বয়স আমার বেড়ে যাচ্ছে মা,
চোখের সামনেই দেখছি পাতা ঝরা
যুবক রঙিন পাতাগুলো কেমন বিবর্ন হতে হতে
লুটিয়ে পরছে বৃক্ষ পদমূলে।
শৈশবে ধীরেন জেঠুকে কী ভয়টাই না পেতাম
শীতলা মন্দিরে সংকীর্তনের মধ্যমনি ছিলেন,
শালপ্রাংশু শুভ্র চেহারায় শ্রী খোলটায় বেশ মানাতো তাঁকে,
অনেক দিন দেখিনি মানুষটিকে,
অস্তিত্বের জানান দেওয়ার মত ক্ষমতা কবে যে হারিয়ে ফেলেছিলেন উনি জানিনা,
একদিন বিলুদা এসে বলল ভাই ধীরেন বুড়ো পটল তুলেছে,
চল শ্মশানে মজা মেরে আসি।
জলছবি
জলছবি
ফড়িং ডানায়….
শ্যাম কাকা আমাকে না কি তাবলা বলে ডাকতো,
আমাকে কাঁধে করে নিয়ে মাঠে হাল চষতে যেতেন উনি,
জোড়া ষাঁড়ে জুত দিয়ে হাতের গুলটি পাকিয়ে বলতেন-
দেখ শালা মরদ কারে কয়,
তাবলা হয়ে থাকলে চলবে?
এক চুমুকে গামলা ভর্তি পান্তার আমানি শেষ করতেন-
বর্ঢময় যৌবনের বিবর্ন অধ্যায়ে ডুবে গিয়ে শ্যাম কাকুকে ভুলেই গিয়েছিলাম,
একদিন দেখলাম ছেঁড়া ধুতি পরে জীর্ণ এক পাংশুটে বৃদ্ধ আমাকে আপনি সম্বোধন করছে,
থর থর করে কাঁপতে কাঁপতে বলছে- বাবু দীনেশের খবর কিছু জানেন?
এ দীনেশ বিপ্লবী নয়,
এ দীনেশ কাজের খোঁজে হেমন্তের ডালে ডালে অকাল শৈত্য প্রবাহ।
জলছবি
জলছবি
ফড়িং ডানায়-!
নেতাই মাস্তান আর মিঠুদির খুব ভাব ছিল,
অতনু দা আবার মিঠু দাকে নিয়ে কবিতা লিখত
অতনু দা ফ্রী পয়সায় টিউশন পড়াতো
আর মান্নাদের গান ভাঁজত,
আমাদের আইডল ছিল অতনু দা।
খেলার মাঠে একদিন নেতাই মাস্তান অতনু দাকে ফেলে উইকেট দিয়ে পেটালো..
তখন কারণ বুঝিনি,
এখনও বুঝিনা
পিটুনি খাওয়ার তিনদিন পরে অতনু দা মিঠুদি কে বিয়ে করে নিল,
সে এক দারুণ উত্তেজনা আকাশের মুচকি হাসা মেঘে।
নেতাই মস্তান ক্ষুর নিয়ে ঘুরত
হঠাৎ কিছু একটা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় আমরা তটস্থ হয়ে থাকতাম।
জলের নাকি রঙ নেই, কে বলেছে?
জীবন তো জলের মত –
সে দিন দেখলাম টাক মাথা এক আধ পক্ক বুড়ো অটো চালাচ্ছে
আর মধ্যবয়স্ক পাঞ্জাবি পরিহিত প্যাসেঞ্জার হেসে হেসে ড্রাইভারকে কি একটা বলছে।
প্রথমটা নাকি নেতাই মস্তান
দ্বিতীয় অতনুদা।
জলছবি
জলছবি
বয়স ডানায়।।