এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,২৫ জুলাই : মাত্র ৩,০০০ টাকার জন্য এক হিন্দু স্বর্ণশিল্পিকে পিটিয়েছিল এক মুসলিম বস্ত্র ব্যবসায়ী । সেই অপমানে আত্মঘাতী হন ওই স্বর্ণশিল্পী । বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁওয়ে ঘটনা । অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে অভিযুক্ত বস্ত্র ব্যবসায়ী আব্দুর রহমানের দোকানের সামনে ললিত বনিক (৪০) নামে স্বর্ণশিল্পির দেহ ফেলে রেখে অবস্থান নিয়েছে পরিবার। মৃত ব্যক্তি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের বনিকপাড়া গ্রামের মংলু বনিকের ছেলে। বৃহস্পতিবার(২৪ জুলাই) বিকাল ৫টার পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রানীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ বাজারে আব্দুর রহমানের রেখা ক্লথ স্টোরের সামনে মৃতদেহ নিয়ে অবস্থান নিতে দেখা যায় নিহতের পরিবারকে । এদিকে ঘাতকের স্ত্রী সেলিনা আক্তার বলেছে : ‘এটা ওদের (হিন্দুদের) স্বভাব হয়ে গেছে, মামলা করবে করুক, কোন পরোয়া করি না’ ।
মৃতের ছেলে শুভ বনিক জানান, নেকমরদ বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুর রহমানের কাছ থেকে ধার বাকিতে কাপড় কিনেছিল তার বাবা। ৩ হাজার টাকা বকেয়া ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে বকেয়া টাকার জন্য বাবাকে টেনে হিচড়ে দোকানে নিয়ে মারধর করে। এরপরে বাবা অপমান সইতে না পেরে গ্যাস ট্যাবলেট খান । শুভ বনিক আরও জানান, প্রথমে রানীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং দিনাজপুর মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার পথে রাস্তায় মারা যান তার বাবা । এরপরে মৃতদেহ নিয়ে দোকানের সামনে অবস্থান নিয়েছি আমরা ।
সুজন বনিকের দোকানে কর্মচারী ছিলেন ললিত বনিক। তিনি জানান, ছেলে ও পুরো বাজারের লোকজনের সামনে মারধর ও অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। যখন আমাদের কাছে ক্ষমা চাইতে শুরু করে, তখন বুঝতে পারি সে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়েছে। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানিয়েছেন ললিতের আত্মীয় স্বজনরা ও বাজারের লোকজন। মাত্র ৩ হাজার টাকার জন্য এভাবে অপমান ও মারধর ঠিক হয়নি, বলছেন তারা ।
এদিকে হিন্দু স্বর্ণশিল্পীর মৃত্যুর পর দোকান বন্ধ করে পালিয়েছে কাপড় দোকান মালিক আব্দুর রহমান। তার বাড়িতে গেলে পাওয়া যায়নি। তবে কাপড় দোকানদার আব্দুর রহমানের স্ত্রী সেলিনা আক্তার জানান, ‘টাকা পাইলেতো চাইবেই। এটা ওদের(হিন্দুদের) স্বভাব হয়ে গেছে। মামলা করবে করুক, কোন পরোয়া করি না।’ তার স্বামী কাজে বাহরে আছে বলে জানান ওই মহিলা । রানীশংকৈল থানার ওসি আরশেদুল হক জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ গেছে। স্বজনরা অভিযোগ জমা দিলে মামলা হবে।।

