জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,বর্ধমান,১৩ জুলাই : ১৩ ই জুলাই হলো গুরুপূর্ণিমা। শিক্ষকরা হলেন ছাত্র সমাজের কাছে গুরু। সেটা মাথায় রেখে অভিনব আঙ্গিকে দিনটি পালন করল বর্ধমান শহরের রথতলা মনোহর দাস বিদ্যানিকেতন। বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কাজ শুরু হওয়ার আগেই গুরু অর্থাৎ শিক্ষকদের বন্দনা করা হয়। সেখানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সোনালী ম্যাডাম। যথারীতি প্রার্থনা সঙ্গীত ইত্যাদি হয়। চমকটা শুরু হয় দ্বিতীয় পিরিয়ডে।
আধুনিক সভ্যতা বহুলাংশে জীবাশ্ম জ্বালানি অর্থাৎ পেট্রোলিয়ামের উপর নির্ভরশীল। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দিনের পর দিন এর ব্যবহারও বেড়ে চলেছে। প্রয়োজনীয় পেট্রোলিয়াম জাত দ্রব্যের অধিকাংশ ভারত সরকারকে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এরজন্য প্রচুর বিদেশী মুদ্রা খরচ করতে হয়। অথচ একটু সতর্কতা অবলম্বন করলেই অনেকটাই খরচ কম হয়। সেই লক্ষ্যেই সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত হয় একটি সচেতনতা শিবির। বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতিতে কিভাবে পেট্রোল বা রান্নার গ্যাস ব্যবহার করলে খরচ কম হবে সেটি সহজ সরল ভাষায় ব্যাখ্যা করেন পিসিআরএ -এর অন্যতম আধিকারিক ভাস্কর দেয়াশী।
প্রসঙ্গত পিসিআরএ ( পেট্রোলিয়াম কনজারভেশন রিসার্চ অ্যাসোশিয়েশন ) হল ভারত সরকারের পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রকের অধীনস্থ একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্হা। সাধারণ মানুষকে পেট্রোল ও রান্নার গ্যাস সংক্রান্ত ব্যবহার বিষয়ে সচেতন করার জন্য ১৯৭৮ সালে এই সংস্হাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্যাপকভাবে প্রচারের আলোয় না এলেও সংস্হাটি শুরু থেকেই সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে চলেছে।
প্রধান শিক্ষক বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সহকারী প্রধান শিক্ষক শ্রীজীব কুমার লাহা, সহশিক্ষক বিশ্বনাথ দাস, লক্ষণ কবিরাজ, শিক্ষিকা শিল্পী মন্ডল সহ অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা সহ শিক্ষাকর্মীরা। বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রীও উপস্থিত ছিল। স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভাস্কর বাবুকে নিজ নিজ এলাকায় এই ধরনের সেমিনার করার জন্য আমন্ত্রণ প্রমাণ করে দেয় এই আলোচনা থেকে প্রত্যেকে কতটা উপকৃত হয়েছেন।
ভাস্কর বাবু বলেন,’আমরা পেট্রোলিয়াম জাত দ্রব্য ব্যবহার করলেও সেগুলো সংরক্ষণের বিষয়ে খুব একটা সচেতন নই। যেমন দু’চাকার গাড়ি চালালেও অনেকেই জানিনা ৪০-৫০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালালে অন্তত কুড়ি শতাংশ জ্বালানি খরচ কম হবে। ঠিক একইভাবে একটু সচেতন হলেই রান্নার গ্যাসের খরচ অনেকটাই কমে যাবে। সুতরাং আমাদের প্রত্যেককেই একটু সচেতন হতেই হবে।’
বিনায়ক বাবু বললেন,’ভাস্কর বাবুর সঙ্গে আমার আগেই পরিচয় ছিল। একটু অন্যভাবে গুরুপূর্ণিমার দিনটি পালন করার জন্য সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে ভাস্কর বাবুকে তার সুপরামর্শের জন্য বিদ্যালয়ে আহ্বান জানাই। আমরা প্রত্যেকেই যথেষ্ট উপকৃত। প্রতিটি গ্রামে যদি এইরকম সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান হয় তাহলে ব্যক্তিগত তথা দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হবেই।’।