্জ থানার ওসি মিন্টু মন্ডলের কাছে অভিযোগকারীদের নাম জানতে চাওয়া হলে তিনি বলতে অস্বীকার করেন । এমনকি ভেদরগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমানকে ডেইলি স্টারের তরফে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। কোনো কিছু জানার থাকলে থানায় গিয়ে দেখা করুন ।’
প্রসঙ্গত ধর্মনিন্দার অভিযোগে পাকিস্তান ও বাংলাদেশে ইতিমধ্যেই বহু হিন্দু, খ্রিস্টান জেলে গেছে । এমনকি পাকিস্তানে ধর্মনিন্দার অভিযোগে একজন শ্রীলংকার নাগরিকদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে । এদিকে হিন্দু বা খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অল্প বয়সী বা বিবাহিত মেয়েদের অপহরণের পর ধর্মান্তরিত করে জোর করে নিকাহ করতে বাধ্য করা হলে পাকিস্তানের পুলিশ ও আদালত অপহরণকারীর পক্ষেই পদক্ষেপ নেয় বলে অভিযোগ ওঠে । ইসলামী রাষ্ট্রের সংখ্যালঘুদের জীবন কার্যতার নরকে পরিণত করে দিয়েছে সংখ্যাগুরু মুসলিমরা ।।