এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,১১ ডিসেম্বর : শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে অপসারণের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হওয়া মোহাম্মদ ইউনুস বলেছেন যে ভারতের সাথে তাদের সম্পর্ক দৃঢ় এবং খুব ঘনিষ্ঠ। ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্রির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ইউনূস এ কথা বলেন। তবে সেখানে সংখ্যালঘু হিন্দুদের গণহত্যা অব্যাহত রয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকার ভারতের শত্রু পাকিস্তানের সাথে ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে এবং অস্ত্র কিনছে।
একদিকে বাংলাদেশ প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা বলছে, অন্যদিকে পাকিস্তানের সহায়তায় ভারতে সন্ত্রাস ছড়ানোর পরিকল্পনা করছে। বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের পর হিন্দুদের ওপর ক্রমাগত হামলা তার উদাহরণ। আমেরিকায় বসবাসকারী পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ী এবং পাকিস্তান বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সাজিদ তারার ভারতকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
সাজিদ তারার বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তের কাছে ‘আল-জিহাদ… আল-জিহাদ’ স্লোগান উঠছে। এটা ভারতের জন্য খুবই উদ্বেগের বিষয়। তিনি জানান, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মোহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানকে শুধু ২৫,০০০ টন চিনিই দেননি, পাশাপাশি প্রচুর পরিমানে অস্ত্রের অর্ডারও দিয়েছে । তিনি বলেছিলেন যে ভারতকে সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত থাকতে হবে এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে, কারণ ভারতীয় সীমান্তের উভয় দিকে জিহাদের স্লোগান উঠছে। “বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাছ থেকে ৪০ টন আরডিএস, ২৮ হাজার উচ্চ-তীব্র প্রজেক্টাইল,২ হাজার ট্যাঙ্কের শেল এবং ৪০ হাজার রাউন্ড আর্টিলারি সরবরাহ চেয়েছে ।
আশঙ্কা প্রকাশ করে তারার বলেন, মোহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানিদের জন্য বাংলাদেশের জনগণের ভিসার নিয়মও শিথিল করেছেন। আগে যেকোনো পাকিস্তানিকে ভিসা পেতে এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) জমা দিতে হতো। এখন এই নিয়ম বাতিল করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ইসলামি সন্ত্রাসীরা সহজেই বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারবে এবং তারপর সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করতে পারবে। সাজিদ তারার বলেন, ভারতের কিছু মানুষ অতীতের অভিজ্ঞতার কথা মনে করে খুবই কষ্ট পাচ্ছেন। এই ব্যক্তিরা বিশ্বাস করেন যে বাংলাদেশ ন্যাশনাল পার্টির (বিএনপি) আগের শাসনকালে লস্কর-ই-তৈয়বা, মাসুদ আজহার এবং সাজ্জাদ আফগানির মতো সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিল এবং মুম্বাই হামলা চালিয়েছিল।
সাজিদ তারার বলেন, বিএনপি ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ এবং ২০০১ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত বাংলাদেশে ক্ষমতায় ছিল। সে সময় মাসুদ আজহার এবং সাজ্জাদ আফগানি দুজনই বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে এসেছিল। তিনি বলেন, ডেভিড হেডলি এবং তাহাউর রানা, যারা আমেরিকান এবং কানাডিয়ান ছিলেন, তাদেরও বাংলাদেশের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ডেভিড হেডলি এবং তাহাউর রানা মুম্বাই হামলার জন্য রেইকি করেছিল । সাজিদ তারার বলেন,’কেউ কেউ বলছেন যে লস্কর-ই-তৈয়বার সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই সময়ে ভারতের অভ্যন্তরে কিছু লোকও বলছে যে তারা এখন বাংলাদেশের পক্ষে কাশ্মীরকে সমর্থন করা শুরু করবে। তিনি বলেন, এসব ঘটনার পেছনে রয়েছে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই।
এদিকে ভারতে জিহাদের আগে কিভাবে মুসলিম পরিবারগুলিকে প্রস্তুত হতে হবে তার বিবরণ দিয়ে একটা তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলি । “জিহাদের প্রস্তুতি” শীর্ষক ওই তালিকায় “অর্থনৈতিক ও খাদ্যের প্রস্তুতি পর্ব’-এর বিবরণ দেওয়া হয়েছে । ৯ টি পয়েন্ট ভিত্তিক ওই তালিকায় বলা হয়েছে :
১। নিজের খাদ্য নিজেই উৎপাদন করুন। যেমন: ধান, গম, আলু, শাক- সবজি ইত্যাদি। কৃষিকাজের মাধ্যমে চাষাবাদ করুন।
২। বাড়ির আঙিনায় পুকুর কেটে সেখানে মাছ চাষ করুন।
৩। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবাদিপশু পালন করুন। যেমন: গরু, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি। হাদিসে আলাদাভাবে এর নির্দেশনা রয়েছে।
৪। চাপকল বা টিউবওয়েল মাটির অনেক গভিরে স্থাপন করুন। সাধারনত যতটুকু নীচ থেকে পানি উঠে তার চাইতে ৫০-১০০ ফুট নীচে। এছাড়াও নদী, পুকুর, ঝর্নার পানি বিশুদ্ধ করে ব্যবহার করার পদ্ধতি জেনে নিন। চাপকলের যাবতীয় প্রয়োজনীয় এক্সেসরিজ সংগ্রহ করে রাখুন।
৫। পর্যাপ্ত শুকনো খাবার সংগ্রহে রাখুন। যেমন চিড়া, মুড়ি, সীম বা কুমড়ার বিচি, বাদাম, ছোলা, কিসমিস ইত্যাদি।
৬। আপনার ব্যাংক একাউন্ট, ডিপোজিট বা এ জাতীয় খাতে যত টাকা আছে তা এক মুহূর্তও নিরাপদ নয়। দ্রুত তুলে ফেলুন। তা দিয়ে স্বর্ন ক্রয় করুন বা গবাদী পশুতে ক্রয় করুন। মনে রাখবেন, বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট ব্যবস্থা ধ্বংস হলে ব্যাংকে টাকা থাকলেও তুলতে পারবেন না।
৭। বাসস্থানের আশেপাশে পর্যাপ্ত ফলগাছ রোপন করুন।
৮। বাচ্চাদেরকে এখন থেকেই চিপস, চকোলেট, আইসক্রীম জাতীয় খাবার থেকে বিরত রাখার অভ্যাস করুন।
৯। শুকনো লাকড়ির ব্যবস্থা করে রাখুন।।

