এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,০৫ এপ্রিল : ট্যুরিস্ট ভিসায় বাংলাদেশে গিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হল ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার জোগেন্দ্রনগর এলাকার বাসিন্দা সঞ্জিত সাহা,তার বোন ঐশী সাহা ও তাদের এক আত্মীয়কে । তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের কাস্টমসে গেলে সঞ্জিত সাহা ও তার বোন ঐশী সাহাকে জোর করে মদ পান করানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে কাস্টমসের সিপাহি মহম্মদ রুবেলের বিরুদ্ধে । যদিও বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হলে বৃহস্পতিবার আখাউড়া শুল্ক স্টেশন থেকে তাকে কুমিল্লা কাস্টমস কমিশনার কার্যালয়ে বদলি করে দেওয়া হয়। আখাউড়া স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘গতকালের ঘটনাটি ছিল অনাকাঙ্ক্ষিত। বিদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রীরা সঙ্গে একটি করে মদের বোতল নিতে পারবেন এমন নিয়ম রয়েছে। ভাইবোন যাত্রীদের ব্যাগ তল্লাশি করে দুটি হুইস্কির বোতল পাওয়া যায় । বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়।’
জানা গেছে,সঞ্জিত সাহা ও তার বোন ঐশী সাহা ও তাদের এক আত্মীয় বুধবার বেলা দেড়টার দিকে বৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। এ সময় তাদের ব্যাগ তল্লাশি করে একটি মদের বোতল পাওয়া যায়। এটি নিতে হলে তাদেরকে এক হাজার টাকা দিতে হবে বলে জানায় মহম্মদ রুবেল । উত্তরে সঞ্জিতবাবুরা জানান যে কাস্টমস আইন অনুযায়ী প্রত্যেক বিদেশি যাত্রী একটি করে মদের বোতল বহন করতে পারে । একথা শোনার পর রুবেল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে । রুবেল বলতে থাকে যে তারা মাদক ব্যবসায়ী। আর মাদক ব্যবসায়ী না হলে যদি নিজেদের জন্য ওই মদ আনা হয় তাহলে তার সামনেই সকলকে মদ খেতে হবে ।
জানা গেছে,এর পর উত্তেজিত রুবেল মদের বোতলে ছিপি খুলে একটা গ্লাসে মদ ঢেলে তাতে জল মিশিয়ে ঐশীকে পান করার জন্য বলে । তার এই প্রকার আচরণে ঐশী বিব্রত-বোধ করেন এবং তিনি প্রতিবাদ করেন। এরপর সঞ্জিতের দিকে মদের গ্লাস বাড়িয়ে দিয়ে তাকে পান করতে বলে রুবেল । কিন্তু সঞ্জিত মদ পান করতে অস্বীকার করেন । এরপর মহম্মদ রুবেল ভারতীয় ট্যুরিস্টদের রীতিমতো চমকাতে ধমকাতে শুরু করে । তারই মাঝে সে ট্যুরিস্টদের ব্যাগ হাতড়াতে শুরু করে নতুন পোশাক আছে কিনা দেখার জন্য । এদিকে খবর পেয়ে কাস্টমস অফিসে ছুটে আসে ভারতীয়দের পরিচিতরা ৷ বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় পড়ে গেলে কাস্টমসের এক কর্মকর্তা তার সহকর্মী মহম্মদ রুবেলকে যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চাওয়ান।
সঞ্জিত সাহা বলেন, ‘নিয়ম মেনেই এক বোতল মদ আনা হয়। কিন্তু কাস্টমসের একজন বলছিল এটা নিতে হলে এক হাজার টাকা দিতে হবে। এছাড়া নেওয়া যাবে না। এতে রাজি না হওয়ায় আমার বোনকে জোর করে মদ খাইয়ে দিতে চায়। আমাকেও খেতে বলে। আমি বাংলাদেশ সরকারের কাছে এ ঘটনার বিচার চাই।’
ঐশী সাহা বলেন, ‘আমি বলেছি আমার বয়স ১৮ বছর পার হয়েছে। মদ খেতে হলে বাসায় খাবো। আপনাদের সামনে কেন খেতে হবে। এরপর তারা নতুন কাপড় কি কি আছে জানতে চায়। আমি বলেছি বেড়াতে এলে নতুন কাপড় আনা যাবে না এমন কোনো নিয়ম আছে নাকি। পরে এমন আচরণের বিষয়টি আখাউড়া স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তার মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাকে প্রত্যাহার করেন।’।