এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,২৬ জুন : ‘ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণী ও পেশার মানুষ ১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করতে একত্রিত হয়েছিল এই চেতনা নিয়ে যে পাকিস্তানিদের দ্বারা নিপীড়ন, শোষণ এবং বর্ণ ও ধর্মের বিরুদ্ধে বৈষম্য দূর করে বাংলাদেশকে একটি সুস্থ রাজনৈতিক রাষ্ট্র গঠন করব । কিন্তু ৬০-এর দশকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের প্রায় ৩৭ শতাংশ হিন্দু ছিল, এখন তা ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে । তার মানে হিন্দুদের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমছে’- গত শুক্রবার বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট আয়োজিত জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে আক্ষেপ করে এমন কথাই বললেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় । তিনি বলেন,’তবে হিন্দুরা এখন ১৯৬৪ সালের দাঙ্গার মতো দলে দলে মিছিল করে দেশ ছাড়ছে না । তারা প্রতিদিন একে একে চলে যাচ্ছেন এবং সেই সংখ্যাটা কত, তা আমরা অনুমান করতে পারি না ।’
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দেশত্যাগের কারণ সম্পর্কে বিএনপি নেতা বলেন,’হিন্দুদের সামাজিক নিরাপত্তার অভাব রয়েছে এবং সংবিধানে বর্ণিত তাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
এছাড়া ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অভিযোগকে প্রশাসন তেমন গুরুত্ব দেয় না । সংখ্যালঘুদের অধিকার ও নিরাপত্তার বিষয়ে প্রশাসন নজরদারি করে না। দুঃখের বিষয় হলো বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ আদালত ও প্রশাসনসহ সর্বত্র অবহেলিত ।’ তিনি বলেন,’দেশের অনেক হিন্দু ভারতকে তাদের দ্বিতীয় বাড়ি হিসাবে বেছে নেয় কারণ তারা ভয় পায় যে তারা তাদের জন্মভূমিতে আর হয়তো থাকতে পারবে না । প্রশাসন এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের ব্যর্থতার কারণে তাদের (হিন্দুদের) এই মানসিকতা তৈরি হয়েছে । বাংলাদেশ যে সকল নাগরিকের জন্য, মানুষের মধ্যে এই আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্র ।’
একটি লিখিত বক্তৃতায় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার বলেন,মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের চিঠিতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিপীড়নের যে দৃশ্য উপস্থাপন করা হয়েছে তা কিছুই নয়, বাংলাদেশের বাস্তবে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ । বিগত ১৫ বছরে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি চিঠিতে যা চিত্রিত করা হয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি গুরুতর বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি । কংগ্রেসম্যানদের চিঠিতে একটি আংশিক দৃশ্যকল্প চিত্রিত করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে, তবুও আমরা মনে করি এটি সত্যের প্রকাশ । তাই আমরা ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের এই উদ্যোগের প্রশংসা করি ।’
এদিকে ঈদের সময়ে প্রতিদিন সূর্যোদয়ের সাথে সাথে অফিস,কাছারি,আদালতসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার পাশাপাশি ইসলামি পতাকা উত্তোলনের নির্দেশিকা জারি করেছে শেখ হাসিনা সরকার । বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের জারি করা নির্দেশিকার একটি কপি রয়েছে এইদিনের(eidin.in) কাছে । অনেকে মন্তব্য করছে কট্টরপন্থী ইসলামি রাষ্ট্রে পরিনত করার জন্য পাকিস্তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করছে বাংলাদেশ । ফলে বাংলাদেশের হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের মনে নতুন করে আশঙ্কা ও ভীতির জন্ম দিয়েছে ।।