এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,০৪ এপ্রিল : কপালে টিপ পড়ার অপরাধে লতা সমাদ্দার নামে এক শিক্ষিকাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেছিল বাংলাদেশের এক পুলিশ আধিকারিক । প্রতিবাদ করলে শিক্ষিকার গায়ের উপরে সে বাইক তুলে দেয় । সাধারণত বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপরে নির্যাতন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে সেভাবে মুখ খুলতে দেখা না গেলেও ওই শিক্ষিকার উপর পুলিশকর্মীর এহেন ঘৃণ্য আচরণের প্রতিবাদে সরব হতে দেখা গেল সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সুবর্ণা মুস্তাফাকে । তিনি এনিয়ে রবিবার সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন,’বাংলাদেশের কোন সংবিধানে, কোন আইনে লেখা আছে যে একজন মহিলা টিপ পরতে পারবেন না ? এখানে হিন্দু-মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ এমনকি সে বিবাহিত না বিধবা সেটা বিষয় নয় । একটি মেয়ে টিপ পরেছে । তিনি একজন শিক্ষক। তাঁকে রিকশা থেকে নামানোর পর দায়িত্বরত পুলিশ অফিসার ইভটিজ করেছে ।’ সুবর্ণা আরও বলেন, ‘যখন দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাউকে ইভ টিজিংয়ের ভূমিকায় দেখি, তখন সেটা আমাদের সবার জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক ।’
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে শিক্ষকতা করেন লতা সমাদ্দার নামে ওই মহিলা । ঘটনাটি ঘটে শনিবার সকালে ঢাকার ফার্মগেটে সেজান পয়েন্ট বিল্ডিংয়ের সামনে । কপালে টিপ পড়ার অপরাধে পুলিশের পোশাকে মোটরবাইকের ওপর বসে থাকা মধ্যবয়সী, লম্বা দাড়িওয়ালা এক ব্যক্তি তাঁকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে । প্রতিবাদ করায় ওই পুলিশকর্মী মোটর সাইকেলটি তাঁর গায়ে তুলে দেওয়ারও চেষ্টা করে । পরে ওই শিক্ষিকা ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় এনিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ।
এনিয়ে সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করে সুবর্ণা মুস্তাফা বলেন, ‘সাধারণ বখাটে ছেলেরা স্কুলের বাচ্চা-বাচ্চা মেয়েদের ইভটিজ করে বলে শুনেছি । যদিও সেই পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু যখন দেশের আইনরক্ষাকারী কাউকে ইভ টিজারের ভূমিকায় দেখি তখন সেটা আমাদের সবার জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক ।’ তিনি বলেন, প্রতিবাদ করলে ওই পুলিশ কর্মী শিক্ষিকাকে তুই-তোকারি পর্যন্ত করেছে । অসম্মান করা হয়েছে । আমি সরকারি দলকে রিপ্রেজেন্ট করি না বিরোধী দলকে রিপ্রেজেন্ট করি- বিষয়টা এগুলোর ঊর্ধ্বে ।’ তিনি অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ।
প্রসঙ্গত,প্রকাশ্যে রাস্তা দিয়ে টিপ বা শাঁখা,সিঁদুর পরে যাওয়া বন্ধ করতে সম্প্রতি সরব হতে দেখা গিয়েছিল বাংলাদেশের কট্টরপন্থী বেশ কিছু মানুষকে । কিন্তু পুলিশ বিভাগেই যেখানে মৌলবাদী মানসিকতা ঢুকে পড়েছে সেখানে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা কতটা সুরক্ষিত থাকবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ।।