আমার খুব পছন্দের একটা রঙ, লাল রঙ
এই রঙটাকে বহুবার বহু রকম ভাবে অনুভব করেছি।
ছোটবেলায় মা বলতো লাল পোশাকে নাকি
আমায় খুব মানায়। লাল চুড়ি, লাল টিপ কিনে দিত।
আমার প্রথম শ্রেণীতে লাল ডোরাকাটা স্কুল ব্যাগ
লাল ছাতা, লাল হেয়ার ব্যন্ড, লাল একটা টিফিন বক্স।
শৈশব পেরিয়ে কৈশোরে পা ফেলতেই পেলাম সরস্বতী পুজোর প্রথম লাল শাড়ি, লাল একজোড়া জুতো।
চলার পথে কতোই যে লাল রঙ ছুঁয়ে গেছি
হিসেব রাখা হয়নি, লাল আলোয় উদ্ভাসিত থাকতাম।
পুজোর মণ্ডপ থেকে টেবিলের গাঢ় লাল ভেলভেট
ক্লাস ফাইভে আসতেই আমার শখের লাল সাইকেল,
হাজারো প্রসাধনীর ভিড়ে আমি শুধু লাল বেছে নিতাম।
একদিন ঘুম ভাঙতেই দেখি বিছানায় বহু লাল দাগ
বাইরে বেরোতে যাচ্ছি, মা সজোরে হাতটা টেনে বললো
বেশ বড় হয়ে গেছিস যখন তখন ধিঙ্গিপনা চলবে না।
কেউ ভালোবেসে লাল গোলাপ দিয়েছিল, মা বললো
ওটা ফেলে দে…আমাদের বংশে প্রেমের রেওয়াজ নেই।
কয়েক বছর যেতে না যেতেই বদলে গেল জীবনের রূপ
সিঁথির মাঝ বরাবর টুকটুকে লাল এক কৌটো সিঁদুর।
প্রতিবেশীরা বললো সারাজীবন সৌভাগ্যবতী হও,
মাকে জড়িয়ে ধরে সেদিন আমি ভীষণ কেঁদেছিলাম।
বিদায়ের মুহূর্তে বুঝলাম সব লাল রঙ সুখের হয় না
সময় হারানোর ভয়ে এখন বহু লাল দাগ লুকিয়ে রাখি।।