এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,১৮ আগস্ট : ধর্ম অবমাননার নামে মিথ্যা মামলায় কিভাবে বাংলাদেশের হিন্দুদের ফাঁসানো হচ্ছে তা ফের একবার প্রমানিত হল । বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বিনোদনপুর রাম কুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ১৯ দিন জেলে কাটাতে হয়েছিল । এই অভিযোগটি যে আদপে মিথ্যা অভিযোগ ছিল তা মঙ্গলবার মুন্সীগঞ্জ আমলি আদালত-১-এর বিচারক জশিতা ইসলাম স্বীকার করে নিয়েছেন । তিনি এই মামলা থেকে হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে অব্যাহতি দিয়েছেন । রায় ঘোষণার পর শিক্ষকের আইনজীবী শাহীন মোহাম্মদ আমানউল্লাহ বলেন,’গত ৮ আগস্ট পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয় । প্রতিবেদনে হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে ।’
চলতি বছরে বাংলাদেশে একের পর এক হিন্দু শিক্ষককে খুন ও নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে । তাঁদের মধ্যে অন্যতম মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বিনোদনপুর রাম কুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল । গত ২০ মার্চ দশম শ্রেণির ক্লাস নেওয়ার সময় এক মুসলিম ছাত্র উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে হৃদয়বাবুকে ধর্মীয় বিষয়ে প্রশ্ন করে । সে গোপনে নিজের মোবাইল ক্যামেরায় হৃদয়বাবুর বক্তব্য ভিডিও রেকর্ড করে রাখে । তারপর সেটি এডিটিং করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দেয় । কট্টরপন্থী মুসলিমরা সেই ভিডিও দেখে স্কুলে এসে বিক্ষোভ দেখায় । হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে গ্রেফতারির পাশাপাশি চাকরি থেকে বরখাস্তের দাবি জানায় ।
আদালত সুত্রে জানা গেছে,এরপর ২২ মার্চ মোহম্মদ আসাদ নামে বিদ্যালয়ের অফিসের এক সহকারী ধর্ম অবমাননার অভিযোগে হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে একটি মামলা রজু করে । ওই দিনই হৃদয় মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯ দিন জেলে থাকার পর ১০ এপ্রিল তিনি জামিনে মুক্তি পান । অবশেষে মঙ্গলবার আদালতে প্রমাণিত হল হৃদয়বাবুর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি সম্পূর্ন মিথ্যা । তাঁকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যেই ষড়যন্ত্র করেছিল মোহম্মদ আসাদসহ স্থানীয় কিছু কট্টরপন্থী মুসলমান । মিথ্যা অভিযোগ তুলে এক সম্মানীয় শিক্ষককে হেনস্থা ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির জন্য এখন অভিযোগকারী ব্যক্তি ও তার সঙ্গীসাথীদের বিরুদ্ধে আদপেই কি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ।।