এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৭ এপ্রিল : পাকিস্তান বা বাংলাদেশ নয়,খোদ কলকাতার বুকে মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে । ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর কলকাতার চিৎপুরের কসিপুর থানা এলাকায় । অভিযোগ, শুক্রবার রাতের অন্ধকারে কসিপুর থানার অন্তর্গত লক গেট ব্রিজের নীচে একটি হনুমান মন্দিরে চড়াও হয়ে দেবমূর্তি ভাঙচুর করে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা । ঘটনার প্রতিবাদে এবং দুষ্কৃতীদের অবিলম্বে গ্রেফতারির দাবিতে শনিবার তুমুল বিক্ষোভ দেখায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন । বিজেপি নেতা দেবদত্ত মাঝির নেতৃত্বে পথ অবরোধও করা হয় । শেষে কসিপুর থানার পুলিশের (Cossipore Police Station) আশ্বাসে প্রায় আধ ঘন্টা পর অবরোধ তুলে নেওয়া হয় । এই ঘটনায় অজ্ঞাত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে মন্দির কমিটির তরফে থানায় একটা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজেপি নেতা দেবদত্ত মাঝি ।
দেবদত্ত মাঝি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে ভেঙে ফেলা প্রতিমা, বিক্ষোভ সমাবেশের ছবি ও ভিডিও পোস্ট করে লিখেছেন,’চিৎপুরে ভগবান মহাদেব জির মন্দির (কসিপুর এলাকা), লক গেট ব্রিজের নীচে উত্তর কলকাতা আক্রমণ করে এবং জিহাদিরা হনুমান জির মূর্তি ভেঙে দেয়৷ কসিপুর থানার পুলিশ স্থানীয় হিন্দুদের সম্মতি ছাড়াই মন্দির থেকে বজরঙ্গবলী জির ভাঙা মূর্তি তুলে নিয়ে যায় । খবর পেয়ে আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসি, মন্দির পরিদর্শন করি এবং তারপর স্থানীয়দের সাথে কসিপুর থানায় বিক্ষোভ মিছিল করি। পিএসের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং আমাদের প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়েছিল, তবে আমরা জোর করে গেট খুলে এগিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলাম। কসিপুর পুলিশ আশ্বাস দিয়ে আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আমরা দুই ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে অনড় ছিলাম ।’ তিনি আরও লিখেছেন,’তারপর থানা থেকে বেরিয়ে আসার পর আমরা কাছাকাছি মার্কেট মসজিদ ক্রসিং (বিবি) কিছুক্ষণের জন্য অবরুদ্ধ করে রাখি, তারপর পুলিশ অপরাধীদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করার আশ্বাস দিয়ে আমাদের অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করে ।’
দেবদত্ত মাঝির কথায়, ‘পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে… চলমান রমজান মাসের মধ্যেই আমাদের কন্যাদের নিয়ে যাওয়া, আমাদের মন্দির ও মুর্তিগুলি ভাঙ্গা, আমাদের সম্পত্তি ও জিনিসপত্র লুট করা (মাল ই গণিমাত) এসব কিছু করার অধিকার রয়েছে তাদের । হিন্দুদের অবশ্যই তাদের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং সেই অনুযায়ী নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে।’ অন্য একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আমরা আমাদের পদ্ধতির উপর কোন অপমান এবং আক্রমণ সহ্য করব না। আপনি যে ভাষায় বোঝেন আমরাও সেই ভাষায় কথা বলতে পারি।’
দেবদত্তবাবু আজ রবিবার ‘এইদিন’কে ফোনে বলেন, ‘কসিপুর থানার লক গেট ব্রিজের নীচে ওই হনুমান মন্দিরের অদূরেই রয়েছে শীতলা মায়ের মণ্ডপ । ওই মণ্ডপে দিনের বেলায় মাইকে হনুমান চালিশা ভজন বাজানো হয় । স্থানীয় ভিন সম্প্রদায়ের মানুষ হনুমান চালিশা ভজন বন্ধ করার জন্য চাপ দেয় । কিন্তু হিন্দুরা তাদের সেই কথায় গুরুত্ব না দেওয়ায় বজরঙ্গবলী জির প্রতিমা ভাঙচুরের আগের দিন শীতলা মায়ের মণ্ডপে হামলা চালিয়েছিল তারা ।’।